আষাঢ়ের বারিধারায় নগরবাসীর দুর্ভোগ

16

নিজস্ব প্রতিবেদক

আষাঢ়ের মধ্যভাগে এসে গতকাল রবিবার দিনভর হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাতে নগরীর নিম্নাঞ্চল জলমগ্ন হয়ে পড়ে। অফিসগামী লোকজন পড়েন বিপাকে। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের। দূরের যাত্রাপথের অনেক পরীক্ষার্থী পরীক্ষা শুরুর ঠিক আগ মুহূর্তে কেন্দ্রে পৌঁছান। বিভিন্ন এলাকার পরীক্ষা কেন্দ্রে যেতে যানবাহন সঙ্কটেও পড়েন অনেকে।
নগরীর মুরাদপুর, বাকলিয়া, বাদুরতলা, জিইসি মোড়, দুই নম্বর গেট, ষোলশহর এলাকার সড়কগুলো কিছু সময়ের জন্য পানিতে তলিয়ে যায়। এসময় যানজটে চলাচল বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়। এসব এলাকার নিচ তলার বাসা বাড়িতেও পানি প্রবেশ করে। তবে দুপুরের পর থেকে বৃষ্টিপাত কমে যাওয়ায় সড়ক থেকে পানি নেমে যায়। বৃষ্টিপাতের কারণে দিনের তাপমাত্রা কিছুটা কম ছিল। গত শনিবার বিকাল তিনটা থেকে গতকাল রবিবার বিকাল তিনটা পর্যন্ত চব্বিশ ঘণ্টায় ৭০ দশমিক ছয় মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অফিস। বর্ষণের এই ধারা কয়েকদিন অব্যাহত থাকার আভাস দেয়া হয়েছে। এছাড়া বর্ষণজনিত কারণে পাহাড় ধসের শঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে তিন নম্বর সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। আবহাওয়ার সতর্ক সংকেত বহাল থাকায় চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে বড় জাহাজ থেকে পণ্য খালাস বন্ধ থাকলেও জেটিতে পণ্য ওঠানামা স্বাভাবিক ছিল।
পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তা উজ্জল কান্তি পাল পূর্বদেশকে বলেন, মৌসুমি বায়ু সক্রিয় থাকায় বৃষ্টি বেড়ে গেছে। তাছাড়া সাগরে লঘুচাপ সৃষ্টি হওয়ায় বৈরি আবহাওয়া বিরাজ করছে। রবিবার বিকাল তিনটা পর্যন্ত পূর্ববর্তী চব্বিশ ঘন্টায় ৭০ দশমিক ছয় মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এর মধ্যে রবিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বৃষ্টিপাত বেশি হয়েছে। এছাড়া সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত পূর্ববর্তী চব্বিশ ঘন্টায় সাগরকন্যা কক্সবাজারে দেশের সর্বোচ্চ একশ’ ৩৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
এদিকে বৃষ্টির সময় নগরীর একটি নির্মাণাধীন ভবনের দেয়াল ধসে জেসমিন আক্তার (২৫) নামে এক নারী আহত হয়েছেন। রবিবার সকালে নগরীর বায়েজিদ বোস্তামি থানার চন্দ্রনগরে কিশোয়ান ফুড প্রডাক্টেও কারখানার পেছনে এ ঘটনা ঘটে। বায়েজিদ বোস্তামি থানার ওসি সঞ্জয় কুমার সিনহা বলেন, টানা বৃষ্টির সময় নির্মাণাধীন একটি ভবনের সীমানা প্রাচীরের দেয়ালের কাঠামো দুর্বল হয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে ধসে পড়লে এক নারী আহত হন। তাকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তার অবস্থা তেমন গুরুতর নয় বলে জানতে পেরেছি।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. মনোয়ার হোসেন স্বাক্ষরিত ভারী বর্ষণের সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, দেশের উপর মৌসুমি বায়ু সক্রিয় থাকায় চট্টগ্রাম, রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ, ঢাকা, সিলেট, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের কোথাও কোথাও রবিবার বিকাল চারটা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘন্টা বা তিনদিন ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে। ভারী বর্ষণজনিত কারণে চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের পাহাড়ি এলাকার কোথাও কোথাও ভ‚মিধসের শঙ্কা রয়েছে।