কক্সবাজারে সংঘর্ষ-ভাঙচুর ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া

3

পূর্বদেশ ডেস্ক

কক্সবাজারে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের পক্ষে করা মিছিল থেকে আওয়ামী লীগ, জাসদ, জাতীয় পার্টির জেলা কার্যালয়সহ একটি মসজিদ, কয়েকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং গাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয়েছে। এ সময় কক্সবাজার সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের আহ্বায়কসহ ছাত্রলীগের চার নেতাকে কুপিয়ে-মারধর করে আহত করার অভিযোগ করা হয়েছে। কোটা সংস্কার আন্দোলনের পক্ষে মিছিল নিয়ে ঘুরে বেড়ানো কয়েকশ শিক্ষার্থী গতকাল মঙ্গলবার বেলা ১১টা থেকে দিনভর থেমে থেমে কক্সবাজার শহরের প্রবেশমুখ লিংক রোড, কক্সবাজার সরকারি কলেজ, শহরের লালদিঘীর পাড়া, ঝাউতলা এলাকায় এসব ঘটনা ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এই ঘটনায় আহত কক্সবাজার সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের আহ্বায়ক রাজিবুল ইসলাম মোস্তাক, জেলা ছাত্রলীগ নেতা মঈন উদ্দিন, সাঈদ হোছেইন কাদেরী, ইউনুস উদ্দিন আকাশকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পুলিশ, আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ নেতা ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বেলা ১১ টায় কক্সবাজার পলিটেকনিক্যাল ইনস্টিটিউটের কিছু সংখ্যক শিক্ষার্থী কোটা সংস্কারের দাবিতে মিছিল সহকারে কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কের লিংকরোডে অবস্থান নেয়। এসময় কোটাবিরোধী বিভিন্ন সেøাগান দিয়ে সড়কে চলাচলকারী কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করে তারা। পুলিশ তাদেরকে সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করলেও আন্দোলনকারীরা সরেনি।
পরে কোটা আন্দোলনকারীরা মিছিল নিয়ে লিংক রোড থেকে কক্সবাজার সরকারি কলেজের দিকে যায়। তখন কলেজ গেইটে অবস্থান নেওয়া ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে তাদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে।
এসময় পুলিশের হস্তক্ষেপে ছাত্রলীগ পিছু হটলেও আন্দোলনকারীরা কলেজের গেইটে কয়েকটি মোটর সাইকেলে ও গেটের স্থাপনা ভাঙচুর করে। পরে পুলিশের আন্দোলনকারীদের সরিয়ে দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এসময় মহাসড়কে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়। ভোগান্তিতে পড়ে সাধারণ মানুষ। এ ঘটনার পর কিছুক্ষণ আন্দোলন বন্ধ থাকলেও দুপুর আড়াইটার পরে মিছিল সহকারে আন্দোলনকারীরা আবারও লিংক রোড এলাকায় কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে যান চলাচল বন্ধ করে দেন। পরে পুলিশ আবার আন্দোলনকারীদের সরিয়ে দেন। এর ঘণ্টাদুয়েক পর বিকাল ৪ টার দিকে শহরের ঝাউতলা এলাকায় আন্দোলনকারীরা মিছিল শুরু করে। হাতে লাঠি, ইটপাটকেল নিয়ে মিছিলটি প্রধান সড়কে কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর চালিয়ে কক্সবাজার শহরের লালদিঘীর পাড়া এলাকায় যান।
সেখানে আওয়ামী লীগ, জাসদ ও জাতীয় পার্টির জেলা কার্যালয় এবং আশে-পাশের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর চালানো হয়। ভাঙচুর করা হয় পাশে অবস্থিত মসজিদের জানালা, অজুখানা। মারধর করা হয় আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগের নেতাদেরও। ওখান থেকে আন্দোলনকারীরা মিছিল নিয়ে যায় কক্সবাজার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। পরে বিকাল সাড়ে ৫ টার দিকে পুলিশ তাদের সরিয়ে দেয়। খবর বিডিনিউজের
কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলেন, কোটা আন্দোলনকারীদের পক্ষে মিছিল নিয়ে শহরজুড়ে নাশকতা চালানো হয়েছে। মিছিলে অংশ নেওয়ারা শিক্ষার্থী না। তারা সকলেই পরিকল্পিত হামলাকারী। এদের হাতে লাঠি, লোহার রড, ইটপাটকেল ও ধারালো অস্ত্র ছিল। এরা শহরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ঘুরে মিছিল সহকারে ভাঙচুর চালিয়ে দলীয় কার্যালয়ে আসে।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘আন্দোলনকারীদের পক্ষে মিছিল করা লোকজন চিহ্নিত শিবির ও ছাত্রদলের ক্যাডার। এরা কখনও খালেদা জিয়া, কখনও নিজামীর নামে উল্লেখ করে রাজাকার দাবি করে ¯েøাগান দিয়েছে’।
জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগ কার্যালয়, জাসদ কার্যালয়, জাতীয় পার্টির কার্যালয় ছাড়াও বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর চালায় তারা। তাদের হামলা থেকে রক্ষা পায়নি মসজিদও। এক পর্যায়ে দলীয় কার্যালয়ে থাকা কক্সবাজার সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের আহ্বায়ক রাজীবুল ইসলাম মোস্তাককে কুপিয়ে আহত করা হয়। একই সময় মারধর করা হয়েছে জেলা ছাত্রলীগ নেতা মঈন উদ্দিন, সাঈদ হোছেইন কাদেরীসহ কয়েকজনকে’।