আনারস ও মোটর সাইকেলের মধ্যে ভোটের লড়াই

19

বান্দরবান প্রতিনিধি

বান্দরবানে লামা ও নাইক্ষ্যংছড়ি দুইটি উপজেলায় শেষ মুহূর্তে জমে উঠেছে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনী প্রচারণা। আগামী ২১মে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ২য় ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। এ ধাপে বান্দরবানের লামা ও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। শেষ মুহূর্তে দুই উপজেলায় নির্বাচনী প্রচারণা জমে উঠেছে। এক উপজেলায় দুইজন করে চেয়ারম্যান প্রার্থী রয়েছেন। লামা উপজেলায় সাতটি ইউনিয়ন ও একটি পৌর সভায় নিয়ে গঠিত। উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আনারস প্রতীকে নিয়ে লড়াই করছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মো. মোস্তফা জামাল। অন্যদিকে মোটরসাইকেল প্রতীকে লড়াই করছেন উপজেলা বিএনপিও সহ-সভাপতি জাকের হোসেন মজুমদার। যদিও দলেও সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে নির্বাচন করায় জাকের হোসেন মজুমদারকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এছাড়াও ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যন (পুরুষ) পদে ৪ জন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যন পদে ৩জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীরা হলেন- উপজেলা যুবলীগের আহব্বায়ক ও বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান মো. জাহেদ উদ্দিন তালা প্রতীকে, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক প্রদীপ কান্তি দাশ টিউবয়েল প্রতীকে, উপজেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আব্বাস উদ্দিন সেলিম চশমা প্রতীকে এবং লামা পৌর যুবলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি সাইদুর রহমান উড়োজাহাজ প্রতীকে নির্বাচন করছেন। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান মিলকী রাণী দাশ ফুটবল মার্কা, সোলতানা নাজমা প্রজাপতি এবং বৈশালী বড়ুয়া কলসি মার্কায় নির্বাচন করছেন। লামা উপজেলায় মোট ভোটার সংখ্যা ৮২ হাজার ২১৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৪২ হাজার ৯০৪জন, মহিলা ৩৯ হাজার ৩০৯ জন।
এদিকে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় চেয়ারম্যান প্রার্থী রয়েছে ২ জন। তারা হলেন আনারস প্রতীকে বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ শফিউল্লাহ্ এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী তোফাইল আহমদ মোটর সাইকেল প্রতীকে নির্বাচন করছেন। আর ভাইস চেয়ারম্যান পদে (পুরুষ) শাহ্ জাহান কবির টিয়া পাখি, মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন চশমা এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী হলেন-কাজী রাশেদা বেগম ফুটবল, শামীমা আক্তার প্রজাতিপতি, সানজিদা আক্তার কলস এবং হামিদা চৌধুরী ফুটবল প্রতীকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তবে প্রার্থীরা নির্বাচনী প্রচার জোরদার করার পাশাপাশি নিজ নিজ কৌশল প্রয়োগ কওে প্রচারণায় এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। নির্বাচনের শেষ প্রান্তে এসে নানামুখী মেরুকরণ হচ্ছে। প্রার্থীদের জয়-পরাজয়ের ফ্যাক্টর হিসেবে সামনে আসছে বিভিন্ন সমীকরণ। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে আনারস ও মোটর সাইকেলের মধ্যে ভোটের লড়াই হবে হাড্ডাহাড্ডি। শেষ পর্যন্ত ফলাফল কি হয় তা দেখার জন্য উপজেলাবাসীর চোখ এখন নির্বাচন পরবর্তী ফলাফলের দিকে।
নির্বাচনের আর মাত্র একদিন দিন বাকি। তাই দুই উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নেয়া চেয়ারম্যান ও ভাইস-চেয়ারম্যান প্রার্থীরা নিজ নিজ কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত নির্ধারিত এলাকা চষে বেড়াচ্ছেন। বাসায় ফিরে পরের দিনের কর্মসূচী নিয়ে পরিকল্পনা করছেন। এর ফলে তাদের চোখের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। কে কার চেয়ে বেশি কৌশল প্রয়োগ করে নিজের অবস্থান জোরদার করবেন এ নিয়ে রীতিমতো প্রতিযোগিতা চলছে। আর এ কৌশল প্রয়োগ করেই হিসাবের বাইরে থাকা ভোটারদের কাছে টানার চেষ্টা চলছে। আর এ নির্বাচনের পরিবেশ স্বাভাবিক রাখতে নির্বাচন কমিশন ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। প্রশাসনও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে যাবতীয় প্রস্তুতি নিয়েছে। ৫টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা। মোট ভোটার সংখ্যা ৪৫ হাজার ২ শত ৭৯ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২২ হাজার ৭শত ৭০ এবং মহিলা ২২ হাজার ৫০৯ জন।
উপজেলা নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং অফিসার ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার বলেন, সুষ্ঠু ভোট অনুষ্ঠানে সকল আয়োজন সম্পন্ন করা হয়েছে। শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নির্বিঘ্নে ভোটাররা তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারবে এটাই আমাদের প্রত্যাশা।