পূর্বদেশ ডেস্ক
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মধ্যে রাজধানীর চাঁনখারপুলে ছয়জনকে হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমানসহ ৮ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা।
রোববার তদন্ত সংস্থার পক্ষ থেকে চিফ প্রসিকিউটরের কার্যালয়ে এই তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। খবর বিডিনিউজের।
ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকারের চালানো নিপীড়নকে ‘গণহত্যা’ বিবেচনা করে অন্তর্বর্তী সরকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচারের উদ্যোগ নেওয়ার পর এই প্রথম কোনো মামলায় তদন্ত প্রতিবেদন জমা পড়ল।হাবিবুর রহমান ছাড়াও ডিএমপির সাবেক যুগ্ম কমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী, রমনা জোনের সাবেক এডিসি শাহ আলম মো. আকতারুল ইসলাম ও এসি মো. ইমরুল, শাহবাগ থানার সাবেক পুলিশ পরিদর্শক আরশাদ হোসেন, কনস্টেবল সুজন, ইমাজ হোসেন ও নাসিরুল ইসলামকে এ মামলায় আসামি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে চারজন পলাতক।
চিফ প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম গতকাল সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, তদন্ত শুরুর ১৯৫ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করল তদন্ত সংস্থা।
তদন্তে কী পাওয়া গেছে, সেই তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমানের নির্দেশে মাঠ পর্যায়ে থেকে ওই নির্দেশনা বাস্তবায়ন করে ৬ জনকে হত্যা করেন আসামিরা।
তিনি বলেন, আমরা তদন্ত প্রতিবেদন পেয়েছি। আজ (সোমবার) থেকে আসামিদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ফরমাল চার্জ দাখিলের প্রক্রিয়া শুরু হবে।
প্রধান প্রসিকিউটর বলেন, চাঁনখারপুল এলাকায় জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আরো মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হয়েছে। সেসব ঘটনায় আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা জড়িত রয়েছেন। সেসব অপরাধের তদন্ত চলছে। তদন্ত সম্পন্ন হলেই তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করবে তদন্ত সংস্থা।
যেহেতু ৬ জনকে হত্যার ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদন প্রথমেই সম্পন্ন হয়েছে, সেজন্য এটাই প্রথমে দাখিল করা হয়েছে।
চাঁনখারপুলের মামলায় ৯০ পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদন ছাড়াও দালিলিক তথ্য-প্রমাণ যুক্ত করা হয়েছে। আছে ৭৯ জন সাক্ষীর জবানবন্দি, ১৯টি ভিডিও ক্লিপ, ১১টি পত্রিকার রিপোর্ট, ২টি অডিও কল।
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার পতনের দিন ৫ অগাস্ট চাঁনখারপুল এলাকায় শিক্ষার্থী শহীদ আনাসসহ ৬ জনকে নৃশংসভাবে গুলি করে হত্যা করা হয়।
চিফ প্রসিকিউটর বলেন, এ মামলায় যারা পলাতক আসামি, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিচারের সময় পলাতক থাকলে তাদের বিষয়ে পত্রিকায় ট্রাইব্যুনাল থেকে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে। যদি হাজির না হয়, তাদের অনুপস্থিতিতে বিচার চলবে। তখন তাদের পক্ষে রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী মামলা পরিচালনা করবেন।