৬৯ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা

3

শহীদুল ইসলাম বাবর, সাতকানিয়া

চলতি মৌসুমে চট্টগ্রামে ৬৯ হাজার ৭০৫হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। যা ২০২৪ সালের তুলনায় ৯০৬ হেক্টর বেশি। ইতিমধ্যে বিভিন্ন উপজেলার কৃষকরা বোরো রোপণ শুরু করেছেন। বোরো রোপণ ও জমি তৈরিতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন কৃষকরা। গত বছরের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ লাখ ৬৬ হাজার ৬৬২ মেট্রিক টন। আর এবার তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৭৬ হাজার ৫৮০.০৯ টন। ২০২৩ সালে চট্টগ্রামে ৬৫ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। বিপরীতে চাষাবাদ হয়েছিল ৬৬ হাজার ৪০৫ হেক্টর জমিতে। এর আগে ২০২২ সালে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ৬২ হাজার ৭৫০ হেক্টর। চাষাবাদ হয়েছে প্রায় ৬৫ হাজার হেক্টর। ২০২১ সালে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫৭ হাজার হেক্টর। সেবার চাষাবাদ হয় ৬২ হাজার ৫১৫ হেক্টর জমিতে। একাধিক উপজেলা সরেজমিন পরিদর্শন ও কৃষি কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে। জেলার বিভিন্ন এলাকায় বর্তমানে বোরো চাষাবাদ নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। অনেকে ট্রাক্টর দিয়ে জমি চাষাবাদের উপযোগী করছেন। অনেকে চারা রোপণ করছেন। কেউ ব্যস্ত আইল বাঁধা নিয়ে। কৃষকরা বলছেন, বোরো আবাদ পুরোটা সেচনির্ভর। সেচের বিষয়টি নিশ্চিত করা গেলেই আবাদ এবং ফলন উভয়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে।
জানা যায়, চলতি বছর মিরসরাইয়ে ১ হাজার ৯১০, সীতাকুন্ড ২৬, ফটিকছড়ি ৮ হাজার ৩৪০, হাটহাজারী ৪ হাজার ৬০০,রাউজান ৫ হাজার ৭৫, রাঙ্গুনিয়া ৯ হাজার ৬৩৫, বোয়ালখালী ১ হাজার ৯১৫, পটিয়া ৪ হাজার ৬০, কর্ণফুলী ২৯০, চন্দনাইশ ৬ হাজার ৬০, আনোয়ারা ৩ হাজার ৪৭০, লোহাগাড়া ৪ হাজার ৩৫০, সাতকানিয়া ৭ হাজার ৩৯৫, বাঁশখালী ১১ হাজার ৯৫৫ ও স›দ্বীপে ১০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। এছাড়াও নগরীর পাঁচলাইশ ৬১০ ও ডবলমুরিংয়ে ৪ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। সাতকানিয়ার কৃষক লোকমান হাকিম বলেন, সেচের অন্যতম উপকরণ ডিজেলের দামও বাড়তি। কৃষি শ্রমিকের মজুরিও অনেক বেশি। সব মিলিয়ে প্রতি কানি জমিতে বোরো আবাদে ১৩-১৪ হাজার টাকার বেশি খরচ হতে পারে। আবার ধান কাটার সময় খরচ হবে আরো চার-পাঁচ হাজার টাকার বেশি। কোনো ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে প্রতি কানি জমিতে বোরো চাষাবাদে ২০ হাজার টাকার মতো খরচ হতে পারে। কিন্তু ধানের দাম সেভাবে পাওয়া যায় না। তাই বোরো চাষাবাদ নিয়ে অনেক কৃষক এখনো সংশয়ে আছেন। তবে চট্টগ্রাম কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, এ মৌসুমে কাঙ্ক্ষিত ফলনের ব্যাপারে আশাবাদী কৃষি বিভাগ। এছাড়া চলতি মৌসুমে বোরো আবাদে উৎসাহ দিতে চট্টগ্রামের কৃষককে প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে দাবি তাদের। সাতকানিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান বলেন, সাতকানিয়াতে এবারে ৭ হাজার হেক্টরেরও বেশি জমিতে বোরো চাষ হচ্ছে। আমরা নিয়মিত মাঠ পরিদর্শণ ও কৃষকদের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিচ্ছি। এবিষয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর চট্টগ্রামের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মোহাম্মদ আব্দুচ ছোবহান বলেন, ‘পুরো দেশে তো আমান ধান প্রধান শষ্য। কিন্তু ফলনের দিক দিয়ে বেশি হচ্ছে বোরো। বোরো চাষাবাদে পানি সেচটা গুরুত্বপূর্ণ। চট্টগ্রামে সেচের সুযোগ-সুবিধাটা একটু কম। সেচ প্রকল্পের মাধ্যমে যদি পানির ব্যবস্থা করা যায়, ¯øুইচ গেইটগুলো যদি সংস্কার করা যায় আর সেচের জন্য যদি নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুতের ব্যবস্থা করা যায় তাহলে ভবিষ্যতে বোরো চাষাবাদ আরো বাড়বে।’