আদালতের নির্দেশ উপেক্ষা করে স্ক্র্যাপ বিক্রি

5

সীতাকুন্ড প্রতিনিধি

সীতাকুন্ডের একটি ইয়ার্ডে প্রতিরাতে সংঘবদ্ধ চক্র পুরাতন জাহাজের স্ক্র্যাপ লোহা বিক্রি করছে। ইয়ার্ডটির মালিক ঋণ খেলাপির অভিযোগে ব্যাংকের দায়েরকৃত মামলায় ইয়ার্ডটি জব্দ তালিকায় রয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যাংক কর্মকর্তারা। চট্টগ্রাম অর্থঋণ আদালতসহ অন্যান্য আদালতে বিচারাধীন মামলায় ইয়ার্ডের সকল মালামাল বেচা-বিক্রি বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। ব্যাংক দাবি করছে প্রতিষ্ঠানটিতে প্রায় ৩’শ কোটি টাকা ঋণ পাওনা রয়েছে।
জানা যায়, উপজেলার সোনাইছড়ি ইউনিয়নের শীতলপুর চৌধুরীঘাটাস্থ এম রহমান স্টীল মিলস লিমিটেডের (শিপইয়ার্ড) অভ্যন্তরে থাকা পুরাতন জাহাজের স্ক্র্যাপ লোহা সংঘবদ্ধভাবে চুরি করে বিক্রি করছে ইয়ার্ডের মালিক। এতে ব্যাংকের অগোচরে কয়েকজন দুনীতিবাজ কর্মকর্তাও জড়িত আছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। ওই ইয়ার্ডের অভ্যন্তরে মাটির নীচে থাকা স্ক্র্যাপ লোহা স্কেভেটরের দিয়ে তুলে তা ট্রাকে করে নিয়ে যাচ্ছে ওই সংঘবদ্ধ চক্রটি। গত বুধবার বিকেলে এই দৃশ্য দেখা গেছে।
এরআগে গত রবিবার স্থানীয় লোকজন ঐ ইয়ার্ড থেকে স্ক্র্যাপ লোহা পাচারকালে একটি ট্রাক জব্দ করে। এতে ১৫ লক্ষ টাকার স্ক্র্যাপ লোহা ছিল। পরবর্তীতে মালিকপক্ষ প্রশাসন ও স্থানীয় সংঘবদ্ধ চক্রকে ম্যানেজ করে ট্রাকটি ছাড়িয়ে নেন। স্থানীয় রমজান আলী নামে এক স্ক্র্যাপ ব্যবসায়ী এই মালামালগুলো কিনে নেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
মার্কেন্টাইল ব্যাংক পিএলসি জুবলী রোড শাখা এফএভিপি সুরঞ্জিত চৌধুরী বলেন,‘এম রহমান শিপব্রেকিং প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অর্থঋণ আদালত ছাড়াও একাধিক মামলা রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির মালিক প্রায় তিনশ কোটি টাকা ব্যাংকের ঋণ খেলাপি। আদালত ইয়ার্ডের সকল মালামাল ব্যাংকের জিম্মায় রাখাসহ বেচা বিক্রির বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু ইয়ার্ড মালিক সংঘবদ্ধদের ম্যানেজ করে ইয়ার্ডের স্ক্র্যাপ লোহাসহ মালামাল বিক্রি করছে। এছাড়া মাটির নীচে থাকা স্ক্র্যাপ লোহা স্কেভেটর দিয়ে তুলে তা রাতের আঁধারে সরিয়ে নিচ্ছে। স্ক্র্যাপ লোহাগুলো নামমাত্র মূল্যে ক্রয় করে নিচ্ছেন স্থানীয়রা। এ বিষয়ে সীতাকুন্ড মডেল থানায় অভিযোগ দিয়েছেন বলে জানান ব্যাংক কর্মকর্তা।
সীতাকুন্ড মডেল থানার ওসি মো. কামাল উদ্দিন পিপিএম বলেন, ‘ব্যাংক কর্তৃপক্ষের দেওয়া অভিযোগ তদন্তাধীন রয়েছে। তবে ব্যাংক যদি মাল বিক্রি না করা সত্ত্বেও আদালতের ডকুমেন্ট দিতে পারে আমরা মাল বিক্রির সাথে জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় নিয়ে আসবো।’
অপরদিকে এসব বিষয়ে জানতে ইয়ার্ডটির মালিক এম রহমানকে একাধিকবার কল দিলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় মন্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। একইভাবে ঘটনার পর থেকে মোবাইল ফোন বন্ধ রেখেছে স্ক্র্যাপ লোহা ক্রয়কারী সীতাকুÐের শীতলপুরের স্ক্র্যাপ লোহা ব্যবসায়ী মোহাম্মদ রমজান আলী।