অবিলম্বে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হোক

10

সুশিক্ষা জাতির মেরুদন্ড। কেঁচুর মেরুদন্ড নেই বলে তারা মাটিতে গড়াগড়ি খেয়ে চলে। মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব। অন্যান্য সৃষ্টির সাথে মানুষের প্রধান পার্থক্য হলো মানুষ হবার জন্য মানুষ শিক্ষার আশ্রয় গ্রহণ করে। মানুষ মেধাসমৃদ্ধ জীব বলে অন্যান্য জীবের উপর মানুষের পক্ষে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা সম্ভব। প্রাকৃতিক শিক্ষা, প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় সমৃদ্ধ হয়ে মানুষ সুখি-সমৃদ্ধ জীবনযাপন করতে পারে, যা অন্যকোন জীবের পক্ষে সম্ভব হয় না। যে জাতি শিক্ষার মাধ্যমে বড় মনের অধিকারী হয়, সে জাতি ধনেও বড় হতে পারে। কোন জাতির উন্নতি ও সমৃদ্ধির মূলে পূর্বশর্ত সুশিক্ষা। দেশে ২০২০-২০২১ সালে করোনা ভাইরাস জনিত কারণে শিক্ষার স্বাভাবিক কার্যমক্রম চলেনি। তার রেশ চলেছে আরো দুই বছর। এটা দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার একটা প্রচÐ বিপর্যয় সৃষ্টি করেছিল। যার রেশ কাটতে না কাটতে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ ও কোটা বাতিলের দাবিতে দেশের শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করলে, সে আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এখন বন্ধ। এনিয়ে মুখ খুলেছেন মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী। তিনি ধাপে ধাপে দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলতে চান বলে জানিয়েছেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাত মন্ত্রী, চার সচিব ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমরা আগেও বলেছি- যারা নিরপরাধ শিক্ষার্থী এবং যারা শান্তিপূর্ণভাবে এ আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছে তারা কেউই যাতে কোনো ধরনের প্রশাসনিক হয়রানির শিকার বা আইনি জটিলতায় না পড়ে এ ঘোষণা দিয়েছি। যেসব শিক্ষার্থী বা তাদের অভিভাবক যদি মনে করে তারা নিরপরাধ তারা অবশ্যই সেটা নিয়ে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন। আমরা সরাসরি তাদের সব ধরনের সহযোগিতা দেবো।
তিনি বলেন, আমাদের আজকের (মঙ্গলবার) সভায় আইজিপিও বলেছেন- যেসব শিক্ষার্থীর বিষয়ে অভিযোগ থাকবে সেসব বিষয় তৎক্ষণাৎ ব্যবস্থা নিচ্ছেন তারা। যদি তারা নিরপরাধ থেকে থাকেন। তবে আমরা অভিভাবকদের বারবার বলছি যেখানে তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নেওয়া হচ্ছে সেখানে নির্দিষ্ট আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করে তারা সঠিক তথ্য দেবেন।
শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে আমরা বারবার বলছি জননিরাপত্তা সর্বাগ্রে। জননিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে আমরা সব কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে ধাপে ধাপে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো খুলতে চাই। প্রাথমিক শিক্ষার জন্য আমাদের যে বিদ্যালয়গুলো আছে এবং মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলো আছে সেগুলোও নিরাপত্তা ঝুঁকি নিরূপণের মাধ্যমে নির্ধারণ করা হবে। এ মুহূর্তে আমরা প্রতিদিন নিরাপত্তা ঝুঁকি নিরূপণ করছি। এগুলো বিবেচনায় নিয়েই আমরা যথাসময়ে জানিয়ে দেবো।
অনলাইনে ক্লাসের শুরুর বিষয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ইন্টারনেট যেহেতু সচল হয়েছে সেহেতু আমরা এ বিষয়টি বিবেচনায় নেবো। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্গে ইতোমধ্যে আলোচনা করেছি। বেসরকারি কিছু বিশ্ববিদ্যালয় এ বিষয়ে সম্ভাব্যতা যাচাই করছে। সেটা আমরা যথাসময়ে জানিয়ে দেবো। এইচএসসি পরীক্ষা কখন হবে সেটাও আমরা যথাসময়ে জানিয়ে দেবো। সংবাদ মাধ্যমে আমরা জানতে পারছি বর্তমানে দেশের সবকিছু স্বাভাবিক। স্বাভাবিক অবস্থায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া যায়। দেশে চলমান এইচ এস সি পরীক্ষা মাঝপথে বন্ধ হয়ে গেছে। ছাত্রছাত্রী অভিভাবকসহ সারাদেশের জনগণ এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের নিয়ে উদ্বিগ্ন। দেশের সকল স্তরের শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে এনে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার দায়িত্ব সরকার ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের। শিক্ষাকে ধ্বংস করে দেশের কোন উন্নতি অগ্রগতি সম্ভব নয় মনে করে দেশের সর্বস্তরের মানুষ।