কলকাতা থেকে ফিরে যা জানালো ডিবি পুলিশ

2

পূর্বদেশ ডেস্ক

ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যার ‘মূল পরিকল্পনাকারী’ আক্তারুজ্জামান শাহীনকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফিরিয়ে আনতে ভারতের সাহায্য চেয়েছে বাংলাদেশ পুলিশ। এ ছাড়া কলকাতায় সঞ্জিভা গার্ডেনের সেপটিক ট্যাংক থেকে উদ্ধার হওয়া মাংসের খন্ডাংশগুলো সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনারের বলে মনে করছেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
গতকাল বৃহস্পতিবার কলকাতা থেকে ঢাকা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নেমে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন হারুন। খবর বাংলা ট্রিবিউনের।
এমপি আনার হত্যার অন্যতম আসামি ফাইজুল ওরফে সিয়াম নেপালে আত্মগোপন করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, তাকে শিগগিরই গ্রেপ্তারের চেষ্টা করা হচ্ছে। এই হত্যাকান্ডের মূল পরিকল্পনাকারী আক্তারুজ্জামান শাহীন যুক্তরাষ্ট্রে আছে। তাকে ধরতে ভারত সরকারের সাহায্য চাওয়া হয়েছে।
হারুন বলেন, আনোয়ারুল আজীম আনারকে গত ১৩ মে কলকাতার মাটিতে হত্যা করা হয়েছে। এ সংক্রান্ত বাংলাদেশের পাশাপাশি কলকাতায়ও একটি হত্যা মামলা করা হয়েছে। ইতোমধ্যে আমাদের কাছে তিন জন গ্রেপ্তার রয়েছে। এর মধ্যে মূল ঘাতক হলো আমান উল্লাহ ওরফে শিমুল ভূঁইয়া।
হত্যার পরিকল্পনা হয়েছে বাংলাদেশে আর সংঘটিত করা হয়েছে কলকাতায়। মামলা তদন্তের জন্য আমরা কলকাতায় গিয়েছি। আমাদের কাছে গ্রেপ্তার আসামিদের দেওয়া তথ্য যাচাই-বাছাই করতে এবং ঘটনাস্থলের ডিজিটাল এভিডেন্সগুলো দেখতে সেখানে গিয়েছিলাম।
তিনি বলেন, মামলায় ভুক্তভোগীর মরদেহ বা মরদেহের অংশবিশেষ না পাওয়া গেলে তদন্তকারী কর্মকর্তার সুরতহাল, ভিসেরা ও মেডিক্যাল রিপোর্ট দিতে বেগ পেতে হয়। এগুলো না পাওয়া গেলে মামলাটি নিষ্পত্তি করাও অনেক কঠিন হয়ে যায়। আমরা সেখানে গিয়ে আমাদের হাতে গ্রেপ্তার আসামিদের তথ্য ক্রস চেক করেছি। এ ছাড়া কলকাতায় গ্রেপ্তার আসামির তথ্য যাচাই-বাছাই করেছি। কলকাতা সিআইডিকে সঙ্গে নিয়ে আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। আসামিদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য মেলানোর চেষ্টা করেছি।
তিনি আরও বলেন, আমরা কলকাতার পুলিশকে অনুরোধ করেছিলাম সুয়ারেজ লাইন ও সেপটিক ট্যাংক ভেঙে দেখার জন্য। সেখান থেকে এমপি আনারের মরদেহের খন্ডাংশ উদ্ধার করা হয়েছে। ভারতীয় পুলিশ ফরেনসিক এবং ডিএনএ পরীক্ষা করে এ বিষয়ে জানাবে। আমরা প্রাথমিকভাবে মনে করছি মরদেহের খন্ডাংশগুলো এমপি আনারের।
এদিকে শিগগিরই ফরেনসিক প্রতিবেদন পাওয়া যাবে বলে সিআইডি সূত্রে খবর পাওয়া গেছে। এই প্রতিবেদন হাতে পেলে গোয়েন্দারা তদন্তের দ্বিতীয় ধাপ ডিএনএ পরীক্ষার জন্য মাংসের নমুনা পাঠাবেন। আর এর জন্য যেকোনও সময় কলকাতা পৌঁছাচ্ছেন এমপি-কন্যা।
গোয়েন্দারা ধারণা করছেন, উদ্ধার হওয়া ওই মাংস, চুল ও হাড় খুন হওয়া এমপি আনারের হতে পারে। তবে সেটা চূড়ান্তভাবে বলা যাবে ফরেনসিক ও ডিএনএ পরীক্ষার পর।
এর আগে গত রবিবার (২৬ মে) আনার হত্যা মামলার তদন্ত করতে ঢাকার গোয়েন্দা পুলিশের প্রধানের নেতৃত্বে তিন সদস্যের প্রতিনিধি দল কলকাতায় যায়। মামলাটির তদন্তকারী সিআইডি, নিউ টাউন থানার পুলিশ এবং ভারতীয় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে যৌথভাবে চার দিন কাজ করেছে ঢাকার গোয়েন্দারা।
গত ১২ মে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে যান ঝিনাইদহ-৪ আসনের আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার। ১৩ তারিখ থেকে রহস্যজনক নিখোঁজ হলে ১৮ মে বরাহনগর থানায় তার বন্ধু গোপাল বিশ্বাস একটি নিখোঁজ ডায়েরি করেন। ২২ মে আনুষ্ঠানিকভাবে ঢাকার ডিবি পুলিশ সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেন এমপি আনার খুন হয়েছেন।