পূর্বদেশ ডেস্ক
প্রবল আন্দোলনের মধ্য দিয়ে ৫ আগস্ট সাড়ে ১৫ বছরের আওয়ামী লীগের সরকার ক্ষমতাচ্যুত হলে দেশের বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা, বাড়িঘর ভাঙচুর, লুট ও অগ্নিসংযোগের তথ্য এলেও সব অস্বীকার করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান। গতকাল রোববার ঢাকার আগারগাঁওয়ে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে দলের এক আয়োজনে তিনি এই দাবি করেন।
জামায়াতের আমির বলেন, আওয়ামী লীগের ‘ফ্যাসিস্ট’ মন্ত্রী বলেছিলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতা থেকে সরে গেলে দুই দিনে পাঁচ লক্ষ আওয়ামী কর্মীকে হত্যা করা হবে।
আমি জিজ্ঞেস করি, এত বড় ‘বিপ্লব’, পরিবর্তনের পর, গণঅভ্যুত্থানের পর পাঁচ লক্ষ লোককে কি হত্যা করা হয়েছে? পাঁচ হাজার? পাঁচশ? পঞ্চাশ? পাঁচ? কিছুই হয়নি।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ দানব হতে পারে, কিন্তু এ দেশের মানুষ মানব। এ মানুষের মধ্যে মানবিক মূল্যবোধ আছে। দায়িত্ববোধ আছে। যারা এই দেশের মানুষকে ভালোবাসে তারা খুন করতে পারে না। খবর বিডিনিউজের।
২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর ঢাকার পল্টনে ১৪ দলের সঙ্গে জামায়াত শিবিরের সংঘর্ষ শুরু করে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রাণহানির ঘটনায় ভুক্তভোগীর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় করছিলেন জামায়াত আমির। বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত এবং বিএনপি, এলডিপি, গণঅধিকার পরিষদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিও সেখানে অতিথি ছিলেন।
শফিকুর বলেন, এত বড় পরিবর্তনের পরে আপনাদের আহবান করেছিলাম, যে আমরা প্রতিশোধের রাজনীতিতে বিশ্বাসী নই। প্রতিহিংসা আমরা ছড়াব না। ওরা ছিল ‘দায়িত্বহীন, বর্বর’। এই জাতি দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেবে। আমরা আহবান জানিয়ে বলেছিলাম, ‘শান্ত থাকুন। ধৈর্য ধরুন। প্রিয় দেশ এবং জাতিকে রক্ষা করুন’।
যারা দেশকে ভালোবাসে না, তারাই খুনি হতে পারে মন্তব্য করে তিনি বলেন, এ দেশ থেকে কোনো দেশপ্রেমিক পালায় না, পালাবে না। কারা পালায় আপনারা জানেন।
আওয়ামী লীগ সরকারে থাকার সময় ‘বিচারিক হত্যা’ ও ‘বিচারবহির্ভূত হত্যা’ করেছে দাবি করে শফিকুর বলেন, দুনিয়ার বিচারটা আমরা দেখতে চাই। এরা যতগুলো মানুষকে খুন করেছে, সবগুলোর ন্যায়বিচার আমরা আদালত থেকে পেতে চাই। আদালতের কাছে আমাদের দাবি স্পষ্ট। আমাদের ওপর যেমনটা ‘জুলুম’ করা হয়েছে, ওদের ওপর সেই জুলুমটা যেন না করা হয়। ওদের যেন ন্যায়বিচার মাধ্যমে ‘আসল’ পাওনাটা বুঝিয়ে দেয়া হয়।
ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, আপনারাই বলতেন, বিচার বিভাগ স্বাধীন। কেউই আইনের ঊর্ধ্বে না। আপনিও (শেখ হাসিনা) তো আইনের ঊর্ধ্বে না। কী অপকর্ম করেছেন, আজকে প্রত্যক্ষ করতে হবে এবং তার স্বাদও গ্রহণ করতে হবে।