পূর্বদেশ ডেস্ক
‘ক্ষমতার অপব্যবহার ও অনিয়মের মাধ্যমে’ শেখ রেহানা, তার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি এবং মেয়ে আজমিনা সিদ্দিক রূপন্তীর নামে ঢাকার পূর্বাচলে প্লট বরাদ্দের অভিযোগে তিনটি মামলা করেছে দুদক, যেখানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং রেহানার মেয়ে ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিককেও আসামি করা হয়েছে।
দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) আক্তার হোসেন গতকাল সোমবার সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। খবর বিডিনিউজের।
এর আগে শেখ হাসিনার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের বিরুদ্ধেও অনিয়মের মাধ্যমে প্লট বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে মামলা করে দুদক।
দুদক মহাপরিচালক আক্তার বলেন, রাজউকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের যোগসাজশে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে নিজ নামে ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে ১০ কাঠার ছয়টি প্লট বরাদ্দের অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক। পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পের ক‚টনৈতিক জোনের এসব প্লট বরাদ্দে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় কমিশনের অনুমোদন সাপেক্ষে তিনটি মামলা করেছে দুদক।
দন্ডবিধি, ১৮৬০ এর ১৬১/১৬৩/১৬৪/৪০৯/১০৯ ধারা এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারায় মামলাগুলো করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
মহাপরিচালক আক্তার হোসেন বলেন, শেখ রেহানার বিরুদ্ধে মামলায় শেখ হাসিনা, রেহানার মেয়ে টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এবং রাজউকের কর্মকর্তাসহ ১৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। আর রেহানাপুত্র ববির বিরুদ্ধে মামলায় ১৬ জন এবং ববির ছোট বোন রূপন্তীর বিরুদ্ধে ১৬ জনকে আসামি করা হয়েছে।
তিনি বলেন, পূর্বাচল নতুন শহরে প্লট বরাদ্দের ক্ষেত্রে ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রভাবিত করেছেন। এ বিষয়ে দুদকের কাছে যথেষ্ঠ প্রমাণাদি রয়েছে।
গণঅভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনের অবসান ঘটে। এরপর গত ২৬ ডিসেম্বর শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের পাঁচ সদস্যের নামে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ছয়টি প্লট বরাদ্দে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান শুরু করে দুদক।
ওই প্রকল্পের ২৭ নম্বর সেক্টরের কূটনৈতিক জোনের ২০৩ নম্বর সড়কের আশপাশে শেখ হাসিনা, তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল; ছোট বোন শেখ রেহানা এবং রেহানার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ও মেয়ে আজমিনা সিদ্দিক রূপন্তীর নামে প্লটগুলো বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
শেখ হাসিনার নামে প্লট বরাদ্দ হয় ২০২২ সালের ৩ আগস্ট, যার নম্বর ৯। ওই বছরের ২৪ অক্টোবর ১৫ নম্বর প্লট জয়ের নামে এবং ২ নভেম্বর পুতুলের নামে ১৭ নম্বর প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়।
শেখ রেহানার প্লট নম্বর ১৩, তার ছেলের ববির নামে বরাদ্দ হওয়া প্লটের নম্বর ১১ এবং এবং রূপন্তীর নামে বরাদ্দ দেওয়া হয় ১৯ নম্বর প্লট।
গত বছরের অক্টোবর শেখ হাসিনার পরিবারের ছয় সদস্যের নামে পূর্বাচলে প্লট বরাদ্দে অনিয়ম নিয়ে সংবাদমাধ্যমে আসা অভিযোগ তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করে দেয় হাই কোর্ট। একইসঙ্গে এ কমিটিকে আওয়ামী লীগ সরকারের দেড় দশকে প্লট বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগও তদন্ত করতে বলা হয়।