এনজিও’র ভাতের প্যাকেট নিয়ে সংঘর্ষে নিহত ১

3

কুতুবদিয়া প্রতিনিধি

মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে পরিচালিত শিশুশ্রম রোধে কমিউনিটি পর্যায়ে (একসিলারেটিং প্রোটেকশন ফর চিলড্রেন-এপিসি) প্রকল্পের অধীনে সচেতনতামূলক নিয়মিত সমাবেশ চলছে কুতুবদিয়া উপজেলায়। তারই ধারাবাহিকতায় আলী আকবর ডেইল ইউনিয়ের আবদুল হাদি সিকদার পাড়া এলাকায় গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে অবহিতকরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেই সভায় দুপুরের লাঞ্চ হিসেবে ভাতের প্যাকেট বিতরণ ও ভাগাভাগি নিয়ে সংঘর্ষে পড়ে একজনের মৃত্যু হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
জানা গেছে, গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে প্রকল্পের অবহিতকরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা শেষে আমন্ত্রিত অতিথিরা চলে যাওয়ার পর ভাতের প্যাকেট বিতরণের জন্য স্থানীয় কিছু লোককে দায়িত্ব দেন আয়োজকেরা। দুপুরে সেই ভাতের প্যাকেট বিতরণের সময় বাঁধে সংঘর্ষ। খাবারের প্যাকেট কম পড়ায় স্থানীয় ইউপির সদস্য মোশারফ হোসেনের সাথে অংশগ্রহণকারীরা বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়েন। অংশগ্রহণকারীরা অভিযোগ করেন, বিতরণের দায়িত্বপ্রাপ্ত মেম্বার মোশারফ নিজের লোকদের অগ্রাধিকার ও একজনকে একাধিক প্যাকেট দিয়ে দেয়ায় ভাতের প্যাকেট সবাই পায়নি।
এঘটনায় মেম্বার মোশারফ ও তার তার দলের লোকজনের সাথে সংঘর্ষ বেঁধে যায় অংশগ্রহণকারীদের। এক পর্যায়ে দেশীয় ধারালো অস্ত্রের ব্যবহারে আঘাতে আবদুল হাদি সিকদার পাড়ার আরফাত হোসেনের ছেলে ফরহাদ হোসেন (২২), গোলাম কুদ্দুছের ছেলে মো. তাওসিফ (২৪), আমিনুর রহমানের ছেলে জিসাদ (২২), টিপুর ছেলে রিয়াদ (২০), মৃত নজরুল ইসলামের ছেলে শেফায়েত হোসেন (৪০) সহ আরো ৬-৮ জন গুরুতর আহত হয়।
আহতদের কুতুবদিয়া সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে ফরহাদ হোসেনকে মৃত ঘোষণা করেন। অন্যন্য আহতদের অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।
এ ঘটনায় জড়িত শাহাদাৎ (৪২) নামের একজনকে আটক করে পুলিশ। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে কুতুবদিয়া থানার ওসি মো. গোলাম কবিরের নেতৃত্বে পুলিশের একাধিক টীম পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
নিহত ফরহাদের পিতা আরাফাত বলেন, আলী আকবর ডেইল ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের মেম্বার মোশারফ হোসেন ও শেফায়েত হোসেনের নেতৃত্বে মিটিং শেষে ভাতের প্যাকেট বিতরণের দায়িত্ব নেয়। তারা অংশগ্রহণকারীদের প্যাকেট না দিয়ে নিজেদের লোকদের দিতে থাকে। তাদের দলের লোক প্যাকেট না পাওয়ার অজুহাত তুলে প্যাকেট দেয়া বন্ধ করে দেয়। এ নিয়ে সভায় অংশগ্রহণকারীদের সাথে মেম্বার মোশারফ ও তার লোকদের বাকবিতন্ডা হয়। এক পর্যায়ে মোশারফের নির্দেশে তার লোকজন বাড়ি থেকে ধারালো অস্ত্র এনে অংশগ্রহণকারীদের উপর উপর্যুপরী ছুরিকাঘাত করে। এসময় আমার ছেলেকেও তারা আঘাত করে। ঘটনাস্থলেই আমার ছেলের মৃত্যু হয়। আমি আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই।
খবর পেয়ে কুতুবদিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোহাম্মদ মঈনুল হোসেন চৌধুরী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল জোরদার করার নির্দেশ দেন।
কুতুবদিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. গোলাম কবির জানান, বর্তমানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। ঘটনায় জড়িত একজনকে আটক করেছে পুলিশ। এ ব্যাপারে মামলার প্রক্রিয়া চলছে।