নগরীর প্রতি ওয়ার্ডে ১ হাজার হতদরিদ্র পরিবারকে দেওয়া হবে ‘মেয়র হেলথ কার্ড’। যার মাধ্যমে বিনামূল্যে চিকিৎসা গ্রহণ করতে পারবেন কার্ডধারীরা। শীঘ্রই ওয়ার্ড কাউন্সিলরের মাধ্যমে যাচাই-বাছাই করে মোট ৪১ হাজার পরিবারকে দেওয়া হবে এই বিশেষ কার্ড। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) স্বাস্থ্য বিভাগের ৪ বছরের অগ্রগতি সম্পর্কে জানাতে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে মেয়রের পক্ষ থেকে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য এই পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করা হয়।
গতকাল আন্দরকিল্লার চসিক আব্দুস ছত্তার মিলনায়তনে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র আরও বলেন, আমাদের অভিভাবক প্রয়াত মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর আমলে চসিকের স্বাস্থ্য বিভাগের সুনাম দেশের গন্ডি ছাড়িয়েছিল। এর পরের মেয়রের আমলে অবহেলায় তা দুর্নামে পরিণত হয়। আমি সুনাম পুনরুদ্ধারে চেষ্টা করে যাচ্ছি। নগরবাসীর আস্থা আবারও ফিরে আসছে। দিন দিন সেবাগ্রহীতার সংখ্যা বাড়ছে বলে মন্তব্য করেন মেয়র।
মেয়র বলেন, লক্ষাধিক নগরবাসীকে সুলভ বা বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা দিচ্ছে চসিক। দায়িত্ব নেওয়ার ৪ বছর ৩ মাস সময় অতিক্রম করছি আমরা। নগরে ১৪ লাখ ৪০ হাজার দরিদ্র বা হতদরিদ্র মানুষ আছেন। ৩০ টাকা থেকে ফি কমিয়ে ১০ টাকা করেছি চসিক জেনারেল হাসপাতালে। এটা নিয়ে বড় পরিকল্পনা আছে আমার।
চসিকের স্বাস্থ্য বিষয়ক স্থায়ী কমিটির সভাপতি নাজমুল হক ডিউকের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন প্যানেল মেয়র নিছার আহমদ মনজু, কাউন্সিলর হাসান মুরাদ বিপ্লব, শৈবাল দাশ সুমন, চসিকের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সেলিম আকতার চৌধুুরী, স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. আলী প্রমুখ।
ডা. সেলিম আকতার চৌধুরী জানান, চসিক এ পর্যন্ত বিনামূল্যে ৩ হাজার ৩২২ জনের ডেঙ্গু রোগের রক্ত পরীক্ষা করেছে। এর মধ্যে ৩০ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে। তিনি জানান, চসিক স্বাস্থ্য বিভাগে ১ হাজার ৫২ জন কর্মরত রয়েছেন। এর মধ্যে চিকিৎসক ১৩৪ জন, হোমিও চিকিৎসক ২৭ জন, ৮১ জন নার্স, ৮৩ জন ফার্মাসিস্ট, ১২২ জন স্বাস্থ্য সহকারী ও ১০ জন স্বাস্থ্য পরিদর্শক। ৪টি মাতৃসদন হাসপাতালে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে সেবা নিয়েছিলেন ৪৯ হাজার ১২৩ জন ও ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৬৪ হাজার ৫৫৫ জন। স্বাস্থ্যসেবা খাতে ১৩ কোটি টাকা ভর্তুকি দিয়েছে সিটি করপোরেশন।
তিনি আরও জানান, চসিক জেনারেল হাসপাতালে আইসিইউ, সিসিইউ, এইচডিইউ, ডায়ালাইসিস ইউনিট চালু, মেমন মাতৃসদন হাসপাতালে এনআইসিইউ চালু, বস্তির জন্য ডিজিটাল মোবাইল স্বাস্থ্যসেবা ইউনিট, সিনিয়র সিটিজেনদের পুনর্বাসনে ওল্ড এজ হোম প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা রয়েছে। নাজমুল হক ডিউক বলেন, সাড়ে ৮ হাজার হতদরিদ্রকে সেবা দিয়েছি, যাদের মাসিক আয় ৭ হাজার টাকার নিচে। ৫৩টি আরবান সেন্টারে সপ্তাহের ৭ দিন ২৪ ঘণ্টা স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার লক্ষ্যে চসিক কাজ করছে।