আজ গণপদযাত্রা ও রাষ্ট্রপতি বরাবর স্মারকলিপি

8

পূর্বদেশ ডেস্ক

সরকারি চাকরির সব গ্রেড থেকে কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের নামে মামলা করার ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে মামলা তুলে নিতে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এ ছাড়া এক দফা কর্মসূচি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে নতুন কর্মসূচি হিসেবে গণপদযাত্রা ও রাষ্ট্রপতি বরাবর স্মারকলিপি দেওয়ার কর্মসূচি ঘোষণা দিয়েছেন তারা। নতুন কর্মসূচিতে সড়ক অবরোধের ‘বাংলা ব্লকেড’ থেকে সরলেও সারাদেশে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে ছাত্র ধর্মঘট অব্যাহত থাকার ঘোষণা এসেছে।
গতকাল বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে সংবাদ সম্মেলন করে নতুন এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের একজন হাসনাত আব্দুল্লাহ।
তিনি বলেন, আগামীকাল (রোববার) আমাদের কর্মসূচি থাকবে, জাতীয় সংসদে জরুরি অধিবেশন ডেকে সরকারি চাকরিতে সকল গ্রেডে কোটার যৌক্তিক সংস্কারের লক্ষ্যে মহামান্য রাষ্ট্রপতি বরারবর স্মারকলিপি প্রদান এবং গণপদযাত্রা। এই গণপদযাত্রায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ রাজধানীর বিভিন্ন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অংশ নেবেন। পাশাপাশি দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা গণপদযাত্রা করে নিজ নিজ জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করবেন।
আন্দোলনকারীদের এক দফা দাবি হল- সকল গ্রেডে সকল প্রকার অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে সংবিধানে উল্লেখিত অনগ্রসর গোষ্ঠীর জন্য কোটাকে ন্যূনতম পর্যায়ে এনে সংসদে আইন পাস করে কোটা পদ্ধতিকে সংশোধন করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, সরকার আন্দোলন দমনের পরিকল্পনা ও প্রস্তুতি নিচ্ছে।
সরকারের উচিত ছিল প্রথম থেকেই শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করা এবং দৃশ্যমান পদক্ষেপের মাধ্যমে কোটা সংস্কার করা। কিন্তু সরকার সেটি না করে আন্দোলনকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, ক্ষমতাসীন ছাত্রসংগঠন দিয়ে দমনের পরিকল্পনা বা প্রস্তুতি গ্রহণ করছে। আমরা বলে দিতে চাই সরকারের এ ধরনের পরিকল্পনা সরকারের জন্যই বুমেরাং হয়ে দাঁড়াবে।
তিনি আরো বলেন, পুলিশ বক্তব্য দিয়ে বলেছে কোনো ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। কিন্তু আজকে (রোববার) হঠাৎ করে অজ্ঞাত মামলা দেওয়া হলো সে বিষয়ে আমরা পুলিশের কাছে জবাবদিহি চাইছি।
ছাত্রসমাজকে এ রকম মামলা-হামলার ভয় দেখিয়ে লাভ হবে? আমরা আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এই মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি। যারা বৃহস্পতিবারের বøকেড কর্মসূচিতে বিভিন্ন জায়গায় হামলার সঙ্গে জড়িত ছিল পুলিশ বাহিনীসহ সরকারদলীয় ছাত্রসংগঠন তাদের আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বিচারের আওতায় আনতে হবে।
সরকারি চাকরিতে কোটার বিরোধিতা করে গত কয়েকদিন থেকে আন্দোলন করে আসছেন শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীরা।
হাই কোর্টের রায়ে মুক্তিযোদ্ধা কোটা পুনর্বহালের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস থেকে শুরু হওয়া বিক্ষোভ ক্রমে ছড়িয়ে যায় অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ কর্মসূচির পাশাপাশি শাহবাগে সড়ক অবরোধ করতে থাকে। কোটাবিরোধী আন্দোলনের এক পর্যায়ে তারা গত সপ্তাহে তারা বাংলা বøকেড কর্মসূচি পালন করে। রোব ও সোমবার সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য ‘বাংলা ব্লকেড’ পালন করে একদিন বিরতি দিয়েছিলেন আন্দোলনকারীরা। পরের দুই দিন আবার সকাল-সন্ধ্যা অবরোধ করে। শুক্রবার নিজেদের ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে।
কোটার বিরোধিতায় চার দফা দাবিতে শুরু হওয়া এ আন্দোলন এখন এক দফায় এসে ঠেকেছে