করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে আজ থেকে শুরু হচ্ছে সর্বাত্মাক লকডাউন। এ পরিস্থিতিতেও দেশের প্রধান বন্দরের ৯২ ভাগ আমদানি-রপ্তানির অপারেশনাল কার্যক্রম নির্বিঘ্ন রাখতে ২৪ ঘণ্টা সচল থাকবে চট্টগ্রাম বন্দর। শুল্কায়নের জন্য খোলা থাকবে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস এবং বাণিজ্যিক লেনদেনে খোলা থাকবে বন্দর-কাস্টমসের ব্যাংক শাখাগুলো।
এ লক্ষ্যে গত সামবার চট্টগ্রাম বন্দরের পরিচালক (প্রশাসন) মো. মামুনুর রশীদ স্বাক্ষরিত একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। চিঠিতে বন্দরের কার্যক্রম সচল রাখতে সকল বিভাগসহ বন্দর সংশ্লিষ্ট অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের জন্য ২১ ধরনের নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। আজ (১৪ এপ্রিল) ভোর ৬ টা থেকে ২১ এপ্রিল মধ্যরাত পর্যন্ত এসব নির্দেশনা বহাল থাকবে বলে জানানো হয়।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, দেশের করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি কারণে জরুরি পরিষেবা বিবেচনায় চট্টগ্রাম বন্দরের আমদানি-রপ্তানি সংক্রান্ত অপারেশনাল কার্যক্রম ২৪ ঘণ্টা (২৪/৭) চালু থাকবে। চট্টগ্রাম বন্দরের নৌ বিভাগ বন্দরে আগত জাহাজের জন্য পাইলটিং সার্ভিস যথারীতি চালু থাকবে। তবে ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অর্গানাইজেশন (আইএমও) এবং ডবিøওএইচও ঘোষিত পদ্ধতি অনুসারে জাহাজের নাবিকদের কোয়ারেন্টিনের ব্যবস্থা গ্রহণ করে বার্থিং প্রদান করবে। বন্দরে আগত জাহাজসমূহে পণ্যের ওঠানামার সমস্ত কার্যক্রম ২৪ ঘণ্টা সম্পাদন এবং ন্যূনতম জনবল দিয়ে কাস্টম বিভাগ কর্তৃক প্রদত্ত ক্লিয়ারেন্সের পর দ্রুততার সাথে পণ্য ডেলিভারির ব্যবস্থা করবে বন্দরের পরিবহন বিভাগ। এছাড়া বন্দর হাসপাতালের সেবা কার্যক্রম, যান্ত্রিক বিভাগের যন্ত্রপাতি সার্বক্ষণিক সচল, বিদ্যুৎ বিভাগ, বন্দরের ফায়ার সার্ভিস টিম, সিস্টেম এনালিস্ট, পুরকৌশল বিভাগ শতভাগ সচল থাকবে।
নির্দেশনায় আরও বলা হয়, চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ডেলিভারি কার্যক্রম ত্বরান্বিত করার জন্য পরিবহন বিভাগ, শিপিং এজেন্টস, বার্থ অপারেটর, টার্মিনাল অপারেটর, শিপ হ্যান্ডেলিং অপারেটর, অন্যান্য বন্দর ব্যবহারকারী কাস্টমস বিভাগকে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করবে। বন্দরের অভ্যন্তরে ওয়ান স্টপ সার্ভিসসমূহে স্থাপিত বিভিন্ন ব্যাংকের বুথ নূন্যতম জনবল দিয়ে খোলা রাখার ব্যবস্থা নিতে হবে। সেই সাথে বন্দরের কার্যক্রম ২৪ ঘণ্টা সচল রাখতে বন্দরের কার্যক্রমের সাথে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান বেসরকারি আইসিডি, শিপিং এজেন্টস, ফ্রেইট ফরোয়ার্ডারস, সিএন্ডএফ এজেন্টসসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিজস্ব কর্মস্থলে যাতায়াতে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করার জন্য সংশ্লিষ্ট সকল আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে অনুরোধ জানানো হয়। এছাড়া বন্দরের বিভাগীয় প্রধান জরুরি বিষয়ে ই ফাইলিংয়ের মাধ্যমে দাপ্তরিক কাজ সম্পাদন, ই-মেইল ও টেলিফোনের মাধ্যমে যোগাযোগ রক্ষা, নূন্যতম প্রয়োজনীয় সংখ্যক কর্মচারী উপস্থিত রাখা এবং কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীর করোনা সন্দেহে স্যাম্পল টেস্ট করতে দিলে নেগেটিভ রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত অফিসে উপস্থিত থাকা হতে বিরত থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়।
চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব মো. ওমর ফারুক বলেন, সরকার ঘোষিত লকডাউনে বন্দরের কার্যক্রম ২৪ ঘণ্টা সচল থাকবে। এ জন্য বন্দর সংশ্লিষ্ট সকল প্রতিষ্ঠানকে তাদের কার্যক্রম চালু রাখতে আহব্বান জানোনো হয়েছে।
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের ডেপুটি কমিশনার (প্রশাসন) সুলতান মাহমুদ বলেন, লকডাউনের সময়ে চট্টগ্রাম বন্দরের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে শুল্কায়ন নির্বিঘœ রাখতে কাস্টমসে স্বাভাবিক সময়ের মতো কার্যক্রম বহাল থাকবে।