আজ থেকে নগরীর সড়কে নামছে ‘চট্টলা চাকা’

14

নিজস্ব প্রতিবেদক

নগরীতে এসি বাস সার্ভিস হিসেবে সড়কে নামছে ‘চট্টলা চাকা’। আজ সকাল সাড়ে সাতটা থেকে কাপ্তাই রাাস্তার মাথা থেকে কাঠগড় পর্যন্ত চলাচল করবে। গতকাল সোমবার নগরীর হোটেল আগ্রাবাদে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে নতুন এই বাস সার্ভিসের উদ্বোধন করেন সিটি মেয়র মো. রেজাউল করিম।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নগর পুলিশের কমিশনার কৃষ্ণপদ রায়, অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) মো. মাসুদ আহাম্মদ, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) চট্টগ্রাম বিভাগের পরিচালক মো. মাসুদ আলম এবং নিটল মটরস লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তানবীর শহীদ। আবৃত্তিশিল্পী জেবুন নাহার শারমিনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন শান্তি এক্সপ্রেস লিমিটেডের চেয়ারম্যান মনজুর আলম চৌধুরী।
সিটি মেয়র বলেন, আমি দেখছি চট্টগ্রাম শহরে এখনও লক্কড়-ঝক্কর গাড়ি চলে। মালিকদের প্রতি অনুরোধ থাকবে, সেগুলো আপনার রিপ্লেস করুন। বাসগুলো সুন্দর কাঠামোর মধ্যে আনতে পারলে পরিবহন ব্যবস্থায় আরও সুশৃঙ্খল হবে। এসি বাস সার্ভিস চট্টগ্রাম নগরীর পরিবহন সেক্টরে একটি নতুন সংযোজন। আমি মনে করি এটা একটা সময় উপযোগী পদক্ষেপ। কারণ সব কিছু পরিবর্তন হচ্ছে। আমরা চাই পরিবহনেও একটা পরিবর্তন আসুক। এসি বাস সার্ভিস চালুর মাধ্যমে এই পরিবর্তনের সুযোগ এসেছে। যে দেশের কমিউনিকেশন যত উন্নত সে দেশের অর্থনীতি তত সমৃদ্ধ। আজকে চট্টগ্রাম পরিবহন জগত আরও একধাপ এগিয়ে গেল।
মেয়র আরও বলেন, পরিবহন খাতে শৃঙ্খলা ফেরানোর কথা বলেন সবাই। পরিবহনের শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব শুধু পুলিশ ডিপার্টমেন্টে বা সিটি কর্পোরেশনের নয়। সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায় বলেন, মানুষের চাহিদা এবং সামর্থ্য আছে, কিন্তু নগরীতে সেরকম যান না থাকার কারণে তাদের মধ্যে একটা হতাশা তৈরি হয়েছে।আমি আশা করছি এই বাস সার্ভিসের মাধ্যমে চট্টগ্রাম শহরের নতুন দিগন্তের সূচনা ঘটবে। আর যারা সামর্থ্যবান আছেন তারা এই ব্যবসায় নেমে আসবেন। আধুনিক বাস আসলে লক্কর-ঝক্কর বাস এমনিতেই বাদ পরে যাবে।
শান্তি এক্সপ্রেস (প্রা.) লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শাহজাহান বলেন, কাউন্টারগুলো যাত্রীর চাপ অনুযায়ী হলুদ এবং লাল ক্যাটাগরিতে ভাগ করে দেওয়া হবে। এসি বাসে হাফ ভাড়া নেওয়ার প্রজ্ঞাপন না থাকলেও ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য কার্ড সিস্টেম করা হবে। ওই কার্ড দিয়ে যাতায়াত করলে তারা নির্দিষ্ট পরিমাণে ভাড়া ছাড় পাবে।
সভাপতির বক্তব্যে শান্তি এক্সপ্রেস লিমিটেডের চেয়ারম্যান মনজুরুল আলম চৌধুরী বলেন, আমরা ১১টি গাড়ির পারমিট পেয়েছি। ইতোমধ্যে চালকদের পরীক্ষা নিয়ে তাদের নিয়োগ দিয়েছি। আমাদের ৪ জন চালক সবসময় স্ট্যান্ডবাই থাকবে। যাতে চালক সংকট না হয়। তাছাড়া চালকদের জন্য নির্ধারিত ড্রেস থাকবে। নির্দিষ্ট কাউন্টার থেকে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে গাড়ি ছাড়া হবে। কোনো যাত্রী দাঁড়িয়ে যেতে পারবে না এবং সিটের বাইরে যাত্রী নেওয়া হবে না। অ্যাপ্সের মাধ্যমে ই-টিকেটের মাধ্যমে টিকেট গ্রহণ করবে যাত্রীরা।
এসময় অন্যান্যদের মধ্যে নগর পুলিশের উপ কমিশনার (ট্রাফিক) মো. তারেক আহেম্মদ, উপকমিশনার (বন্দর) মোস্তাফিজুর রহমান, উপকমিশনার (ট্রাফিক-দক্ষিণ) এনএম নাছির উদ্দিন, চট্টগ্রাম জেলা মালিক গ্রæপের সৈয়দ হোসেন, আহাসান উল্লাহ, মনছুর রহমান, নুরুল ইসলাম, জাফর চৌধুরী, আনোয়ারুল আজিম, রুহুল আমিন, ফারুক খান, জাফর আলম, মেট্রোপলিটন মালিক গ্রæপের আমজাদ হাজারী,, বেয়ায়েত হোসেন, আকরাম শেখ, তরুণ দাস, শহিদুল ইসলাম, সিরাজদৌল্লাহ, বদিউল আলম, শ্রমিক ফেডারেশনের মো. মুছা, অলি আহাম্মদ, কামাল উদ্দিন, মনছুর আলম, শামসুল আলম, নুরুল ইসলাম, আবছার, ইয়াকুব প্রমুখ।
জানা গেছে, প্রতিদিন সকাল সাড়ে সাতটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত প্রতি ত্রিশ মিনিট পর পর নগরীর কাপ্তাই রাস্তার মাথা, বহদ্দারহাট, জিইসি, ইপিজেড ও কাটগড় মোড় পর্যন্ত চলাচল করবে এই বাস। প্রথমিকভাবে বহদ্দারহাট, মুরাদপুর, জিইসি, আগ্রাবাদ এবং নগরীর কাপ্তাই রাস্তার মাথা এলাকায় দুটি করে ১০ টি কাউন্টার তৈরি করা হয়েছে। আজ উদ্বোধনের পর প্রাথমিকভাবে কাপ্তাই রাস্তার মাথা থেকে আগ্রাবাদ পর্যন্ত ৫০ টাকা, আগ্রাবাদ থেকে কাঠগড় পর্যন্ত ৫০ টাকা এবং সরাসরি কাঠগড় থেকে কাপ্তাই রাস্তার মাথা পর্যন্ত ১০০ টাকা ভাড়ায় চলাচল করবে এই বাস। তবে পুরোদমে শুরু হলে এই সড়কের প্রতিটি গুরুত্বপ‚র্ণ স্থানে তৈরি হবে কাউন্টার, সর্বনিম্ন ভাড়া রাখা হয়েছে ২০ টাকা।