আনার হত্যার মূল কারণ উদঘাটনে অন্ধকারে পুলিশ

2

পূর্বদেশ ডেস্ক

সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনারকে কী কারণে হত্যা করা হয়েছে তা এখনো অস্পষ্ট ঠেকছে পুলিশের কাছে। ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) হারুন অর রশীদ বলেছেন, তাকে কী উদ্দেশ্যে হত্যা করা হয়েছে, এটা এখনো পরিষ্কার নয়। টাকা লেনদেনসহ যেসব বিষয় শোনা যাচ্ছে- সব বিষয়গুলো গুরুত্ব সহকারে খতিয়ে দেখছি।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। খবর বিডিনিউজের।
আনার হত্যায় সন্দেহভাজন হিসেবে বুধবার চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডের পাহাড় থেকে গ্রেপ্তার করা হয় ফয়সাল আলী সাজি ও মোস্তাফিজুর রহমান নামের দুজনকে। পরে তাদেরকে উড়োজাহাজে ঢাকায় আনা হয়।
ফয়সাল ও মোস্তাফিজুরকে নিয়ে হত্যা মিশনে সরাসরি অংশ নেওয়া সাত জনই গ্রেপ্তার হলো। গ্রেপ্তার দুজন নিজেদের পলাশ রায় ও শিমুল রায় পরিচয় দিয়ে একটি কালী মন্দিরে অবস্থান করছিলেন বলে পুলিশের ভাষ্য।
হারুন অর রশীদ বলেন, কলকাতার সঞ্জীভা গার্ডেনসের ফ্ল্যাটে আনার হত্যার শিমুল ভুঁইয়ার নেতৃত্বে সাতজন অংশ নেন। সবশেষ এই দুইজনসহ পাঁচজন বাংলাদেশে গ্রেপ্তার হলেন। তারা হলেন- শিমুল ভুঁইয়া, তানভীর ভুঁইয়া ও সিলেস্তি রহমান এবং সর্বশেষ বুধবার গ্রেপ্তার হওয়া ফয়সাল ও মোস্তাফিজুর।
এর বাইরে ভারতে গ্রেপ্তার হয়েছেন কসাই জিহাদ হাওলাদার এবং নেপালে ধরা পড়েন সিয়াম। সিয়ামকে পরে ভারতের পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
আনার হত্যার হোতা আখতারুজ্জামান শাহীন ঘটনার পর যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান জানিয়ে ডিবি কর্মকর্তা হারুন বলেন, তাকে ইন্টারপোলের মাধ্যমে ফিরিয়ে আনার বিষয়টি কালকাতা পুলিশ গুরুত্ব সহকারে দেখছে।
ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনার গত ১১ মে চিকিৎসার জন্য ভারতে গিয়ে নিখোঁজ হন। এই ঘটনায় তার বন্ধু স্বর্ণ ব্যবসায়ী গোপাল বিশ্বাস কলকাতায় জিডি করেন। দুই দেশেই তদন্ত শুরু হয়।
এরপর ২২ মে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, এমপি আনারকে কলকাতার এক বাড়িতে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।
আনার হত্যাকান্ডের খবরের দিনই তার মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন শেরেবাংলা নগর থানায় তার বাবাকে খুনের উদ্দেশে অপহরণের অভিযোগে মামলা দায়ের করেন। অন্যদিকে কলকাতায় দায়ের করা হয় হত্যা মামলা।
কলকাতা পুলিশ হত্যা মামলা এবং ঢাকার পুলিশ খুনের উদ্দেশ্যে অপহরণ মামলার তদন্ত করছে। এ নিয়ে ঢাকা ও কলকাতা মিলে এখন পর্যন্ত নয়জন গ্রেপ্তার আছেন। তার মধ্যে দুইজন ঝিনাইদহের আওয়ামী লীগ নেতা।
এদিকে সীতাকুন্ডের মন্দির থেকে গ্রেপ্তার দুই সন্দেহভাজন ফয়সাল আলী সাহাজি ও মুস্তাফিজুর রহমান ফকিরকে ছয় দিনের হেফাজতে পেয়েছে পুলিশ।
গতকাল তাদের আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির সহকারী কমিশনার মাহফুজুর রহমান।
রাষ্ট্রপক্ষে মহানগর দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত পিপি তাপস কুমার পাল রিমান্ড আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন। তবে আসামিদের পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না।
আইনজীবী তাপস পাল বলেন, শুনানিতে আসামিদের কোনো বক্তব্য জানতে চাননি বিচারক।