নিজস্ব প্রতিবেদক
চট্টগ্রামে চলমান ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমে ভোটার স্থানান্তর করে ঠিকানা পরিবর্তন করেছে প্রায় ২৫ হাজার ভোটার। সবচেয়ে বেশি ভোটার ঠিকানা পরিবর্তন করেছে সীতাকুন্ডে। দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে আছে আনোয়ারা এবং বাঁশখালী। জেলার এই তিন উপজেলাতেই ৯ হাজার ৮০০ ভোটার ঠিকানা পরিবর্তন করেছেন। বৈবাহিক কারণ, কর্মস্থল ও স্থায়ী ঠিকানার কারণেই ভোটার স্থানান্তর হয়েছে। গত ২০ জানুয়ারি থেকে ভোটার হালনাগাদ কার্যক্রম শুরু হয়। ৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার তথ্য সংগ্রহ করা হয়। ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে নিবন্ধন শুরু হয়। যা শেষ হয় ১২ এপ্রিল।
চট্টগ্রামের সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. বশির আহমদ বলেন, ‘চট্টগ্রামে ভোটার হালনাগাদে তিন লক্ষের অধিক ভোটার নিবন্ধিত হয়েছে। তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন ৯৩ হাজার ভোটার। ভোটার স্থানান্তর করেছেন প্রায় ২৫ হাজার ভোটার। আগামী বছরের মার্চের পরে নাকি আগে ভোট গ্রহণ হবে এর উপর ভাগ্য নির্ধারণ হবে নতুন ভোটারদের। নিবন্ধিত ভোটার, স্থানান্তরিত ভোটাররা ভোটার তালিকায় চূড়ান্তভাবে অন্তর্ভুক্ত হবেন আগামী বছরের ২মার্চ। এদিন ভোটার দিবসে চ‚ড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে।’
নির্বাচন অফিস সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম মহানগরের মধ্যে পাঁচলাইশে ৫০১ জন, চান্দগাঁওয়ে ৩৯২ জন, কোতোয়ালীতে ৮৭৫ জন,ডবলমুরিংয়ে ৮২ জন, পাহাড়তলীতে ৯৫১ জন, বন্দরে ১৮৫ জন, জেলার মিরসরাইয়ে এক হাজার ৫৯৩ জন, সীতাকুন্ডে তিন হাজার ৪৭৬ জন, স›দ্বীপে ৯৫৬ জন, ফটিকছড়িতে দুই হাজার ৭০৫ জন, হাটহাজারীতে ৩৬৫ জন, রাউজানে ২৬৭ জন, রাঙ্গুনিয়ায় ৬১০ জন, বোয়ালখালীতে দুই হাজার ২৭৩ জন, পটিয়ায় ৩৭০ জন, কর্ণফুলীতে ৫০০ জন, আনোয়ারায় তিন হাজার ৩২০ জন, চন্দনাইশে ৭৫৫ জন, সাতকানিয়ায় ৪৫২ জন, লোহাগাড়ায় এক হাজার ১৬৭ জন, বাঁশখালীতে তিন হাজার ৪ জন ভোটার স্থানান্তরিত হয়েছেন। চট্টগ্রামে মোট নিবন্ধিত ভোটার তিন লক্ষ চার হাজার ২৮৩ জন। এরমধ্যে ১৮ বা তদুর্ধ্ব বয়সের এক লক্ষ ৮৭ হাজার ৮৪০ জন, বয়স ১৮ বা এর নিচে ৬৪ হাজার ৪৪৩ জন। ভোটার তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন ৯৩ হাজার ৮৩৭ জন।
এত বেশি ভোটার স্থানান্তরের কারণ হিসেবে ইসি কর্মকর্তারা বলছেন, আগে ভোটাররা নিজেদের মতো করেই যখন তখন ভোটার স্থানান্তর করতো। ডাটাবেজে বর্তমান ঠিকানা ও ভোটার ঠিকানা ফিল্ড একটা হওযার কারণে কোনো ব্যক্তির দাপ্তরিক প্রয়োজন ঠিকানা পরিবর্তন করতে হলে বাধ্য হয়ে তাকে ভোটার স্থানান্তর করতে হয়। আবার নির্বাচনের আগে আগে এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায় স্থানান্তরের চাপ বেড়ে যায়। যে কারণে ভোটের সময় ভোটার স্থানান্তর বন্ধ রাখতে বাধ্য হয় ইসি। তবে নতুন নিয়মে ভোটার ঠিকানা নয়, ভোটার এলাকা থাকবে। বর্তমানে জাতীয় পরিচয় পত্রের বর্তমান ঠিকানাই বর্তমান ভোটার এলাকা হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। এতে কোনো কারণে বর্তমান ঠিকানা পরিবর্তন হলে ভোটার এলাকাও পরিবর্তন হয়ে যায়। যে কারণে অনেকেই নিজের এলাকার জনপ্রতিনিধি নির্বাচনের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হন। যে কারণে এনআইডি থেকে ভোটার এলাকা আলাদা করা হবে। এসব কারণেই এবার ভোটার স্থানান্তর বেড়েছে। ভোটার এলাকা নির্ধারণ করতে অনেকেই স্থায়ী ঠিকানা, বৈবাহিক কারণে ভোটার স্থানান্তর করেছে।