আ.লীগের ৮ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে হত্যা মামলা

6

নিজস্ব প্রতিবেদক

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে নগরীর বহদ্দারহাট এলাকায় সদ্য সাবেক সিটি মেয়র এম রেজাউল করিমের বাসভবনে হামলার সময় সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে পথচারী মো. শহিদুল ইসলাম শহীদ গুলিতে নিহত হওয়ার ঘটনায় চান্দগাঁও থানায় হত্যা মামলা হয়েছে। গত সোমবার দিবাগত রাতে নগর পুলিশের চান্দগাঁও থানায় নিহতের বড় ভাই শফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। এতে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবকলীগের আট নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে।
ওইদিন সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়া মো. শহিদুল ইসলামের বাসা নগরীর বাকলিয়া এলাকায়। তিনি কোতোয়ালী থানার কদমতলী এলাকায় একটি জুতার দোকানের কর্মচারী ছিলেন।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল কবীর বলেন, সাবেক মেয়র এম রেজাউল করিমের বাসভবনে হামলার সময় সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে শহীদুল ইসলাম শহীদ নামে এক পথচারীর মৃত্যুর ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় আট জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ৩০ থেকে ৪০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলায় যাদের আসামি করা হয়েছে তারা হলেন, নগর স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা মহিউদ্দীন ফরহাদ (৪৫), আওয়ামী লীগ কর্মী মো. জালাল ওরফে ড্রিল জালাল (৪২), যুবলীগ কর্মী মো. ফরিদ (৪২), সিটি কলেজ ছাত্র সংসদের ভিপি মো. তাহসীম (২৭), যুবলীগ কর্মী এইচ এম মিঠু (৪০), মো. জাফর (৩৮), যুবলীগ নেতা মো. ফিরোজ (৩৮) এবং স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা মো. দেলোয়ারকে (৪০)। এদের মধ্যে কয়েকজনের অস্ত্র হাতে গুলিবর্ষণের ছবি আন্দোলন চলাকালে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। তবে তাদের কাউকেই এখনও আইনের আওতায় আনতে পারে নি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
মামলার এজাহারে শহিদুলের ভাই উল্লেখ করেছেন, তার ছোট ভাই শহিদুল ইসলাম নগরীর কদমতলী এলাকার একটি জুতার দোকানের কর্মচারী ছিলেন। গত ৩ আগস্ট সন্ধ্যায় তিনি কর্মস্থল থেকে ফেরার সময় বহদ্দারহাট মোড়ে আসেন। কাঁচা বাজার থেকে সদাইপাতি কিনে পায়ে হেঁটে তিনি বাসার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন। এ সময় এজাহারে থাকা আসামিরাসহ আরও অজ্ঞাতনামা ৩০ থেকে ৪০ জন আশপাশের অলিগলি থেকে বাঁশ, কাঠের লাঠি, ইট-পাথর, লোহার রড, ককটেল ও আগ্নেয়াস্ত্রসহ বেরিয়ে রাস্তা বন্ধ করে টায়ার জ্বালিয়ে এলোপাথাড়ি গুলিবর্ষণ করতে থাকে। সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে তার ভাই শহিদুল বহদ্দারবাড়ী শাহী জামে মসজিদের সামনের সড়কে পৌঁছালে আসামিদের গুলিতে তিনি গুলিবিদ্ধ হন। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তাকে নগরীর পাঁচলাইশের বেসরকারি পার্কভিউ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গভীর রাতে তিনি মারা যান।
উল্লেখ্য, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে গত ৩ আগস্ট বিকালে নগরীর নিউ মার্কেট চত্বওে সমাবেশ করে ছাত্র-জনতা। সমাবেশ শেষে মিছিল নিয়ে যাবার পথে ষোলশহর মেয়র গলিতে সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের বাসভবনে হামলার ঘটনা ঘটে। এরপর বহদ্দারহাট এলাকায় তৎকালীন সিটি মেয়র এম রেজাউল করিমের বাসভবনেও হামলা চালোনো হয়। সাবেক সিটি মেয়রের বাসভবনে হামলার সময় শহীদুল ইসলাম শহীদ গুলিবিদ্ধ হন।