৭ মার্চ : ধ্রুপদী ভাষণের পরিপ্রেক্ষিত

27

ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী

মুক্তির মহানায়ক জাতির জনক বঙ্গবন্ধু ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ যে ঐতিহাসিক ভাষণ দিয়েছিলেন; তার মুখ্য উদ্দেশ্য ঘোষিত ছিল শেষ দুটো নির্ভীক-সাহসী-তেজোদীপ্ত উচ্চারণে। ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’ বাঙালির মুক্তি ও স্বাধীনতার ধ্রুপদী ঘোষণার অবিস্মরণীয় এই বজ্রকঠিন ভাষণ ছিল বিশ্বপরিমন্ডলে অদ্বিতীয়। উনিশ মিনিটের ঐতিহাসিক এই ভাষণকে ইউনেস্কো ২০১৭ সালের ৩০ অক্টোবর ধরিত্রীর বিশ্বশ্রেষ্ঠ ভাষণের অন্যতম মর্যাদায় সমাসীন ও বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্যের স্মারকে মহিমান্বিত করেছে। বিপুল সংখ্যক কবি-সাহিত্যিক-বুদ্ধিজীবী-গবেষক-রাজনীতিক বঙ্গবন্ধুর এই ভাষণকে নানা অভিধায় অভিষিক্ত করেছেন। কারো মতে এই ভাষণটি ছিল একজন মহাকবির মহাকাব্য। এই ভাষণকে কেন্দ্র করে বঙ্গবন্ধু ‘রাজনীতির কবি’ হিসেবে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছেন। ফরাসি দার্শনিক আঁদ্রে জিত ৭ মার্চের এই ভাষণ এবং দিনটিকে ধ্রুপদী ভাষণ-দিন আখ্যায়িত করেছেন। ফরাসি বিপ্লবের চিরঞ্জীব অর্জন ছিল বাস্তিল দুর্গ ও চতুর্দশ রাজা লুই’র পতন এবং ফরাসি প্রজাতন্ত্র অভ্যূদয়ের অবিনাশী বিপ্লব। উক্ত বিপ্লবের এই দিনটি ছিল বিশ্বের অতুলনীয় দীপ্যমান একটি ধ্রুপদী দিন। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ ছিল অনুরূপ একটি দিন ও তৌর্যত্রিক ভাষণ।
বরেণ্য সাংবাদিক শ্রদ্ধাভাজন আব্দুল গাফফার চৌধুরী’র ভাষায়, ‘৭ মার্চের এই ভাষণ বিশ্বের রাজনৈতিক সাহিত্যে একটি বিরল ভাষণ। এই ভাষণ ১৬ কোটি বাঙালির হৃদয়ে মুদ্রিত বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষুদ্রাকৃতির মহাকাব্য।’ দেশের জনপ্রিয় কবি নির্মলেন্দু গুন এই ভাষণকে মহাকাব্য এবং ভাষণদাতা বঙ্গবন্ধুকে মহাকবির বিশেষণে ভূষিত করেছেন। তাঁর ‘স্বাধীনতা, এই শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতায় অনবদ্য চরণে লিপিবদ্ধ করেছেন – “কখন আসবে কবি?/ কখন আসবে কবি?/ শত বছরের শত সংগ্রাম শেষে রবীন্দ্রনাথের মতো দৃপ্ত পায়ে হেঁটে/ অতঃপর কবি এসে জনতার মঞ্চে দাঁড়ালেন।/ তখন পলকে দারুণ ঝলকে তরীতে উঠিল জল, ষ বাকি অংশ ৪র্থ পৃষ্ঠায়
হৃদয়ে লাগিল দোলা/ জনসমুদ্রে জাগিল জোয়ার সকল দুয়ার খোলা/ কে রোধে তাঁহার বজ্রকন্ঠ বাণী?/ গণসূর্যের মঞ্চ কাঁপিয়ে কবি শোনালেন তাঁর অমর কবিতাখানি;/ ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম’/ ‘এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’।”
দেশ ও বিশ্ববাসী সম্যক অবগত আছেন; ১৯৭০ এর ৭ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে। নির্বাচনের পর পাকিস্তানের তৎকালীন সামরিক স্বৈরশাসক জেনারেল ইয়াহিয়া খান ’৭১ এর ৩ মার্চ ঢাকায় জাতীয় পরিষদের অধিবেশন আহŸান করেন। পশ্চিম পাকিস্তানের পিপিপি নেতা জেড এ ভূট্টো পাকিস্তান সামরিক চক্রের সাথে কূট আঁতাতের অপকৌশল অবলম্বন করে ঘোষণা দেন ‘গত তেইশ বছর পূর্ব পাকিস্তান দেশ শাসনে ন্যায্য হিস্যা পায়নি, তাই বলে আগামী তেইশ বছর পাকিস্তানের উপর প্রভুত্ব করবে তা হতে পারে না।’ এই ধরণের অপপ্ররোচনায় ১৯৭১ সালের ৩ মার্চ পাকিস্তানের সামরিক প্রেসিডেন্ট জাতীয় পরিষদের অধিবেশন আহবান করেও ১ মার্চ তার পক্ষ থেকে কঠিন বার্তা ঘোষিত হয়। পাকিস্তানের তৎকালীন পরিস্থিতিকে গভীর রাজনৈতিক সঙ্কট উল্লেখ করে পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত জাতীয় পরিষদের অধিবেশন বাতিল করে।
বঙ্গবন্ধু বাঙালি জাতির প্ঞ্জুীভূত ক্ষোভ ধারণ করে সংবাদ সম্মেলনে জনগণের মুক্তির ডাক দিয়ে বলেন, ‘এটি পাকিস্তানি শাসকদের স্বৈরাচারী মনোভাবের বহিঃপ্রকাশ মাত্র। আমরা বাঙালিরা ঘৃণাভরে এই ঘোষণা প্রত্যাখ্যান করলাম এবং ২ মার্চ ঢাকা ও ৩ মার্চ সারাদেশব্যাপী বাংলার সাধারণ মানুষ হরতাল পালন করবে। পরবর্তী দিক নির্দেশনার জন্য আপনারা ৭ মার্চ পর্যন্ত অপেক্ষা করুন।’ বাঙালি জাতির ইতিহাসে প্রথমবারের জন্য স্বাধীনতার ¯েøাগান উচ্চারিত হলো, ‘বীর বাঙালি অস্ত্র ধর, বাংলাদেশ স্বাধীন করো।’ শুরু হলো অসহযোগ আন্দোলন এবং গঠিত হলো স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ। ২রা মার্চ হরতাল, মিছিল ও কারফিউর মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রসংগ্রাম পরিষদের ছাত্র সমাবেশে স্বাধীন বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। একই দিন বঙ্গবন্ধু সন্ধ্যায় প্রেস কনফারেন্সে বারবার ‘বাংলাদেশ’ উচ্চারণ করেন।
হরতাল চলাকালীন সামরিক জান্তার হিংস্র বাহিনীর গুলিতে তেজগাঁও পলিটেকনিক স্কুলের ছাত্র আজিজ মোর্শেদ ও মামুনসহ পঞ্চাশ জনের মতো গুলিবিদ্ধ হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তি হন। সামরিক আইন প্রশাসক ঐদিন এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সন্ধ্যা ৭ টা থেকে সকল ৭ টা পর্যন্ত কারফিউ জারি করে। সন্ধ্যায় সংবাদ সম্মেলনে বঙ্গবন্ধু নিরস্ত্রদের উপর গুলি বর্ষণের তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন এবং পরদিন ৩-৬ মার্চ পর্যন্ত সারাদেশে অর্ধদিবস হরতালের ডাক দেন। ৩ মার্চ পল্টনে ছাত্রলীগ ও শ্রমিক লীগের সভায় প্রধান অতিথির ভাষণে বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘আমি থাকি আর না থাকি, বাংলার স্বাধীকার আন্দোলন যেন থেমে না থাকে। বাঙালির রক্ত যেন বৃথা না যায়। আমি না থাকলে- আমার সহকর্মীরা নেতৃত্ব দিবেন। যে কোন মূল্যে আন্দোলন চালাইয়া যেতে হবে- অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।’ ৪ মার্চ ১৯৭১ গণ বিক্ষোভে এক দফার দাবি অর্থাৎ স্বাধীনতার আকাক্সক্ষায় সামরিক জান্তার সান্ধ্য আইন ভঙ্গ করে হাজার হাজার মানুষ রাজপথে নেমে আসে। ঐদিন খুলনায় বাঙালি অবাঙালিদের মধ্যে সংঘর্ষ হয় এবং লাগাতার হরতালে কার্যত ঢাকাসহ সারাদেশ অচল হয়ে পড়ে।
উল্লেখ্য যে, এ দিন রেডিও পাকিস্তান ঢাকার নাম পরিবর্তন করে ‘ঢাকা বেতার কেন্দ্র’ নামকরণের ঘটনা চলমান আন্দোলনকে বেগবান করে মুক্তির পথে এগিয়ে নিয়ে যায়। ৬ মার্চ জেনারেল ইয়াহিয়া খান বঙ্গবন্ধুকে টেলিফোনে জানান যে, ২৫ মার্চ ঢাকায় জাতীয় পরিষদের অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে। পরিস্থিতির চাপে ভীতসন্ত্রস্ত পূর্ব পাকিস্তানের সামরিক সদর দপ্তর থেকে বঙ্গবন্ধু ও আওয়ামী লীগ নেতাদের এই বার্তা দেওয়া হয় যে, ৭ মার্চ যেন কোনভাবেই স্বাধীনতার ঘোষণা না করা হয়। মেজর সিদ্দিক সালিক রচিত গ্রন্থসূত্রে জানা যায়, ‘পূর্ব পাকিস্তানের জিওসি ৭ মার্চের জনসভার প্রাক্কালে আওয়ামী লীগ নেতাকে স্পষ্ট জানিয়ে দেন, পাকিস্তানের সংহতির বিরুদ্ধে কোনো কথা বলা হলে তা শক্তভাবে মোকাবেলা করা হবে। বাঙালি বিশ্বাসঘাতকদের হত্যার জন্য ট্যাংক, কামান, মেশিনগান সবই প্রস্তুত রাখা হবে। প্রয়োজন হলে ঢাকাকে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেয়া হবে। শাসন করার জন্য কেউ বা শাসিত হওয়ার জন্যও কিছু থাকবে না।’
মূলত: সর্বকালের জনপ্রিয়শীর্ষ গ্রিক মহাকাব্য ‘ইলিয়ট’ ও ‘ওডিসি’ রচনা করে একজন অন্ধ-নি:স্ব-দরিদ্র গায়ক মহাকবি হোমার অদ্যাবদি পৃথিবী নামক এই গ্রহে যেমন সর্বোচ্চ মর্যাদায় অধিষ্ঠিত ও অম্লান রয়েছেন, ৭ মার্চ কালোত্তীর্ণ ভাষণের জন্য একইভাবে বঙ্গবন্ধুও বিশ্ব সভ্যতার ইতিহাসে চির অ¤øান ও চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন। ৩ মার্চ আগের রাতের শহীদদের লাশ নিয়ে মিছিল শেষে পল্টনে অনুষ্ঠিত সভায় বঙ্গবন্ধু ঘোষণা করেন ‘গণতান্ত্রিক নিয়মে প্রণীত এক শাসনতন্ত্র যদি না চান তাহলে আপনারা আপনাদের শাসনতন্ত্র রচনা করুন। বাংলাদেশের শাসনতন্ত্র আমরাই রচনা করব। ………২৩ বছর ধরে রক্ত দিয়ে আসছি। প্রয়োজনে আবার বুকের রক্ত দেব। মৃত্যুর মুখে দাঁডিয়ে বীর শহীদদের রক্তের সঙ্গে বেঈমানি করব না।’ বক্তৃতার শেষ পর্যায়ে তিনি বলেছিলেন- ‘ভায়েরা, আবার আমি বলছি, আমি থাকি আর না থাকি, আমার সহকর্মীরা আছেন। তাঁরাই নেতৃত্ব দেবেন। আর যদি কেউ না থাকে, তবু আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে। বাংলার ঘরে ঘরে প্রতিটি বাঙালিকে নেতা হয়ে নির্ভয়ে আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে’। এভাবেই অনিবার্য পরিণতি হিসেবে বঙ্গবন্ধু ৭ মার্চ তাঁর ভাষণে বাংলাদেশের মুক্তি ও স্বাধীনতার ঘোষণা দেন।
অসহযোগ আন্দোলন চলাকালে দেশের জনগণ যাতে কোন রকম কষ্ট-যন্ত্রণা-বঞ্চনায় নিপতিত না হয় এবং খাদ্য-অর্থ কষ্টে বিপর্যস্ত হয়ে না পড়েন; সে সম্পর্কে সতর্কবাণী উচ্চারণে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘এর পরে যদি বেতন দেওয়া না হয়, আর যদি একটা গুলি চলে, আর যদি আমার লোককে হত্যা করা হয়, তোমাদের উপর আমার অনুরোধ রইল : প্রত্যেক ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোলো। তোমাদের যা কিছু আছে তা নিয়ে শত্রুর মোকাবিলা করতে হবে এবং জীবনের তরে রাস্তাঘাট যা যা আছে সবকিছু, আমি যদি হুকুম দেবার না-ও পারি, তোমরা বন্ধ করে দেবে। সাত কোটি মানুষকে দাবায়ে রাখতে পারবা না। আমরা যখন মরতে শিখেছি, তখন কেউ আমাদের দাবাতে পারবে না।…….. সরকারি কর্মচারীদের বলি; আমি যা বলি তা মানতে হবে। যে পর্যন্ত আমার এ দেশের মুক্তি না হবে খাজনা, ট্যাক্স বন্ধ করে দেওয়া হল। কেউ দেবে না। শোনেন-মনে রাখবেন, শত্রুবাহিনী ঢুকেছে, নিজেদের মধ্যে আত্মকলহ সৃষ্টি করবে, লুটতরাজ করবে। এই বাংলায় হিন্দু-মুসলমান, বাঙালি-নন বেঙলি যারা আছে তারা আমাদের ভাই। তাদের রক্ষার দায়িত্ব আপনাদের উপরে, আমাদের উপরে, আমাদের যেন বদনাম না হয়’।
দেশের অভ্যন্তরে কী অপরিসীম মানবিক প্রচেতায় সম্প্রদায়-অঞ্চল-জাতিগত বিরোধ-বিচ্ছেদ-বিদ্বেষ-সংঘাত-সংঘর্ষকে নস্যাৎ করে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে যুদ্ধজয়ে প্রণোদিত ও অনুপ্রাণিত করার দৃষ্টান্ত বিশ্বে নজিরবিহীন – দৃঢ়চিত্তে তা অবশ্যই বলা যায়। রণকৌশল এবং রণনীতি কি হবে এবং কিভাবে বাঙালি জাতি সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা পালন করবে তাও বঙ্গবন্ধু নির্দেশনা দেন এভাবে – ‘প্রত্যেক গ্রামে, প্রত্যেক মহল্লায়, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে সংগ্রাম পরিষদ গড়ে তোলো এবং তোমাদের যা কিছু আছে তাই নিয়ে প্রস্তুত থাকো। মনে রাখবা, রক্ত যখন দিয়েছি, রক্ত আরো দেব- এদেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়ব, ইনশাল্লাহ। এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম-এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’। বঙ্গবন্ধুর শ্রেষ্ঠত্ব – তিনি শুধু বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের একজন স্বপ্নদ্রষ্টাই ছিলেন না, অনন্যসাধারণ এক ঐক্যের বন্ধনে বাঙালি জাতিকে একতাবদ্ধ করে হাজার বছরের বাঙালি জাতির স্বপ্নকে বাস্তব রূপদানে অপরাজিত ছিলেন।
মহান ¯্রষ্টার অপার কৃপানির্ভর বঙ্গবন্ধুর এই নির্ভীক-সাহসিক ৭ মার্চ স্বাধীনতার ঘোষণা শুধু বঙ্গবন্ধুকে নয়, বাঙালি জাতিকেও বৈশ্বিক স্বাধীনতার ইতিহাসে আকাশচুম্বী গৌরব ও মহিমায় অধিষ্ঠিত করেছে। পরবর্তীকালে প্রমাণিত সত্য যে, এই ভাষণ বিশ্বের সকল জাতির মুক্তি সংগ্রামে অবদান রাখার জন্যে যুগান্তকারী-যুগোপযোগী-আধুনিক-বিজ্ঞানমনস্ক চিন্তা-চেতনার সমারোহে সামষ্টিক প্রণোদনা ঋদ্ধ দিক-নির্দেশনায় পরিপূর্ণ ছিল। অতি সাম্প্রতিক কালে বৈরী মনোভাবের ব্যক্তি ও রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান-দলের পক্ষ থেকে ৭ মার্চকে ধারণ করার বিষয়টি অবশ্যই সর্বজনীন-বিশ্বজনীন পরিগ্রহে রূপান্তরিত হয়েছে। গণতান্ত্রিক আত্মপ্রত্যয়-আত্মনিয়ন্ত্রণ-সার্বিক মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার গ্রহণযোগ্য অমূল্য দলিল হিসেবে এই ভাষণ-নির্যাস সর্বত্রই সমাদৃত ও গ্রহণযোগ্য। নিবন্ধের শেষে বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরতœ শেখ হাসিনার উদ্বৃতি উপস্থাপনে নিবন্ধের ইতি টানছি – ‘জাতির পিতার ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণকে বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য হিসেবে ইউনেস্কোর স্বীকৃতি মুক্তিযুদ্ধের অসাম্প্রদায়িক চেতনা ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধেরই স্বীকৃতি।’
লেখক : শিক্ষাবিদ, সমাজ-অপরাধবিজ্ঞানী, সাবেক উপাচার্য চ.বি