নিজস্ব প্রতিবেদক
চট্টগ্রামের আকবরশাহ এলাকায় ১০টি পাহাড়ের প্রায় ১৮ হাজার ঘনফুট পাহাড় কেটে সাবাড় করে ফেলা হয়েছে। ব্যাপক আকারে পাহাড় কাটায় পরিবেশ বিপর্যয় ও জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়েছে। এসব পাহাড় কাটায় জড়িত থাকার দায়ে ৩৯ জনের বিরুদ্ধে চারটি মামলা করেছে পরিবেশ অধিদপ্তর।
গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রামের রিসার্চ অফিসার মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দিনের নেতৃত্বে তিন দিনের পরিদর্শন ও তদন্ত শেষে আকবরশাহ থানায় মামলাগুলো দায়ের করা হয়। মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন তিনি।
মামলার সূত্রে জানা গেছে, সাগরিকা প্রিন্টার্স নামক প্রতিষ্ঠানের মালিক মো. আমজাদ হোসেন, জঙ্গল লতিফপুর মালিক কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক আকতার (৫০), জামাল উদ্দিনসহ (৪০) আরও কয়েকজনের চারটি সিন্ডিকেটের নেতৃত্বে আকরবশাহ এলাকায় অবৈধভাবে পাহাড় কাটা হচ্ছিল। এতে মারাত্মক হুমকির মুখে পড়েছে ওই এলাকার পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য। তারা পাহাড়ের বিশাল অংশ কেটে ভবন, মুরগির খামার, দোকান, প্লট নির্মাণ করে ব্যবসা চালিয়ে আসছিল।
প্রথম মামলার আসামি সাগরিকা প্রিন্টার্স’র মালিক মো. আমজাদ হোসেন ৯১ নম্বর বিএস দাগে ৮ হাজার ঘনফুট পাহাড় কেটেছে বলে বলা হয়। আমজাদ ছাড়াও স্থানীয় মাহফুজ (৫০), আবু বকর সিদ্দিকীর ছেলে আকবরশাহ থানার তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী ডাকাত মহিউদ্দিন (২৮), তার ভাই মো. জামাল উদ্দিন (৪০), মাসুম (২৫), নূর উদ্দিন (৩৫), স্থানীয় জঙ্গল লতিফপুর মালিক কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক আকতার (৫০), কন্ট্রাক্টর আজিজ (৫০), জাকির (৪০), সিফাত (২০), নিজাম (৪৫), লাল দুলালসহ (৪০) আরও ৯ জনকে মামলায় আসামি করা হয়।
দ্বিতীয় মামলায় একই এলাকায় বিএস প্যাকেজিং লি. নামক কারখানার বিপরীত পাশে একই দাগের স্থানীয় একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান জাহাঙ্গীর আলম (৪৮), বদরুল ইসলাম (৬৫), জঙ্গল লতিফপুর সমাজ কল্যাণ পরিষদের সভাপতি ও আবু বক্কর সিদ্দিকের ছেলে মো. জামাল উদ্দিন (৪০) সাধারণ সম্পাদক আকতার হোসেন (৫০), মহিউদ্দিন (২৮), নূর উদ্দিন (৩৫), মাসুম (২৫), জাকির (৪০), সিফাত (২০), নিজামসহ (৪৫) মোট ১১ জনকে আসামি করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে ৪০ ফুট উঁচু একটি পাহাড় কেটে ৮ হাজার ঘনফুট মাটি অপসারণের অভিযোগ আনা হয়েছে।
এছাড়া তৃতীয় মামলায় আসামি করা হয়েছে ১০ জনকে। তাদের বিরুদ্ধে ২ হাজার ঘনফুট মাটি অপসারণ এবং চতুর্থ মামলায় ৩০ ফুট উঁচু একটি পাহাড় কেটে সাড়ে চার হাজার ঘনফুট মাটি অপসারণের অভিযোগ আনা হয়েছে।
পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রামের রিসার্চ অফিসার মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দিন বলেন, অবৈধ পাহাড় কাটার খবর পাওয়ার পর একটি প্রতিনিধি দল শনিবার থেকে সোমবার পর্যন্ত আকবরশাহ এলাকা পরিদর্শন করেছে। পরিদর্শনকালে জঙ্গল লতিফপুর মৌজার মীর আউলিয়া মাজার সড়কে পাহাড় কাটার প্রমাণ পাওয়া গেছে। ওই এলাকায় ব্যাপক আকারে পাহাড় কাটায় পরিবেশ বিপর্যয় ঘটেছে। আমরা আরও কিছু খবর পেয়েছি। পর্যায়ক্রমে জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে।