‘হেফাজত কারও প্রক্সি হিসেবে ব্যবহৃত হয়নি’

1

হাটহাজারী প্রতিনিধি

অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের এক ফেসবুক পোস্টে ২০১৩ সালে হেফাজতকে একটি ইসলামী রাজনৈতিক দলের ‘প্রক্সি’ হিসেবে ব্যবহার করার দাবি করা হয়েছে। এমন দাবিকে মনগড়া ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত উল্লেখ করে এক বিবৃতিতে নিন্দা জানিয়েছে হেফাজতে ইসলামের নায়েবে আমির মাওলানা মহিঊদ্দিন রব্বানী।
গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় সংবাদমাধ্যমে সংগঠনটির যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী প্রেরিত এক বিবৃতিতে নায়েবে আমির এই নিন্দা জানিয়েছেন।
এতে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শাপলা চত্বরের অনুপ্রেরণায় প্রায় ৭৭ জনেরও বেশি মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থী শহীদ হন বলে তিনি দাবি করা হয়।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে এমন দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্য কাম্য নয়। হেফাজত কখনও কারো ‘প্রক্সি’ হিসেবে ব্যবহৃত হয়নি। হাজী শরীয়তুল্লাহ ও শহীদ তিতুমীর এই পূর্ব বাংলায় ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদ ও ব্রাহ্মণ্যবাদী জমিদারগিরির বিরুদ্ধে প্রান্তিক গণমানুষের ধর্মীয় স্বাধীনতা, রাজনৈতিক অধিকার ও অর্থনৈতিক স্বার্থ রক্ষার লড়াইয়ের যে পথ দেখিয়েছিলেন, সেটারই উত্তরসূরী শাপলার চেতনা। বিপরীতে ন্যায়বিচার ধ্বংস করে ফাঁসির দাবিতে জালিম ব্রাহ্মণ্যবাদী জমিদার শ্রেণির প্রেতাত্মা হয়ে আবির্ভূত হয়েছিল শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চ।
তিনি আরও বলেন, ১৩ সালে আধিপত্যবাদী দিল্লির পৃষ্ঠপোষকতায় রাষ্ট্রীয় মদদে ইসলাম নির্মূলের বাসনায় মেতে উঠেছিল শাহবাগী ফ্যাসিবাদ। তারই প্রতিবাদে শাপলা চত্বরে হেফাজত গিয়েছিল গণজাগরণ মঞ্চের সঙ্গে জড়িত একদল নাস্তিক-মুরতাদের বিচারের ন্যায্য দাবি নিয়ে, যারা রাসূলের (সা.) শানে কটূক্তি ও বেয়াদবি করেছিল। তৎকালীন আওয়ামী ফ্যাসিষ্ট সরকার হেফাজতের দাবি-দাওয়া তোয়াক্কা না করে উল্টো গণহত্যা চালায়। সেই গণহত্যার সমর্থন যুগিয়েছিল শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চ। বিচারিক হত্যাকাÐ ও গণহত্যার উস্কানিদাতা শাহবাগীরা ইতিহাসে অপরাধী হিসেবে স্বীকৃত। আজকে যারা ইতিহাস বিকৃত করবে এবং শাহবাগীদের তোষণ করবে, তারা কায়েমি স্বার্থান্বেষী হিসেবে চিহ্নিত হবে।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শাপলা চত্বরের অনুপ্রেরণায় প্রায় ৭৭ জনেরও বেশি মাদরাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থী শহীদ হন, এমন দাবি করে তিনি বলেন, শাহবাগীরা সবসময় ছিল বাংলাদেশের স্বার্থবিরোধী; পক্ষান্তরে শাপলার চেতনা বাংলাদেশপন্থী। শাহবাগী নাস্তিক-মুরতাদরা সবসময় আধিপত্যবাদী দিল্লির এজেন্ট এবং আওয়ামী ফ্যাসিবাদ কায়েমের বরকন্দাজ হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। এখনও তারা দেশের আলেম-ওলামা, তৌহিদি জনতা ও ইসলামের বিরুদ্ধে সব ধরনের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। শাহবাগীরা এখন প্রতিবিপ্লবের কোন ষড়যন্ত্র করলে তা ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দেওয়া হবে।