আজিজকে ‘অত্যন্ত বিচক্ষণ’ বললেন ওবায়দুল কাদের

16

‘কর্তব্য পালনে বিচ্যুতির’ কারণে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের দুই গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত করা হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। বুধবার সন্ধ্যায় ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। খবর বিডিনিউজের
এই সংবাদ সম্মেলনে সাবেক সেনা প্রধান আজিজ আহমেদকে ‘অত্যন্ত বিচক্ষণ’ বলে মন্তব্য করেন সড়কমন্ত্রী। সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের ‘ক্যারিয়ারেরও’ প্রশংসা করেন তিনি। এই মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় এক সাংবাদিক প্রশ্ন রাখেন, বর্তমানে যারা সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে বেনজীর আহমেদের মতো ‘দেখতে ভালো’ মনে করা হচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে খোঁজখবর নিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে কি না।
জবাবে কাদের বলেন, আজকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের দুই গুরুত্বপূর্ণ লোকের চুক্তি বাতিল করেছে। আপনারা সাংবাদিকরা কি রিপোর্ট করেছেন?সেটা এখন পাচ্ছেন। এদিক প্রধানমন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব-২ গাজী হাফিজুর রহমান লিকু ও উপ-প্রেস সচিব হাসান জাহিদ তুষারের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করা হয়। ২০১৯ সালে এই দুই কর্মকর্তা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে নিয়োগ পান। গত ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনের পর আবার তাদেরকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হয়। বুধবার সেই নিয়োগ বাতিল করে আলাদা প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। এসব প্রজ্ঞাপনে কখনো কারণ উল্লেখ করা হয় না, বলা থাকে, জনস্বার্থে এই আদেশ জারি করা হলো। তাহলে এই দুই জনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ছিল কি না- এই প্রশ্নে ওবায়দুল কাদের বলেন, তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির কোনো অভিযোগ আছে কি না, আমি জানি না। নিশ্চয় তাদের কর্তব্যে কোনো প্রকার বিচ্যুতি ঘটেছে দায়িত্ব পালনে। সেখানে কী রকম সেটা আমি তো জানি না।
একজন সাংবাদিক বলেন, বেনজীর ও আজিজ আহমেদের ‘দরকার শেষ’। তাই তাদের বিরুদ্ধে সরকার ব্যবস্থা নিচ্ছে- বিএনপি এমন কথা বলেছে। জবাবে কাদের বলেন, আপনার প্রশ্নটা সঠিক হয়নি। তারা বলছে ‘বেনজীর, আজিজ আহমেদরা আওয়ামী লীগের সৃষ্টি। আমি জানতে চাই, আশরাফুল হুদা, রকিবুল হুদা, কোহিনুর এরা কাদের সৃষ্টি। আমি জানতে চাই, দুর্নীতি লুটপাটের বহর হাওয়া ভবন, এটা কার সৃষ্টি? এই প্রশ্নের জবাব চাই।
বেনজীর আওয়ামী লীগ আমলে আমাদের আইজিপি ছিলেন মন্তব্য করে কাদের বলেন, যার যার ব্যক্তিগত ব্যাপার। আমরা তো একটা প্রতিষ্ঠানকে দায়ী করতে পারি না। ব্যাপারটা (অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ) যখন প্রকাশ্যে এসেছে তখন দুদক তদন্ত করছে। তদন্ত শেষে নিশ্চয়ই মামলা করবে। যে যতটা অপরাধ, অপকর্ম করেছে ততটা শাস্তি পেতে হবে।
বিএনপি আমলে তাদের কোন নেতা, সরকারি কোন কর্মকর্তা, পুলিশের সাবেক কোন কর্মকর্তার বিচার হয়েছিল সেই প্রশ্ন করে আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, ‘ইমপিউনিটির (বিচারহীনতা) কালচার গড়ে তুলেছিল। শেখ হাসিনার সৎ সাহস আছে, সে কারণে তিনি আজকে দুর্নীতির ব্যাপারে জিরো টলারেন্স। যখনই যেটা প্রকাশ পাচ্ছে… সেই করোনার সময় ফেইক হসপিটাল করে যারা অপকর্ম করেছে, তাদের কিন্তু আমাদের নেত্রী ক্ষমা করেননি। আজকেও অপরাধ অনুযায়ী শাস্তি পেতেই হবে, এখানে কোনো ছাড় নেই।
এখানে আওয়ামী লীগের কোরো দায় আছে কি না- এমন প্রশ্নে কাদের বলেন, আমি বেনজীরের কথা বলি, বেনজীরের যে ক্যারিয়ার, তার যে পারসোনালিটি, আপনারা কেউ ভাবেননি এখন যা শোনা যাচ্ছে। আজিজ আহমদ অত্যন্ত বিচক্ষণ অফিসার। খুব পড়াশোনা জানা অফিসার। তার কিছু ডিগ্রি আছে যেটা অন্য সেনা প্রধানদেরও নাকি নেই। এখন আসলে যোগ্যতার জন্যই সেনা প্রধান করা হয়েছে। এখন সে যদি দুর্নীতি করে, তদন্ত হচ্ছে। তারও তদন্ত হবে। দুর্নীতির তথ্য পেলে তারও তদন্ত হবে। কাউকে ছাড় দেয়া হবে না, আমি এটুকু বলতে পারি।
তৃতীয় ধাপের উপজেলা নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতিতে আওয়ামী লীগ ‘মোটামুটি সন্তুষ্ট’ বলে জানিয়েছেন কাদের। আবহাওয়ার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, এখন যে অবস্থা, তাতে আমরা মনে করেছিলাম, ভোটার উপস্থিতি আরো কমে যাবে। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি।