ঋণ খেলাপিদের তো ধরতে চাই, দেখা যাক পারি কি না

5

পূর্বদেশ ডেস্ক

ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে টাকা মেরে দেওয়া মানুষদের ধরতে চান অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। সেটি পারবেন কি না, সে বিষয়ে আগাম ঘোষণা দিতে চান না তিনি। গতকাল রোববার সচিবালয়ে নিজ কার্যালয়ে আন্তর্জাতিক ঋণদাতা সংস্থা আইএমএফের নির্বাহী পরিচালক কৃষ্ণামূর্তি ভেনকাটা সব্রামানিয়ানের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
অর্থনীতিকে ‘ট্র্যাকে’ ফেরানোর লক্ষ্যে ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের জন্য নিজের প্রথম বাজেট প্রস্তুত করছেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। আর আয় ব্যয়ের এই ফর্দ বাস্তবায়নের স্তরে স্তরে অনেক বাধা বা চ্যালেঞ্জ রয়ে যাওয়ার কথা অকপটে স্বীকার করে নিয়েছেন পেশাদার এই ক‚টনীতিক। খবর বিডিনিউজের।
নিজের প্রথম বাজেট দিতে গিয়ে কোনো চ্যালেঞ্জ দেখতে পাচ্ছেন কি না?- এই প্রশ্ন শুনে তিনি বলেন, চ্যালেঞ্জ তো আছেই। মূল্যস্ফীতি আছে, রিজার্ভ, রাজস্ব আয়, ডলারের মূল্য। তবে ডলারের মূল্য নিয়ে আগের মতো চ্যালেঞ্জ নেই। ডলার এখন উন্মুক্ত। এখন ঋণ খেলাপিদের ধরতে হবে। আমি তো ধরতে চাই। দেখা যাক পারি কি না।
নবম সংসদের মেয়াদের শেষ দিকে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়া মাহমুদ আলী দশম সংসদ নির্বাচনের পর পুরো মেয়াদই এই দায়িত্বে ছিলেন। একাদশ সংসদ নির্বাচন শেষে মন্ত্রিসভায় জায়গা পাননি তিনি।
গত ৭ জানুয়ারির দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন শেষে নতুন মন্ত্রিসভায় অর্থমন্ত্রী হিসেবে তার দায়িত্ব পাওয়া ছিল চমক। দায়িত্ব নেওয়ার ছয় মাসের মধ্যে আগামী ৬ জুন জাতীয় সংসদে প্রথম বাজেট উত্থাপন হবে।
বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী চলতি বাজেটের চেয়ে ৪ শতাংশের কিছু বেশি ব্যয় বরাদ্দ রেখে সরকারি আয় ও ব্যয়ের ফর্দ দিতে যাচ্ছেন তিনি।
চেষ্টা থাকবে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে : প্রথম বাজেটে মানুষকে কীভাবে স্বস্তি দেবেন- এই প্রশ্নে অর্থমন্ত্রী বলেন, এটাই তো চেষ্টা করছি। এখন কী করব, কীভাবে করব, সেটা বললে তো সব বলে দেওয়া হয়ে গেল। এগুলো বলা যাবে না। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা থাকবে।
অগ্রাধিকারে কী থাকবে- এই প্রশ্নে তিনি বলেন, অর্থনীতিকে ট্র্যাকে ফিরিয়ে আনা এবং দ্রব্যমূল্য যেন মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে যাতে থাকে এগুলো নিশ্চিত করা। মানুষের জীবনযাত্রার মান যেন সীমার মধ্যে থাকে সেটা নিশ্চিত করা।
আইএমএফ প্রতিনিধির সঙ্গে তার কথোপকথনের কথা তুলে ধরে অর্থমন্ত্রী বলেন, ওনাকে জিজ্ঞেস করলাম যে আমাদের কাজগুলো আপনারা কীভাবে দেখছেন?, উনি বললেন, হ্যাঁ, আমি খুশি, সন্তুষ্ট।
উনি বলেছেন, রিজার্ভ সমস্যার সমাধানে বাংলাদেশে সরকারের পদক্ষেপ, সংস্কারমূলক কাজ সঠিক পথেই আছে। আইএমএফের পরবর্তী কিস্তি জুন মাসেই দেবে বলেও আশ্বস্ত করেন মন্ত্রী।
রাজস্ব আহরণে কী পদক্ষেপ? : এ নিয়ে এক প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, আমরা চেষ্টা করছি, দেখা যাক। ওগুলোর দিকে মন দিতে হবে। যারা ট্যাক্স দেবে না, কীভাবে তাদের কাছ থেকে ট্যাক্স উদ্ধার করা যাবে সেই কৌশল নিতে হবে। আদালতে বহু টাকা আটকা আছে। এখানেও চেষ্টা করা হচ্ছে।
ভ্যাট, ট্যাক্স ও অন্যান্য রাজস্ব খাতের বিভিন্ন মামলায় আদালতে প্রায় এক লাখ কোটি টাকা আটকা আছে বলে বিভিন্ন সময় গণমাধ্যমে এসেছে। দেশের বাইরে অনেক টাকা আছে, যেগুলো নির্বাচনের পর চলে আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছিল। এই টাকা ফেরত আনতে কোনো পদক্ষেপ থাকবে কি না জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, ৮ দশমিক ৪ শতাংশ সুদে অফশোর ব্যাংকিং চালু হবে। পাশাপাশি আরও পদক্ষেপ থাকবে।
কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়া হবে কিনা প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, এখনই সে কথা বলতে পারব না, দেখা যাক।