আজ ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট অধিবেশন বসছে

3

পূর্বদেশ ডেস্ক

দ্বাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম বাজেট অধিবেশন বসছে আজ। বিকাল পাঁচটা থেকে শুরু হওয়া এ বৈঠকের আগে কার্যউপদেষ্টা কমিটির বৈঠক হবে। সেখানে চলতি অধিবেশন কতদিন চলবে তা নির্ধারণ করা হবে। আগামী রোববার চলতি অধিবেশন শেষ হবে বলে জানা গেছে।
আগামীকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করবেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী।
সাধারণত বাজেট অধিবেশন দীর্ঘ হয়। আগামী ৩০ জুন বাজেট পাস হওয়ার কথা রয়েছে। এরআগে ১০ জুন সম্পূরক বাজেট পাস হবে বলে সূত্রে জানা গেছে।
সরকার চলতি অর্থবছরের চেয়ে ৩৫ হাজার ২১৫ কোটি টাকা বাড়িয়ে আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার বাজেট দিতে যাচ্ছে। তবে বাজেটের আকার বাড়লেও আগমী অর্থবছরে ঘাটতির পরিমাণ কিছুটা কমছে। চলতি অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের তুলনায় আগামী অর্থবছরের বাজেটে ঘাটতি কম ধরা হচ্ছে পাঁচ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা। বাজেট ঘাটতি ২ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা।
আগামীকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে নতুন অর্থবছরের বাজেটটি প্রস্তাব আকারে উত্থাপন করা হবে।
চলতি ২০২৩-২৪ অর্থ বছরের তুলনায় বাজেটের আকার ৪.৬২ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। বাজেটে বিদেশি ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ লাখ ২৭ হাজার ২০০ কোটি টাকা। ব্যাংক থেকে ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ১ লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। ঋণ সুদ পরিশোধের ব্যয় ১ লাখ ১৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ধরা হয়েছে। এছাড়া সঞ্চয়পত্র বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৫ হাজার ৪০০ কোটি টাকা।
২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটের আকার ছিল ৭ লাখ ৬১ হাজার কোটি টাকা। ব্যয় বাড়ানোর আকাক্সক্ষা থাকলেও আয়ের সংস্থান নিয়ে এবারও চাপে থাকবে সরকার। বড় বাজেট, তাই রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রাও থাকছে প্রায় সাড়ে পাঁচ লাখ কোটি টাকা। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এনবিআরের মাধ্যমে সরকারের আদায়ের লক্ষ্য থাকবে ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা। বাকিটা মিলবে রাজস্ব বোর্ডবহির্ভূত খাত থেকে। লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী রাজস্ব আদায় হলেও বড় অঙ্কের ঘাটতি থাকবে আসছে বাজেটে। টাকার অঙ্কে যা প্রায় ২ লাখ ৫৫ হাজার কোটি টাকা। ঘাটতি পূরণে সরকার ঋণ নিতে চায় অভ্যন্তরীণ ব্যাংক ও বৈদিশিক খাত থেকে। তবে এবারই প্রথম সঞ্চয়পত্র বিক্রি করে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে কোনো ঋণ নেবে না সরকার।
সম্প্রতি গণভবনে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তুতি-বিষয়ক এক বৈঠকে চলতি অর্থবছরের মতো আগামী অর্থবছরের বাজেটকেও ব্যয় সংকোচনমুখী করার পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আগামী বাজেটেও যাতে বিলাসী পণ্য আমদানি না হয়, সেদিকে বিশেষ নজর দিতে বলেছেন তিনি। জানা গেছে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করে সাধারণ মানুষকে স্বস্তি দিতে বাজেটে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে।
আসছে বাজেটের প্রতিপাদ্য হতে যাচ্ছে ‘সুখী, সমৃদ্ধ, উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের অঙ্গীকার’। নানা অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যেও অর্থমন্ত্রী স্বপ্ন দেখছেন স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণের। আর সে জন্য তিনি দেশের অবকাঠামো নির্মাণে ব্যয় করতে চান ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি বা এডিপিতে বরাদ্দ থাকছে এ অর্থ। যদিও চলতি অর্থবছরের প্রথম দশ মাসে ব্যয় হয়নি বরাদ্দ দেয়া এডিপির অর্ধেকটাও।
আগামী বাজেটে মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপির প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য কমিয়ে আনবে সরকার। চলতি অর্থবছরের ৭ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হতে পারে ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ।
সাধারণত চলতি সংসদের কোনও সদস্য মৃত্যুবরণ করলে মৃত্যুর পর অধিবেশনের প্রথম বৈঠকে শোকপ্রস্তাব গ্রহণ করে রেওয়াজ অনুযায়ী অধিবেশন মুলতবি করা হয়। ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার স¤প্রতি কলকাতায় গিয়ে ‘খুন’ হন। তবে তার মৃত্যুর বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত না হওয়ায় আজ বৈঠকে তার জন্য শোক প্রস্তাব নেওয়া হচ্ছে না বলে জানা গেছে।
সংসদের দিনের কার্যসূচি অনুযায়ী প্রথম দিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশ্নোত্তর রয়েছে। এ ছাড়া আরও চারটি মন্ত্রণালয়ের প্রশ্নোত্তর হবে।