২৮ চিকিৎসক-নার্স পেল রেলওয়ে হাসপাতাল

7

নিজস্ব প্রতিবেদক

পাহাড়তলীতে ওয়ার্কশপ ও সিআরবি হাসপাতাল পরিদর্শন করেছিলেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। গত ১১ এপ্রিল উপদেষ্টা এই সফরে এসে চট্টগ্রাম রেলওয়ে হাসপাতালের দ্বার সর্বসাধারণের জন্য চিকিৎসার জন্য উন্মুক্ত করার ঘোষণা দেন। যেই কথা সেই কাজ। এক মাসের মাথায় গত ১১ মে থেকে এই হাসপাতালে রেলওয়ে কর্মচারী ও পোষ্যরা ছাড়াও চিকিৎসা সেবা পাচ্ছেন সর্বসাধারণ। এজন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে ১৯ জন চিকিৎসক ও ৯ জন নার্স পদায়ন করা হয়েছে।
গত ১১ এপ্রিল রেলওয়ে হাসপাতাল পরিদর্শনকালে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেছিলেন,‘রেলওয়ের হাসপাতালগুলো সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হবে। স্থানীয় সিভিল সার্জনসহ বিশেষ কমিটি গঠন করে সেগুলো পরিচালনা করা হবে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে রেলওয়ে সমঝোতা চুক্তি করে চিকিৎসকসহ প্রয়োজনীয় জনবল ও ওষুধ-যন্ত্রপাতি সরবরাহ করে হাসপাতালগুলোতে আধুনিক চিকিৎসা সেবা দেয়া হবে।’
সূত্র জানায়, দীর্ঘসময় ধরে রেলওয়ে কর্তৃক পরিচালনাধীন হাসপাতালসমূহ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ ও রেলওয়ের যৌথ ব্যবস্থাপনায় পরিচালনার উদ্দেশ্যে গত ২১ এপ্রিল উভয়ের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক সই হয়। এই চুক্তির আলোকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় প্রাথমিকভাবে চট্টগ্রাম রেলওয়ে হাসপাতালে সেবা প্রদান শুরু করে। এজন্য চট্টগ্রাম রেলওয়ে হাসপাতালের নাম পরিবর্তন করে রেলওয়ে জেনারেল হাসপাতাল-চট্টগ্রাম রাখা হয়। হাসপাতালে সম্প্রতি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে ১৯ জন চিকিৎসক ও ৯ জন নার্স পদায়ন করেছে। একইসাথে আনুষঙ্গিক চিকিৎসা সরঞ্জাম বৃদ্ধি ও সুবিধা সম্প্রসারণের মাধ্যমে রেল কর্মচারী ও রেল পোষ্যদের পাশাপাশি সর্বসাধারণের জন্য চিকিৎসা সেবা প্রদান শুরু করে। হাসপাতালে বর্তমানে অর্থপেডিক্স, গাইনি এন্ড অবস, মেডিসিন, চর্ম ও যৌন, কার্ডিওলজি, ইএনটি, ডেন্টাল ও সার্জারি সেবা প্রদান করা হচ্ছে। এছাড়াও ল্যাবরেটরি ও রেডিওলজি সেবাও অব্যাহত আছে।
রেলওয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা রেজাউল করিম সিদ্দিকী বলেন, ‘চট্টগ্রামের রেলওয়ে হাসপাতালে এখন থেকে রেলওয়ে কর্মচারী ও পোষ্যদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষ স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণ করতে পারবে। হাসপাতালে বর্তমানে আউটডোর সেবা সবার জন্য উন্মুক্ত রয়েছে এবং ইনডোর সেবাও যাতে দ্রæত পাওয়া যায় সে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।’
এদিকে রেলওয়ে হাসপাতালে সাধারণ মানুষজনকে চিকিৎসা সেবা দেয়ার কারণে যাতে রেলকর্মীরা কোনোরূপ সুবিধা বঞ্চিত না হয় সেজন্য কয়েকটি দাবি তুলে ধরেছে রেলওয়ে শ্রমিক দল। ইতোমধ্যে রেলওয়ে উপদেষ্টা ও রেল সচিবের কাছে এসব দাবি উপস্থাপন করা হয়েছে। তারা বলছেন, রেলওয়ে হাসপাতালে রেলকর্মী, পোষ্য পরিবারের সদস্য ও রেল যাত্রীদের বিরাজমান বিধিবদ্ধ চিকিৎসা সুবিধা বহাল রাখতে হবে। জেনারেল হাসপাতালে বিশেষজ্ঞ ডাক্তার সমেত ফ্রি ডায়েট প্রদান, হাসপাতালে ট্রেড ইউনিটের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা ও রেলভূমিতে রেলওয়ের মালিকানা বজায় রাখতে হবে।
জাতীয়তাবাদী রেলওয়ে শ্রমিক দলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক এড. এম আর মনজু বলেন, ‘সরকার রেলওয়ে হাসপাতালকে জেনারেল হাসপাতালে রূপান্তর করেছে, এটিকে সাধুবাদ জানাই। তবে আমরা চাই রেলওয়ের এই হাসপাতালের মালিকানা রেলের হাতেই থাকুক। পাশাপাশি সাধারণ মানুষের পাশাপাশি পূর্বের ন্যায় রেলওয়ে কর্মী, পোষ্য ও তাদের পরিবার যাতে সুযোগ সুবিধা পায় সেটি নিশ্চিত করতে হবে। এসব বিষয় নিয়ে রেল উপদেষ্টা ও রেল সচিবের সাথে সাক্ষাৎ করেছি। উনারা আমাদেরকে এসব দাবির বিষয়ে আশ^স্ত করেছেন।’