আজ কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীদের প্রতিনিধি সম্মেলন

10

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে চলমান আন্দোলনের দ্বিতীয় সপ্তাহের শেষ দিকে এসে প্রতিনিধি সম্মেলনের ডাক দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। আজ শনিবার সারা দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়-কলেজ এবং ৬৪ জেলায় একযোগে অনলাইন ও অফলাইনে প্রতিনিধি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। সেই সঙ্গে আজ সন্ধ্যা ৬টার দিকে পরবর্তী কর্মসূচি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনও করবেন তারা। গতকাল শুক্রবার বিকালে শাহবাগে বিক্ষোভ মিছিল ও অবরোধ কর্মসূচি শেষে এই ঘোষণা দেন ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর অন্যতম সমন্বয়ক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু বাকের মজুমদার। খবর বাংলা ট্রিবিউনের
তিনি বলেন, ‘বৃহস্পতিবার অনেক জায়গায় আমাদের সহযোদ্ধাদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। সামনে যদি আমাদের কোনও সহকর্মীর ওপর হামলা হয়, তাহলে এর ফল ভালো হবে না।’ এসময় আন্দোলনকারীদের একদফা আমলে নিয়ে সরকারের প্রতি দ্রুত দাবি মেনে নেওয়ার আহবান জানান তিনি। এর আগে বিকাল ৫টা ২০ মিনিটে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে এসে শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন তারা। প্রায় এক ঘণ্টা অবস্থান শেষে সন্ধ্যা ৬টা ২৫ মিনিটে তারা শাহবাগ মোড় ছেড়ে যান। এরপর যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীদের তুমুল আন্দোলনের মুখে ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে নবম থেকে ১৩তম গ্রেড পর্যন্ত নারী কোটা ১০ শতাংশ, মুক্তিযোদ্ধা কোটা ৩০ শতাংশ এবং জেলা কোটা ১০ শতাংশ বাতিল করে পরিপত্র জারি করে সরকার। ওই পরিপত্রের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২০২১ সালে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান অহিদুল ইসলামসহ সাত জন। আবেদনের চূড়ান্ত শুনানি শেষে গত ৫ জুন হাইকোর্ট মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন। এ বিষয়ে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন। তবে এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ।
গত ৫ জুন হাইকোর্টের এমন রায়ের পর থেকেই কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন দানা বাঁধতে শুরু করে। পরে ১ জুলাই রাষ্ট্রপক্ষের আপিলের রায়ের পর ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর ব্যানারে মাঠে নামেন শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রার্থীরা। একপর্যায়ে গত রবিবার থেকে ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি ঘোষণা করেন আন্দোলনকারীরা। মুহূর্তেই সেই আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে সারা দেশে। মাঝে একদিন বিরতি দিয়ে বৃহস্পতিবার চতুর্থ দিনের মতো এই কর্মসূচি পালন করেন তারা। গতকাল ব্লকেড কর্মসূচি না থাকলেও শাহবাগে ১ ঘণ্টার মতো একইরকম কর্মসূচি পালন করছেন আন্দোলনকারীরা।
গতকাল শুক্রবার বিকালে ৫টা ২০ মিনিটের দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মিছিল নিয়ে এসে শাহবাগ মোড় অবরোধ করে অবস্থান নেন আন্দোলনকারীরা। এর ফলে গত কয়েক দিনের মতো আজও বিভিন্ন গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা হওয়া লোকজন ভোগান্তিতে পড়েন। বাধ্য হয়ে গাড়ি থেকে নেমে হেঁটেই গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা হন যাত্রীরা। এর আগে বিকাল ৪টা থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল ও ডিপার্টমেন্টের ব্যানারে স্লোগান ও মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে জড়ো হতে থাকেন তারা। এসময় তারা কোটা সংস্কারের দাবিতে নানান স্লোগান দিতে থাকেন। এরপর বিকাল ৪টা ৫০ মিনিটে কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে হলপাড়া, ভিসি চত্বর ও রাজু ভাস্কর্য হয়ে শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন তারা।