লেবাননের রাজনৈতিক ও সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর প্রধান নির্বাচিত হয়েছেন শেখ নাইম কাসেম। তিনি গোষ্ঠীটির সহকারী মহাসচিব হিসেবে দায়িত্বপালন করে আসছিলেন। কাসেম ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে ইরান সমর্থিত গোষ্ঠীটির একজন শীর্ষ নেতা।
গতকাল মঙ্গলবার এক লিখিত বিবৃতিতে হিজবুল্লাহ জানায়, মহাসচিব বেছে নেওয়ার জন্য প্রতিষ্ঠিত ধারা অনুযায়ী শুরা কাউন্সিল কাসেমকে (৭১) নির্বাচিত করেছে।
এর মাধ্যমে তিনি হিজবুল্লাহর নিহত মহাসচিব সৈয়দ হাসান নাসরাল্লাহর উত্তরাধিকারী নির্বাচিত হলেন। এক মাস আগে লেবাননের রাজধানী বৈরুতের দক্ষিণাংশের শহরতলীতে ইসরায়েলের বিমান হামলায় নাসরাল্লাহ নিহত হন। খবর বিডিনিউজের।
৮ অক্টোবর অজ্ঞাত একটি স্থান থেকে কাসেম বলেছিলেন, হিজবুল্লাহ ও ইসরায়েলে মধ্যে একটি যুদ্ধ চলছে এবং হিজবুল্লাহ কখনোই পরাজয় মেনে নেবে না। ইসরায়েলের ‘বেদনাদায়ক আঘাত’ সত্তে¡ও হিজবুল্লাহর সক্ষমতা অক্ষুন্ন আছে বলে দাবি করেছিলেন তিনি। তারপরও তিনি জানান, হিজবুল্লাহর মিত্র লেবাননের পার্লামেন্টের স্পিকার নাবিহ বেরি যুদ্ধবিরতির যে প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন তাদের দল সেটি সমর্থন করে।
তখনই প্রথমবারের মতো হিজবুল্লাহর পক্ষ থেকে ইসরায়েলে হামলা বন্ধ করার জন্য পূর্বশর্ত হিসেবে গাজা যুদ্ধবিরতির কোনো উল্লেখ করা হয়নি বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
নাসরাল্লাহর মৃত্যুর পর হিজবুল্লাহর আরেক জ্যেষ্ঠ নেতা হাশেম সাফিয়েদ্দিন গোষ্ঠীটির শীর্ষ নেতা হতে যাচ্ছেন বলে ধরে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু নাসরাল্লাহ নিহত হওয়ার মাত্র ১১ দিনের মাথায় বৈরুতে ইসরায়েলি বিমান হামলায় তিনিও নিহত হন। এর কয়েকদিন পর টেলিভিশনে স¤প্রচারিত ৩০ মিনিটের ওই ভাষণ দেন কাসেম।
কাসেম ১৯৯১ সালে হিজবুল্লাহর সহকারী প্রধান নির্বাচিত হয়েছিলেন। নাসরাল্লাহ শীর্ষ নেতা হওয়ার পরও তিনি তার পদে রয়ে যান এবং দীর্ঘদিন ধরে হিজবুল্লাহর অন্যতম প্রধান মুখপাত্র হিসেবে দায়িত্বপালন করেন। এ সময় বহু বিদেশি গণমাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দেন তিনি।
২৭ সেপ্টেম্বর নাসরাল্লাহ নিহত হওয়ার পর হিজবুল্লাহর শীর্ষ নেতাদের মধ্যে তিনি প্রথম টেলিভিশনে বক্তব্য রাখেন। ৩০ সেপ্টেম্বর ১৯ মিনিটের ওই বক্তৃতায় তিনি ‘দ্রæততম সময়ের মধ্যে পরবর্তী নেতা নির্বাচন’ ও ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে ইসরায়েলের সঙ্গে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার কথা জানান।
লেবাননের দক্ষিণাঞ্চল থেকে বৈরুতে আসা একটি পরিবারে ১৯৫৩ সালে নাইম কাসেমের জন্ম হয়। লেবাননের শিয়া আমল আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার মাধ্যমে তার রাজনৈতিক জীবন শুরু হয়। ১৯৭৯ সালে ইরানে ইসলামিক বিপ্লবের সময় কাসেম আমল আন্দোলন থেকে সরে যান। ওই সময় লেবাননের শিয়া আন্দোলনের অনেক তরুণ কর্মী ইরানি বিপ্লবে প্রভাবিত হন।