সাবেক খাদ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য কামরুল ইসলামকে রাজধানীর নিউ মার্কেট এলাকায় ব্যবসায়ী ওয়াদুদ হত্যা মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আট দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছে আদালত। পুলিশের রিমান্ড আবেদনের শুনানি করে ঢাকার মহানগর হাকিম জিয়াদুর রহমান গতকাল মঙ্গলবার এ আদেশ দেন।
এর আগে কামরুলকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করে নিউ মার্কেট থানার এসআই জাহাঙ্গীর আরিফ। খবর বিডিনিউজের।
শুনানিতে তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, গত ১৯ জুলাই নীলক্ষেতে ছাত্র জনতার আন্দোলনে পুলিশ গুলি চালায়। সে সময় ব্যবসায়ী আব্দুল ওয়াদুদ গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। ঘটনার সাথে কামরুল ইসলাম সরাসরি জড়িত। আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী এই নেতা ধানমন্ডিসহ আশপাশের এলাকায় সে সময় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেন। তার সরাসরি ইন্ধনে গুলি চালানো হয়। আমি তার ১০ দিনের রিমান্ড প্রার্থনা করছি।
আসামিপক্ষের আইনজীবী মোরশেদ হোসেন শাহিন এ সময় অভিযোগ অস্বীকার করে কামরুলকে নির্দোষ দাবি করেন এবং তার জামিন চান। এর বিরোধিতা করে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী দিদার হোসেন রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন এবং জামিনের বিরোধিতা করেন।
উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত কামরুলকে ৮ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন।
সোমবার রাতে রাজধানীর উত্তরা-১২ নম্বর সেক্টর থেকে কামরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করার কথা জানায় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।
মামলার বিবরণে বলা হয়, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গত ১৯ জুলাই বিকেলে নিউ মার্কেট থানাধীন নীলক্ষেত এলাকায় পুলিশের গুলিতে ব্যবসায়ী আব্দুল ওয়াদুদ মারা যান। ওই ঘটনায় তার শ্যালক আব্দুর রহমান সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ ১৩০ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। কামরুলকেও সেখানে আসামি করা হয়।
ছাত্র জনতার আন্দোলনে সরকার পতনের পর অন্য অনেকের মত সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুলের বিরুদ্ধেও অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানে নামে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক। তার বিরুদ্ধে দুদকে দেওয়া অভিযোগে বলা হয়েছে, নিজ নামে ও সন্তানদের নামে দেশে বিদেশে ‘অঢেল সম্পদ’ গড়েছেন তিনি। আইন প্রতিমন্ত্রী থাকাকালে নিম্ন আদালতে অধিকাংশ কর্মচারীর নিয়োগের ক্ষেত্রে ‘দুর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে’ কোটি কোটি টাকা ঘুষ নিয়েছেন। দুর্নীতির মাধ্যমে ব্রাজিল থেকে ‘নিম্নমানের গম’ কিনে সরকারি কোটি কোটি টাকা ‘আত্মসাৎ’ করেছেন।