শীতকাল মানেই নানা পদের সবজির সমাহার। বাজারে বর্তমানে সবজির সরবরাহ যথেষ্ট। মনকাড়া সব সবজি মিললেও দামটা সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। শীতকালীন সবজির আলাদা কদর থাকলেও দামের কারণে অনেকের পক্ষে সবজি কেনাও সম্ভব হয় না। এসব চিন্তা করে ভর মৌসুমে নিম্ন আয়ের মানুষের মাঝে সতেজ সবজি পৌঁছে দেওয়ার ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছেন শুলকবহর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. মোরশেদ আলম। নিজ ওয়ার্ডবাসীর জন্য মাত্র দশ টাকা কেজি দরে ৫টি পদের কেনার সুযোগ করে দিচ্ছেন তিনি।
পুষ্টিগুণে ভরপুর শীতকালীন সবজি শরীর সুরক্ষার জন্য খুবই দরকারি। দাম বেশি হওয়ার কারণে অনেকের ইচ্ছে থাকলেও এই শীতে পরিমিত সবজি খেতে পারেন না। অথচ এই শীতের সময়ে প্রচুর পরিমাণে সবজি খাওয়ার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররা। শীত মৌসুমজুড়ে শরীর সুস্থ রাখতে নিজ এলাকার জনগণকে বেশি করে সবজি খাওয়ার সুযোগ করে দিয়েছেন শুলকবহর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোরশেদ আলম। ফুলকপি, বাধাকপি, টমেটো, শিম ও মুলা প্রাথমিকভাবে এই পাঁচটি সবজি বিক্রি করা হচ্ছে কেজিপ্রতি দশ টাকা করে। সীতাকুÐ থেকে তাজা সবজি পাইকারি দরে কিনে এনে ভর্তুকি মূল্যে শুলকবহর এলাকায় বিক্রি করা হচ্ছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে শুলকবহর ওয়ার্ডের তিনটি পয়েন্টে ট্রাকের মাধ্যমে বিক্রি করা হচ্ছে এসব সবজি। একজন ক্রেতা একদিনে সর্বোচ্চ পাঁচ কেজি সবজি কিনতে পারবেন।
এ ব্যাপারে ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. মোরশেদ আলম পূর্বদেশকে বলেন, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন এলাকার মধ্যে সবচেয়ে বড় ওয়ার্ড শুলকবহর। সমাজের উঁচু শ্রেণি থেকে নিম্ন শ্রেণির সব মানুষের বসবাস এখানে। এই ওয়ার্ডের প্রতিটি মানুষের সাথে আমার আত্মার সম্পর্ক। ওয়ার্ডের নিম্ন আয়ের মানুষের কথা চিন্তা করে ভর্তুকি মূল্যে সবজি বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছি। শীত মৌসুম পুরোটাই এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। শরীর ফিট রাখতে এই শীতে প্রত্যেকের বেশি করে সবজি খাওয়া উচিত। আশা করি, ওয়ার্ডবাসী স্বল্পমূল্যে তাজা সবজি খাওয়ার সুযোগ গ্রহণ করবেন।
বাজারে বর্তমানে বাঁধাকপি বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ২০ থেকে ২৫ টাকা, ফুলকপি ২৫ থেকে ৩০ টাকা, টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা, শিম ৩০ থেকে ৪০ টাকা ও মুলা ১৫ থেকে ২০ টাকায়। ভর্তুকি মূল্যে এসব সবজি শুলকবহর ওয়ার্ডে বিক্রি হবে মাত্র ১০ টাকা কেজি দরে। সীতাকুন্ডের বিভিন্ন কৃষকের কাছ থেকে পাইকারি দরে সবজি কিনে ভর্তুকি মূল্যে সরাসরি ভোক্তার নিকট বিক্রি করা হবে।
মোরশেদ আলম বলেন, সীতাকুন্ডের কয়েকজন কৃষকের সাথে কথা হয়েছে। ওনারা পাইকারি দরে প্রতিদিন তরতজা সবজি সরবরাহ করবেন। সবজিগুলো পাইকারি দরে ১২ থেকে ২৫ টাকার মধ্যে কেনা হবে। ওয়ার্ডবাসীর কাছে এসব পণ্য প্রতিকেজি দশ টাকা করে বিক্রি করা হবে।
কাউন্সিলর মোর্শেদ শুধু ভর্তুকি মূল্যে সবজি বিক্রি নয়, সমাজের নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য ন্যায্যমূল্যে (চাল, ডাল, তেল, আটা, ময়দা, চিনি, চা পাতা, দুধ) পণ্য বিক্রিও অব্যাহত রেখেছেন কাউন্সিলর মোরশেদ আলম। ট্রাকে করে সপ্তাহের ৬ দিন শুলকবহরের বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি করা হচ্ছে ন্যায্যমূল্যের এসব পণ্য। ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের জন্য এমন ব্যতিক্রমী আরো কিছু করার প্রত্যয় এই কাউন্সিলরের।
মোরশেদ আলম বলেন, দীর্ঘ ৬ মাসেরও বেশি সময় ধরে ওয়ার্ডের বিভিন্ন এলাকায় ন্যায্যমূল্যে পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে। ওয়ার্ডবাসীর প্রতিটি মুহূর্তে কাছে থাকার জন্য আমি সবসময় সচেষ্ট থাকি। এর অংশ হিসেবে শীত মৌসুমজুড়ে সবজি বিক্রির চিন্তাটি মাথায় আসে। ওয়ার্ডবাসী যদি আমার কার্যক্রমে উপকৃত হন, তাহলেই আমি নিজেকে ধন্য মনে করবো।