হাটহাজারী প্রতিনিধি
চারদিকে হায়েনার দল, আমরা এদেশে আলো জ্বালাতে চাচ্ছি-এমনটা দাবি করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসাইন বলেছেন, বিগত ১৫ বছর এদেশের আলেম-ওলামারা জেলে ছিলেন। হেফাজত ইসলামের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে বছরের পর বছর তারা জেলে বন্দি করে রেখেছিলেন। আমরা ক্ষমতায় থাকতে হেফাজত নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় থাকা সমস্ত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে।
গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে আল-আমিন সংস্থার উদ্যোগে হাটহাজারী পার্বতী মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ময়দানে অনুষ্ঠিত তিন দিনব্যাপী তাফসীরুল কুরআন মাহফিলের সমাপনী দিবসে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আমরা ক্ষমতায় থাকতে আসিনি জানিয়ে ধর্ম উপদেষ্টা ড. খালিদ হোসাইন আরও বলেন, আমাদের সময় বেশি নেই, আমরা এখন নির্বাচনের দিকে যাচ্ছি। নির্বাচনে দেশের জনগণ যাদের নির্বাচিত করবে তাদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে আমরা বিদায় নিব। আমরা মূলত যারা নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ নির্বাচনে জয়লাভ করে ক্ষমতায় আসবে তাদের পথ সুগম করতে এসেছি। এ সময় তিনি বলেন, আমাদের আলেম-ওলামাদের খেদমত করা এবং তাদের পাশে দাঁড়ানো দরকার। তারা আছেন বলে এখনও ওই দেশে মিনার থেকে আযানের ধ্বনি শোনা যায়। আলেম-ওলামারা আছেন বলেই আমাদের মুখে দাড়ি গজায়, মাথায় টুপি আছে। নয়তো কবেই এগুলো ইতিহাস থেকে মুছে যেত। তারা তাদের শ্রম দিয়ে, রক্ত দিয়ে কোরআনের খেদমত করে যাচ্ছেন।
উক্ত তাফসীরুল কুরআন মাহফিলে সভাপতিত্ব করে যথাক্রমে আল্লামা মুফতি জসীম উদ্দিন, মাওলানা মাহমুদুল হাসান ফতেপুরী, মাওলানা মীর কাসেম ও মাওলানা সোলায়মান।
মাহফিলে শুভেচ্ছা বক্তব্যে সাবেক মন্ত্রী ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, এদেশে আমরা সবাই এত বিভক্ত ছিলাম বলেই ফ্যাসিবাদ এত দীর্ঘায়িত হয়েছে এবং ইসলামবিদ্বেষী একটি শক্তি এত দীর্ঘদিন বাংলাদেশের শাসন করেছে। যদি আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকতাম তাহলে আমাকে গুমের শিকার হতে হত না, শাপলা চত্বর সৃষ্টি হত না, বাংলাদেশে এত মুসলমানের রক্তে রঞ্জিত হতে হত না।
মাহফিলে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক (চট্টগ্রাম বিভাগ) ব্যারিস্টার মীর মো. হেলাল উদ্দিন বলেন, দ্বীনের সেবা করতে গিয়ে আল-আমিন সংস্থাকে বিগত সময়ে যথেষ্ট কষ্ট এবং অনেক বাধা-বিপত্তির সম্মুখীন হতে হয়েছে। তবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল ও আমাদের নেতা দেশনায়ক তারেক রহমান নিশ্চিত করবেন যাতে আমরা দ্বীন এবং দ্বীনের প্রচার শান্তিপূর্ণ ও স্বাধীনভাবে করতে কাজ করতে পারি।
মুহাম্মাদ আহসান উল্লাহ, মাওলানা মাহমুদুল হোসাইন ও মাওলানা রিজওয়ান আরমানের সঞ্চালনায় মাহফিলে তাফসীর পেশ করেন আল্লামা মুফতি রশীদুর রহমান ফারুক, আল্লামা নুরুল ইসলাম ওলীপুরী, মুফতি মুস্তাকুন্নবী কাসেমী, মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ আইয়বী, মুফতি সাখাওয়াত হোসাইন রাজী, মুফতি রাফি বিন মুনির, মুফতি সিরাজুল্লাহ মাদানী, মুফতি সোলাইমান এবং মাওলানা ইসমাইল খান।
মাহফিলে আর্তমানবতার সেবায় বিশেষ অবদান রাখায় আল-মানাহিল ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনকে আল-আমিন সংস্থার পক্ষ থেকে বিশেষ সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।