ইসলামের নামে স্বেচ্ছাচারিতা ও জুলুমতন্ত্র চাপিয়ে দেয় ইয়াজিদ

9

জমিয়তুল ফালাহ মসজিদে আহলে বায়তে রাসূল (দ.) স্মরণে আন্তর্জাতিক শাহাদাতে কারবালা মাহফিলে গতকাল বৃহস্পতিবার ৪র্থ দিনে দেশি-বিদেশি আলোচক ও ইসলামী চিন্তাবিদরা বলেছেন, কারবালা ময়দানে ইসলামের ঝাÐা সমুন্নত করেছিলেন নবীদৌহিত্র হযরত ইমাম হোসাইন (রা.)। তিনি ইসলামের ন্যায়ভিত্তিক দর্শন, হক, ইনসাফ ও মানবতার পক্ষে দাঁড়িয়েছিলেন। অন্যদিকে পাষÐ নরপিশাচ ইয়াজিদ ইসলামের নামে স্বেচ্ছাচারিতা ও জুলুমতন্ত্র চাপিয়ে দিয়ে ঘৃণ্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করে চিরতরে ধিকৃত হয়ে আছে। আহলে বায়তে রাসূল (দ.) তথা নবী পরিবারের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়ার কারণে এবং কারবালা ময়দানে জঘন্য নির্মমতার জন্ম দেয়ায় যুগে যুগে ইয়াজিদিদের প্রতি মানুষ ধিক্কার জানাবে। আর হযরত ইমাম হোসাইন (রা.) ও আহলে বায়তে রাসূলের (দ.) শান মর্যাদা যুগে যুগে সমুন্নত থাকবে। গতকালের মাহফিলে সভাপতিত্ব করেন জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আল্লামা হাফেজ আব্দুল আলীম রিজভী। প্রধান অতিথি ছিলেন বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ ও সংসদ সদস্য মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মোহাম্মদ ইবরাহিম বীর প্রতীক। তিনি বলেন, ইসলাম শান্তি ও মানবতার ধর্ম। আবার অন্যায় অবিচার প্রতিরোধের শিক্ষাও দেয় ইসলাম। দেশে হোক বা বিদেশে মানবতার বিরুদ্ধে যেখানেই অপরাধ ঘটবে মুসলমান হিসেবে আমাদেরকে তা প্রতিরোধে এগিয়ে আসতে হবে। তিনি জমিয়তুল ফালাহ মসজিদে শাহাদাতে কারবালা মাহফিলের জন্য অবদান রাখা খতিবে বাঙাল আল্লামা জালালুদ্দিন আলকাদেরী (রা) কে স্মরণ করেন এবং মাহফিলে প্রধান পৃষ্ঠপোষক সূফি মোহাম্মদ মিজানুর রহমানের প্রতিও ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান। বিদেশি আলোচক ছিলেন ভারতের আল্লামা মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসাইন বারকাতি। মাহফিলে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন মাহফিল পরিচালনা পর্ষদের প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও চেয়ারম্যান এবং পিএইচপি ফ্যামিলির চেয়ারম্যান সূফি মোহাম্মদ মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, ইয়াজিদি প্রেতাত্মারা আজও থেমে নেই। ইসলামের ছদ্মাবরণে ওরা দেশে দেশে নারকীয় তাÐব ও সহিংসতা চালাচ্ছে। ছড়িয়ে দিচ্ছে ইসলামের নামে সন্ত্রাসবাদের বিভীষিকা। ইসলামের নামে সন্ত্রাসবাদ-জঙ্গিবাদ সারা দুনিয়ায় আজ উদ্ধত ফণা তুলছে। ইসলামের এই জানি দুশমনদের সর্বশক্তি দিয়ে প্রতিহত করা এবং দ্বীন, সত্য ও ন্যায়নীতি প্রতিষ্ঠার জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করাই হচ্ছে হযরত ইমাম হোসাইনের (রা.) দর্শন ও শাহাদাতে কারবালার অন্তর্নিহিত শিক্ষা। ভারতবর্ষে ইসলাম প্রচারে পীর আউলিয়ার ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক ড. আল্লামা এ এস এম বোরহান উদ্দিন। তিনি বলেন, ভারতবর্ষে আউলিয়ায়ে কেরাম আগে ইসলামের দাওয়াত দেননি, আগে তারা মানবতার দাওয়াত দিয়েছেন। নৈতিকতার মানদন্ড দিয়ে মানুষের মন জয় করেই তারা এখানে ইসলামের ভিত্তিসৌধ তৈরি করে গেছেন। ইসলামের মানবিক দর্শন যুগে যুগে সমুন্নত করেছেন আউলিয়ায়ে কেরাম। আলোচক জমিয়তুল ফলাহ মসজিদের পেশ ইমাম আল্লামা হাফেজ আহমদুল হক বলেন, এই ফেতনা ফাসাদের যুগে আমরা যদি আহলে বায়তে রাসূল (দ) কে আঁকড়ে ধরে তাঁদের স্মরণ-অনুসরণ করতে পারি তবে তাই হবে আমাদের জন্য দুনিয়া-আখিরাতে নাজাত ও পরিত্রাণের উসিলা।
মাহফিলে অতিথি ছিলেন কুমিল্লা শাহেবপুর দরবার শরীফের পীর শাহজাদা শাহসূফি সৈয়দ গোলাম মুহাম্মদ আবদুল কাদের কাওকাব, জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়া মাদ্রাসার আরবী প্রভাষক মাওলানা গোলাম মোস্তফা মুহাম্মদ নুরুন্নবী, এস এস. গ্রুপর চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ, এএইচটি হোল্ডিং এর ব্যপস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ তানসির আহমদ ও এডিশনাল পিপি অ্যাডভোকেট রাশেদুল আলম। ড. আল্লামা জাফর উল্লাহর সঞ্চালনায় মাহফিলে শাহাদাতে কারবালা মাহফিলে পরিচালনা পর্ষদের কর্মকর্তা ও সদস্যগণ সহ বিশিষ্ট ওলামায়ে কেরাম, বিভিন্ন দরবারের সাজ্জাদানশীনগণের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন গাউছিয়া কমিটি বাংলাদেশের চেয়ারম্যান পেয়ার মোহাম্মদ, পিএইচপি ফ্যামিলির পরিচালক ও মাহফিলের প্রধান সমন্বয়ক আলী হোসেন সোহাগসহ পর্ষদের সকল কর্মকর্তাবৃন্দ। খবর বিজ্ঞপ্তির