আনার হত্যার তদন্তে পূর্ণ সহায়তা দেওয়া হচ্ছে : ভারত

3

পূর্বদেশ ডেস্ক

কলকাতায় এমপি আনোয়ারুল আজীম আনারকে ‘খুনের’ ঘটনা তদন্তে বাংলাদেশকে ‘পূর্ণ সহায়তা’ দেওয়ার কথা বলেছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। গতকাল বৃহস্পতিবার সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রানধির জেসওয়াল বলেন, বাংলাদেশ ও ভারত উভয় দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এক্ষেত্রে সমন্বয় করছে এবং প্রয়োজনীয় তথ্য আদানপ্রদান করছে। চলমান তদন্তের অংশ হিসাবে আমাদের দিক থেকে সরকার বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষকে পূর্ণ সহায়তা দিচ্ছে। খবর বিডিনিউজের।
ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনার গত ১১ মে তিনি চিকিৎসার জন্য ভারতে যান। প্রথমে কলকাতার বরাহনগরে তার বন্ধু স্বর্ণ ব্যবসায়ী গোপাল বিশ্বাসের বাড়িতে ওঠেন। কিন্তু সেখান থেকে বেরিয়ে নিখোঁজ হন।
এরপর স্থানীয় থানায় জিডি করেন গোপাল বিশ্বাস। তদন্ত শুরু হয় দুই দেশে। ২২ মে সকালে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে খবর আসে, নিউ টাউনের এক বাড়িতে খুন হয়েছেন এমপি আনার।
এ হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে ভারতীয় পুলিশের দেওয়া তথ্যে বাংলাদেশে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ। পরে তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডেও নেওয়া হয়।
ওই তিনজন হলেন- আমানুল্লা সাঈদ ওরফে শিমুল ভুঁইয়া ওরফে শিহাব ওরফে ফজল মোহাম্মদ ভুঁইয়া (৫৬), তানভীর ভুঁইয়া (৩০) ও সেলেস্টি রহমান (২২)।
তদন্তের এক পর্যায়ে জিহাদ হাওলাদার নামের এক কসাইকে গ্রেপ্তার করে পশ্চিমবঙ্গের সিআইডি। তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী তাকে নিয়ে কয়েকটি খাল, জঙ্গলে ব্যাপক তল্লাশি চালিয়েও আনারের লাশের হদিস মেলাতে পারেনি কলকাতা পুলিশ।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়, ২৪ বছর বয়সী জিহাদ হাওলাদার বাংলাদেশের খুলনার বাসিন্দা। অবৈধভাবে ভারতে অনুপ্রবেশ করেছিলেন তিনি। আনারকে ‘খুনে’র প্রায় দুই মাস আগে অভিযুক্তরা জিহাদকে মুম্বাই থেকে কলকাতায় নিয়ে আসেন।
জিজ্ঞাসাবাদে সিআইডিকে জিহাদ বলেছেন, আখতারুজ্জামানের নির্দেশেই তিনি ‘সব কাজ’ করেছেন। আরও চার জন বাংলাদেশি এই কাজে সাহায্য করেছেন।
ভারতীয় গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল বাংলাদেশে এসে ২৪ মে ঢাকায় গ্রেপ্তার তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে যান। এরপর ২৫ মে কলকাতায় যান বাংলাদেশের ডিবির তিন কর্মকর্তা। তারাও কসাই জিহাদকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন এবং তাকে নিয়ে সেই বাড়ি ঘুরে দেখেন, যেখানে আনারকে হত্যার কথা বলা হচ্ছে।
সঞ্জিভা গার্ডেনস নামের বিলাসবহুল ওই অ্যাপার্টমেন্ট বøকের সেপটিক ট্যাংক থেকে মঙ্গলবার বেশ কিছু মাংসের টুকরো উদ্ধার করার কথা জানায় পুলিশ।
ডিএনএ পরীক্ষার জন্য পরে তা ভারতের কেন্দ্রীয় ফরেনসিক ল্যাবে পাঠানো হয়। এই ডিএনএ নমুনা মেলানোর জন্য রক্তসম্পর্কীয় স্বজন প্রয়োজন হয়। সেজন্য এমপি আনারের মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিনের ভারতে যাওয়ার কথা রয়েছে।
ডরিনের সঙ্গে এমপি আনারের ব্যক্তিগত সহকারী আব্দুর রউফেরও কলকাতা যাওয়ার কথা। তবে গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত তারা ভারতের ভিসা পাননি বলে জানান আব্দুর রউফ।
তিনি বলেন, আমরা ২২ তারিখ ভিসার জন্য আবেদন করছি। তারা বলেছে সরকারিভাবে সবরকম সহায়তা করবে। কিন্তু এখনো ভিসা পাইনি। তারা আমাদের আর কিছু জানায়নি।