২০১৪ সালে কমিটি বিলুপ্তির ৬ বছর পর গত বহস্পতিবার কর্ণফুলী উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি দেয়া হয়েছে। দলের পরীক্ষিত ও ত্যাগীদের বাছাই করেছেন কর্ণফুলী-আনোয়ারা আসনের এমপি ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জমান চৌধুরী জাবেদ। এরপর ৪১ সদস্য বিশিষ্ট আহব্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। এতে আহব্বায়ক করা হয়েছে সাজ্জাদ সাজিদকে। নতুন করে কমিটি দেয়ার ফলে দীর্ঘ ৬ বছর পর প্রাণ ফিরে পেয়েছে কর্ণফুলী উপজেলা ছাত্রলীগ। প্রকৃত ছাত্রদের হাতে নেতৃত্ব দেয়ার ফলে যোগ্য নেতৃত্বের সৃষ্টি হবে বলে আশা সবার।
৪১ সদস্য বিশিষ্ট ছাত্রলীগের কমিটিতে যুগ্ম আহব্বায়ক করা হয়েছে, মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন, মোহাম্মদ মহসিন, সাঈদ হোসেন রিমন, সাইদুল ইসলাম টুটুল, আলাউদ্দিন আজাদ সোহেল, ইফতেখার হোসেন রনি, মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন, আবদুল আল নোমান ও কফিল উদ্দিনকে। অন্যদের সদস্য করা হয়েছে।
জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি না থাকলেও গত বেশ কয়েক মাস আগে উপজেলা কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়। তখন থেকে কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে নেতাদের কোটার ভিত্তিতে কমিটি গঠন না করার আহব্বান ছিলো ছাত্রলীগের। তাদের দাবি ছিলো স্থানীয় অভিভাবক ও ভ‚মিমন্ত্রী সাইফুজ্জমান চৌধুরী জাবেদের সিলেকশন অথবা গোপন ভোটাটিতে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচিত করা হোক। এর ফলে অনুপ্রবেশকারীর বা
অনভিজ্ঞদের নেতৃত্বে আসার সুযোগ থাকবে না। তাদের দাবি মতই ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জমান চৌধুরী জাবেদ ত্যাগী ও যোগ্যদের খুঁজে নিয়ে কমিটি দিয়েছেন। সকল পক্ষকে এ কমিটিতে রাখা হয়েছে। এর ফলে ছাত্রলীগ কমিটি পাওয়ায় অনুপ্রবেশকারী বা অনভিজ্ঞদের হাতে ছাত্রলীগ নেতৃত্ব হারানোর আশঙ্কা কেটে গেছে।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৪ সালে উপজেলার সবগুলো কমিটি ভেঙে দেয় জেলা ছাত্রলীগ। এরপর ওই বছর জসিম উদ্দিনকে সভাপতি ও জীবন মঞ্জুকে সাধারণ সম্পাদক করে কর্ণফুলী উপজেলার জন্য ৫ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। তিন মাসের মধ্যে কমিটি পূর্ণাঙ্গ করার সময়সীমা বেধে দেয়া হয়। কিন্তু জেলা ছাত্রলীগের আহব্বায়ক জনিকে হত্যার কারণে আর কমিটি পূর্ণাঙ্গ করা সম্ভব হয়নি।
পরবর্তীতে উপজেলা কমিটি বিলুপ্ত করে দেয়ায় নতুন করে কর্ণফুলী উপজেলার কমিটি গঠন করা সম্ভব হয়নি। এ কারণে কর্ণফুলীতে ঝিমিয়ে পড়ে ছাত্রলীগের কর্মকান্ড। সৃষ্টি হয়নি নতুন নেতৃত্ব। গত ২ বছর ধরে উপজেলা ছাত্রলীগের কোন ধরনের কর্মকা্নড ছিলো না। দায়িত্বে না থাকায় দায়িত্ব নিয়ে কেউ সাংগঠনের কর্মকান্ড পরিচালনা করেনি। এরই মাঝে অনেক ছাত্রলীগ নেতার বয়স পার হয়ে গেছে।
কর্ণফুলী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হায়দার আলী রনি জানান, নতুন নেতৃত্ব সৃষ্টি ও সঠিক নেতা নির্বাচনে তৃণমূলের নেতাদের গুরুত্ব দিয়েছেন আমাদের অভিভাবক সাইফুজ্জমান চৌধুরী জাবেদ।
কর্ণফুলী উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান দিদারুল ইসলাম চৌধুরী ও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি সোলাইমান তালুকদার জানান, ছাত্রলীগ করেনি, এমন কেউ কমিটিতে স্থান পায়নি। ভূমিমন্ত্রী যাচাই-বাছাই করে খুঁজে নিয়েছেন ত্যাগী ও যোগ্য ছাত্রলীগ কর্মীদের। এরপর তাদের মধ্যে পদের বন্টন করেন এবং তারা আগামী ৩ মাসের মধ্যে কমিটি পূর্ণাঙ্গ করবেন। কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে ভূমিমন্ত্রী সকলের মতামতকে প্রাধান্য দিয়েছেন। এ কারণে ওই কমিটি নিয়ে কোন হতাশা বা বিরোধ নেই।
বড়উঠান ইউনিয়নের চেয়ারম্যান দিদারুল আলম বলেন, সবদিক থেকেই ভালো একটি কমিটি হয়েছে। মন্ত্রী পরীক্ষিত কর্মীদের হাতে নেতৃত্ব দিয়েছেন। এবার চাঙ্গা হবে ছাত্রলীগ। এর মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব সৃষ্টি হবে।
দক্ষিণ জেলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার ইসলাম আহমদ বলেন, দীর্ঘদিন ধরে নিষ্ক্রিয় ছিলো ছাত্রলীগের কর্মকান্ড। এখন প্রাণ ফিরে পাবে। আমার মত কর্ণফুলী উপজেলা আওয়ামী লীগ ও প্রত্যেক অঙ্গসংগঠনের প্রত্যেক নেতাকর্মী এ কমিটিতে খুশি। এর ফলে সাংগঠনিক তৎপরতা বাড়বে।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফারুক চৌধুরী বলেন, তিন মাসের জন্য এ কমিটি দেয়া হয়েছে। তারা তিন মাসের মধ্যে কমিটি পূর্ণাঙ্গ করে মন্ত্রীর হাতকে শক্তিশালী করবে এবং সুস্থ ধারায় রাজনীতিতে যুক্ত থাকবে আশা করি।