৩০ লাখ টাকার বিদেশি সিগারেট উদ্ধার

1

নজরুল ইসলাম লাভলু, কাপ্তাই

শুল্কবিহীন অবৈধভাবে বিদেশি সিগারেট পাচার করা হচ্ছে কাপ্তাই-চট্টগ্রাম রুট ব্যবহার করে। বিশেষ করে কাপ্তাইয়ের সাথে ঢাকা-চট্টগ্রামের সহজ যোগাযোগের কারণে নিরাপদ রুট হিসেবে এসব সিগারেট পাচার হচ্ছে। রাঙামাটির জুড়াছড়ি-বিলাইছড়ি ও বাঘাইছড়ির ভারতীয় সীমান্ত দিয়ে অবৈধ পন্থায় এসব সিগারেট শুল্ক ফাঁকি দিয়ে নৌপথ ও সড়ক পথ ব্যবহার করে কাপ্তাই-চট্টগ্রাম সড়ক হয়ে বিভিন্ন গন্তব্য পৌঁছানো হয়। কাপ্তাই-ঘাগড়া সড়ক ও কাপ্তাই-চট্টগ্রাম সড়কে পরপর দুইদিনে প্রায় ৩০ লাখ টাকার বিদেশি সিগারেটের বিশাল চালান উদ্ধারের পর এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে আসে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত ১৮ জানুয়ারি অন্তত ১৫ লাখ টাকার সিগারেট আটক করেছে সেনা ও বিজিবির যৌথ বাহিনীর সদস্যরা। শনিবার দুপুরে রাঙামাটির ঘাগড়া-কাপ্তাই সড়কের বগাপাড়া ব্রিজ এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে মালিকবিহীন ৭ বস্তা সিগারেট উদ্ধার করা হয়। এসময় ঘটনাস্থলে কাউকে পাওয়া যায়নি। এর আগে গত ১৭ জানুয়ারি দুপুরে রাঙামাটি থেকে সিএনজি অটোরিক্সা করে কাপ্তাই-চট্টগ্রাম সড়ক হয়ে চট্টগ্রামে পাচারের সময় রাঙ্গুনিয়া থানা পুলিশ ১৫ লাখ ৬৮ হাজার ৯শ’ টাকার বিদেশি একই ব্র্যান্ডের অবৈধ পেট্টোন ও অরিস সিগারেট আটক করেছে। এসময় পাচারকাজে জড়িত দুই ব্যক্তিকে আটক করা হয়। এরা হলেন- লোহাগাড়া উপজেলার পুটিবিলা এলাকার রায় মোহনের পুত্র দীপংকর বড়ুয়া(৪৫) ও লংগদু উপজেলার বগাচত্বর ইউনিয়নের আবুল হোসেনের ছেলে ওমর ফারুক(৩০)।
শনিবার বিদেশি সিগারেট জব্দের ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে রাঙামাটি বিজিবি সেক্টর সদরের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, আমরা সেনা-বিজিবি যৌথ দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করে সিগারেটগুলো উদ্ধার করি। জব্দকৃত বিদেশি সিগারেটগুলোর মধ্যে পেট্টোন ১৬ কার্টুন ও অরিস ৮ কার্টুন।
বিজিবি কর্তৃপক্ষ সূত্রে আরও জানা যায়, জব্দকৃত সিগারেটগুলোর বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় ১৫ লাখ টাকা।
এ ঘটনায় অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে এবং অবৈধ সিগারেটগুলো কাষ্টমসকে বুঝিয়ে দেয়া হবে বলেও জানিয়েছেন বিজিবি কর্তৃপক্ষ।
এদিকে কাপ্তাই-ঘাগড়া ও কাপ্তাই-চট্টগ্রাম সড়কে পরপর দুইদিন এমন বিদেশি সিগারেট পাচার আটকের পর একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানায়, মধ্যরাতে এবং শেষ রাতের দিকে রাঙামাটি শহর থেকে কাপ্তাই হ্রদের তীরবর্তী কয়েকটি স্থানে ইঞ্জিন বোটে করে এসকল অবৈধ সিগারেট এনে নিজেদের হেফাজতে মজুদ করে রাখে চোরাকারবারীরা। পরবর্তীতে সুযোগ বুঝে নানা কৌশলে অটোরিক্সা, পণ্যবাহী ট্রাকে, কাভার্ড ভ্যানে, মাছের গাড়িতে, মৌসুমী ফল, কাঁচামালের গাড়িতে, বিস্কুট ও গুড়ো দুধবাহী গাড়িতে করে এসকল অবৈধ সিগারেট ওইসব সড়ক ব্যবহার করে চট্টগ্রাম সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পাচার করছে চোরাকারবারীরা।
এবিষয়ে কাপ্তাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ মাসুদ জানান, বিদেশি অবৈধ সিগারেট যেন কাপ্তাই হয়ে পাচার হতে না পারে এজন্য সর্বাত্মক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে এবং সহসায় এ ব্যাপারে অভিযান পরিচালনা করা হবে।