আসাদুজ্জামান রিপন
নগরীর কে সি দে রোডের ঐতিহ্যবাহী হোটেল ‘হোটেল সোনালী’ ভোজনরসিকদের কাছে এক পরিচিত নাম। প্রায় ৩৬ বছর ধরে ব্যবসা করে আসা এই হোটেলটি কম টাকায় ভালো মানের ভর্তা এবং দেশিয় খাবারের জন্য অত্যন্ত জনপ্রিয়। হোটেলটিতে রয়েছে প্রতিদিনের খাবারের পাশাপাশি ইফতারে দেশের ঐতিহ্যবাহী খাবারের মেলা আয়োজন। আধুনিকতার ছোঁয়া লাগলেও সোনালী হোটেল তার স্বাদ এবং মান অবিচল রেখে শুধুমাত্র দেশীয় খাবারের ইফতার আয়োজন করেছে।
কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এই বছরেও প্রায় ২০ পদের দেশীয় খাবারের বিশেষ আয়োজন রয়েছে। হালিম, তেহরি, বিরিয়ানি, স্পেশাল ফিরনি, আখনি, জিলাপি, মাটন বিরিয়ানি, চিকেন ফ্রাই এবং অন্যান্য দেশীয় খাবারের সমাহার এই ইফতারের মূল আয়োজন। আমরা চেষ্টা করছি খাবারের মান এবং স্বাদ বজায় রেখে গ্রাহকদের সন্তুষ্টি প্রদান করতে।
গতকাল হোটেল সোনালীতে গিয়ে দেখা যায়, হোটেলের সামনে সামিয়ানা টাঙিয়ে ইফতারের পরসা সাজিয়ে বসেছেন বিক্রয়কর্মীরা। তাদের হাতে গ্লাভস, মাথায় টুপি। বিকেল তিনটার র থেকে ক্রেতাদের বেশ ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, মূলত কম টাকায় ভালো খাবারের জন্য হোটেল সোনালীতে আসা।
তাদের ইফতার আয়োজনে দেখা যায়, আখনি, হালিম, জিলাপি, আলুর চপ, চিকেন বিরিয়ানি, মাটন বিরিয়ানি, চিকেন ফ্রাই, ফিরনি, খেজুর, বেগুনি, পেয়াজু, চমুচা, মরিচ্চা, ছোলাসহ প্রায় ২০ পদের ইফতার আইটেম রয়েছে। দামও বেশ কম। তাদের দাবি, সাধারণত আখনি কোথাও ২০০ টাকার নিচে পাওয়া যায় না। কিন্ত আমরা প্রতি প্লেট ১৫০ টাকায় বিক্রি করি। ১৯৮৭ সালে হোটেলের সুচনালগ্নে আখনি বিক্রি হতো মাত্র ১৫ টাকা।
ইফতারি কিনতে আসা সাইমুন বলেন, এখান থেকে ইফতারি কিনি। তাদের খাবারের স্বাদ অসাধারণ। বিশেষ করে আখনি বেশ সুস্বাদু। প্রায় সময় খেয়ে থাকি। দামও বেশ কম। এত বছর ধরে খাবারের মান বজায় রাখা যা সত্যিই প্রশংসনীয়।
ইফতারি কিনতে আসা দোকান কর্মচারী মিনার বলেন, এখানে খুব কম দামে ভালো ইফতারি পাওয়া যায়। অন্য দোকানে যেটি ১০০ টাকায় পাওয়া যায়, সোনালী হোটেলে তা ৭০ থেকে ৮০ টাকায় কেনা যায়। যা অনেক সাশ্রয়ী। খাবারের মান এবং দাম দুই-ই ভালো। প্রতিদিনই আমি দোকানের জন্য এখান থেকে ইফতারি কিনি।
বাংলাদেশ হোটেল রেস্তোরা মালিক সমিতি চট্টগ্রাম জেলার সাধারণ সম্পাদক ও সোনালী হোটেলের মালিক আব্দুল হান্নান বাবু বলেন, প্রতিবছর ইফতারে ভিন্ন আয়োজন থাকে। এবারও ব্যতিক্রম ঘটেনি। প্রায় ২০ পদের দেশিয় স্বাদের ইফতারির আয়োজন রয়েছে। হালিম, তেহরি, বিরিয়ানি, স্পেশাল ফিরনি সবচেয়ে বেশি চলে। ১৯৮৭ সাল থেকে সুনামের সাথে সেবা দিয়ে আসছি। খাবারের মান আর স্বাদ এক ও অভিন্ন রাখতে কোনো কমতি নেই।
তিনি আরো বলেন, প্রতিটি হোটেল রেস্তোরাঁ প্রায় ১৪ ধরনের লাইসেন্স নেওয়ার পর ব্যবসা পরিচালনা করতে পারে। ইদানিং নামে বেনামে যত্রতত্র ওরশের বিরিয়ানির নামে খাবারের দোকান তৈরি হচ্ছে। যাদের সরকারি কোন লাইসেন্স নেই। যারা ভ্যাট ও ট্যাক্স পরিশোধ করে না। এদের কারণে সাধারণ হোটেল রেস্তোরার মালিকরা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে।