এবার সরকারি কলেজে পড়তে চান আসাদুল্লাহ

6

আসহাব আরমান

এবারের এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন শারীরিক প্রতিবন্ধী মো. আসাদুল্লাহ। শারীরিক প্রতিবন্ধকতা জয় করে চট্টগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ৩.১১ জিপিএ নিয়ে এসএসসি পাস করেন।
আসাদুল্লাহর ইচ্ছে আর ১০ জন শিক্ষার্থীর মত তিনিও উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হবেন। এ লক্ষ্যে আসাদুল্লাহ চট্টগ্রামের একটি সরকারি কলেজে ভর্তি হতে চান। তবে তার ইচ্ছে পূরণে বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে তার অর্জিত জিপিএ। কারণ, চট্টগ্রামের সরকারি কলেজগুলোতে ভর্তি হতে যে জিপিএ দরকার, সে তুলনায় তার জিপিএ অনেক কম।
সরকারি কলেজে ভর্তির ব্যাপারে সহায়তার জন্য আসাদুল্লাহ চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক প্রফেসর জাহেদুল হকে সাথে দেখা করেছেন। কলেজ পরিদর্শককে জানিয়েছেন তার ইচ্ছার কথা। কলেজ পরিদর্শক জাহেদুল হকও তাকে সর্বোচ্চ সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন।
জানা গেছে, আসাদুল্লাহর গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জ জেলার অষ্টগ্রাম উপজেলায়। বর্তমানে নগরীর বাকলিয়া থানার শান্তিনগরে একটি ভাড়া বাসায় থাকে। তার বাবার নাম মো. তারা গাজী। তিনি পেশায় একজন ফল ব্যবসায়ী।
দুই ভাইয়ের মধ্যে আসাদুল্লাহ ছোট। বড় ভাই বিবাহিত। আসাদুল্লাহর বয়স দুই বছর থাকতে টাইফয়েডের কারণে তার দুই পা ও একটি হাত অচল হয়ে যায়। ফলে অস্বাভাবিক পা নিয়ে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে কোন রকম চলাচল করেন আসাদুল। প্রাথমিকে চন্দনপুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পাস করেন। সেখান থেকে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে চট্টগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের পড়ার সুযোগ পান। অবশেষে এ বছর এসএসসিতে চট্টগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে ৩.১১ জিপিএ নিয়ে পাস করেন।
মো. আসাদুল্লাহ পূর্বদেশকে বলেন, দুই বছর বয়স থেকে আমার দুই পা ও ডান হাতের এ সমস্যা। আমার মা বলেছেন, ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় এমনটা হয়েছে। শারীরিক সমস্যা থাকার পরও এ বছর বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এসএসসি পাস করেছি। আমি সরকারি কলেজে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হতে চাই। তবে একাদশ শ্রেণিতে আমি বিজ্ঞান থেকে মানবিক বিভাগে চলে আসবো। আর ১০ জন শিক্ষার্থীর মত আমিও উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করতে চাই। ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের কলেজ পরিদর্শক জাহেদ স্যারের সাথে দেখা করেছি। আমাকে চট্টগ্রাম কলেজে ভর্তির সুযোগ করে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছি। তিনি আমাকে সর্বোচ্চ সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন।
আসাদুল্লাহ গত ২৩ মে শিক্ষাবোর্ডের কলেজ পরিদর্শক প্রফেসর জাহেদুল হকের সাথে দেখা করতে যান। এ সময় চট্টগ্রামের একটি সরকারি কলেজে ভর্তির সুযোগ করে দিতে তাকে অনুরোধ জানান। আসাদুল্লাহ’র কথা শুনে তিনি সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
কলেজ পরিদর্শক প্রফেসর জাহেদুল হক পূর্বদেশকে বলেন, গত ২৩ মে মো. আসাদুল্লাহ নামে একজন শারীরিক প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী আমার দেখা করতে আসেন। সে চট্টগ্রামের একটি সরকারি কলেজে ভর্তির আগ্রহের কথা জানায়। আমি তার সব কথা শুনে তাকে সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী সর্বোচ্চ সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছি।