আমিরাতে দুর্ঘটনায় নিহত ৫ প্রবাসীর পরিচয় শনাক্ত

6

ইউএই প্রতিনিধি

অবশেষে পরিচয় শনাক্ত করা গেছে সংযুক্ত আরব আমিরাতে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত পাঁচজন প্রবাসীর অগ্নিদগ্ধ মরদেহের। ২ আগস্ট মরদেহগুলো বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে দুবাই থেকে ঢাকা ফিরবে। ৩০ জুলাই সকাল থেকে এই সংক্রান্ত সার্বিক প্রস্তুতি শুরু করেছে আবুধাবি বাংলাদেশ দূতাবাস।
শনাক্ত করা মরদেহের মধ্যে রয়েছে- ঢাকার নবাবগঞ্জ বালেঙ্গার মুহাম্মদ রানা মিয়া, একই এলাকার মুহাম্মদ ইবাদুল শেখ, মুহাম্মদ রাজু হোসেন, নবাবগঞ্জ রাজাপুরের মুহাম্মদ রাশেদ ও ঢাকা দোহারের ইকলাছ মৃধা। তারা সবাই দেশটির আজমান প্রদেশে বসবাস করতেন। গত ৭ জুলাই সকালে কর্মস্থলে যাওয়ার পথে গাড়ির সিলিন্ডার বিস্ফোরণে মারা যান তারা। আজমান থেকে আবুধাবি যাওয়ার পথে শাহামা এলাকায় স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৯টার দিকে এই দুর্ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনার দিন দগ্ধ দেহগুলো দেখে বোঝার কায়দা ছিল না কোনটি কার লাশ। অবশেষে মৃত্যুর ২৩ দিনের মাথায় মৃত্যুসনদ পাওয়া গেল তাদের।
আবুধাবি বাংলাদেশ দূতাবাসের শ্রম কাউন্সিলর হাজরা সাব্বির হোসেন জানান, হাসপাতালের ময়নাতদন্ত বিভাগের দীর্ঘ চেষ্টায় দগ্ধ দেহগুলো শনাক্ত করা গেছে। সোমবার রাত ৩টায় পাঁচ প্রবাসীর মৃত্যুসনদ পাওয়া গেছে। দূতাবাস তাদের মরদেহ পরিবারের কাছে পাঠাতে বিমানের কার্গো বুকিংয়ের অনুরোধ করেছে। সম্পূর্ণ সরকারি খরচে এই ৫ প্রবাসীর মরদেহ দেশে পাঠানো হবে।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের দুবাইয়ের রিজিওনাল ম্যানেজার সাকিয়া সুলতানা বলেন, ‘পাঁচজনের মরদেহ একসঙ্গে পাঠানোর বিষয়ে ইতোমধ্যে দূতাবাস বুকিং দিয়েছে। বিমানের পক্ষ থেকেও সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। কার্গোতে বলা হয়েছে; যাতে সবগুলো মরদেহ একসঙ্গে দেশে যায়।’
সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত এই পাঁচ প্রবাসী কোনো ক্ষতিপূরণ পাবেন কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে হাজরা সাব্বির হোসেন বলেন, ‘তারা যেহেতু নিয়োগকর্তার অধীনে কাজ না করে অন্যত্র কাজ করতেন সেই হিসেবে নিয়োগকর্তার কাছে তাদের কোনো লেনদেন নেই। তাই মরদেহগুলো সরকারি খরচে পাঠানো হচ্ছে। অন্যদিকে, গাড়ি দুর্ঘটনার বিষয়টি এখনও তদন্তাধীন। সেই রিপোর্ট কোর্টে যাবে। সেখানে মামলাটি দূতাবাস তদারকি করবে। যদি নিহতের পরিবার দূতাবাসকে পাওয়ার অব অ্যাটর্নি দেয় তাহলে মামলাটি দূতাবাস সরাসরি পরিচালনা করবে। কোর্টে যদি ক্ষতিপূরণ পায়, রায় হয়; তাহলে ক্ষতিপূরণ আদায় সাপেক্ষে নিহতের পরিবারের কাছে পাঠানো হবে। যদি স্বজনরা মামলা পরিচালনা করেন সেক্ষেত্রে দূতাবাস তাদের সার্বিকভাবে সহায়তা করবে।’
দুবাইয়ে কর্মরত ইন্স্যুরেন্স কর্মকর্তা সাইফুদ্দিন আহমেদ জানান, গাড়ি দুর্ঘটনায় মৃত পাঁচজনের যে গাড়ির ইন্স্যুরেন্স আছে তারা কভারেজ দেবে। প্রতিজনে ব্লাড মানি দুই লাখ দেরহাম করে পাবে। তিনি প্রত্যেক পরিবারের ব্যক্তিগত কাউকে পাওয়ার অব এটর্নি না দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। এরকম দুর্ঘটনায় দেড় মিলিয়ন টাকা পর্যন্তও ক্ষতিপূরণ পেয়েছে। নিম্নতম পাঁচজনে দুই লক্ষ দেরহাম পাবে। তিনি দূতাবাসকে পাওয়ার অব এটর্নি দেয়ার অনুরোধ করেন। পরবর্তীতে তারা আপিল করলে তাদের পরিবারের ভরণ পোষণের জন্য আরো কিছু টাকা পাবেন বলেও জানান তিনি।