হাসপাতালে শিশুর মৃত্যুতে চিকিৎসকের উপর হামলা

3

নিজস্ব প্রতিবেদক

নগরীর বেসরকারি হাসপাতাল মেডিকেল সেন্টারে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এক শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় দায়িত্বরত চিকিৎসককে মারধর করেছেন রোগীর স্বজনরা। গত রবিবার নগরীর ওআর নিজাম রোডের মেডিকেল সেন্টারে এ ঘটনা ঘটে বলে হাসপাতালটির ব্যবস্থাপক ইয়াসিন আরাফাত জানান। আহত চিকিৎসক রিয়াজ উদ্দিন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে আছেন। তিনি মেডিকেল সেন্টারে এনআইসিইউ এর কনসালটেন্ট হিসেবে দায়িত্বরত ছিলেন।
ইয়াসিন আরাফাত জানান, গত শনিবার রাত পৌনে ১১টার দিকে এক বছর বয়েসী একটি শিশুকে হাসাতালে ভর্তি করা হয়, সে শ্বাসকষ্টে ভুগছিল। রাতে পিআইসিইউতে রাখার পর সকালে তাকে এনআইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়েছিল। গতকাল (রবিবার) সকাল ৯টা ৫০মিনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিশুটির মৃত্যু হয়। পরে বেলা ১১টার দিকে শিশুটির বাবা লোকজন জড়ো করে এনে এনআইসিইউর সামনে চিকিৎসক রিয়াজ উদ্দিনকে মারধর শুরু করেন। পরে আহত অবস্থায় ডা. রিয়াজ উদ্দিনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তাকে আইসিইউ ভর্তি করা হয়। হাসপাতালের রেজিস্টারে শিশুটির ঠিকানা লেখা হয়েছে সীতাকুন্ড উপজেলার বিএম ডিপো এলাকা। তার বাবার নাম সুমন।
চিকিৎসককে মারধরের ঘটনায় রবিবার রাতে পাঁচলাইশ থানায় মামলা করা হয়েছে মেডিকেল সেন্টারের পক্ষ থেকে। সেখানে শিশুটির বাবা এবং অজ্ঞাত আরও ১৮/২০ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলার হওয়ার পরই পুলিশ অভিযান চালিয়ে ঘটনায় জড়িত ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে। তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে শিশুর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে দায়িত্বরত চিকিৎসককে মারধরের ঘটনায় ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হামলাকারীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন- বিএমএ। দাবি পূরণ না হলে কর্মবিরতিসহ কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে চিকিৎসকদের সংগঠনটি।
চট্টগ্রাম বিএমএ’র সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল ইকবাল চৌধুরী স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়, মেডিকেল সেন্টারের চিকিৎসক রিয়াজ উদ্দিনের ওপর হামলায় তার সাব কংজাংটিভাল হেমোরেজ ( চোখে তীব্র রক্তক্ষরণ) দেখা যায়। পাশাপাশি তিনি মাথায়ও মারাত্মক আঘাত পেয়েছেন। গত রবিবার সকালে নগরীর ওআর নিজাম রোডের মেডিকেল সেন্টার নামের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসককে মারধরের ওই ঘটনা ঘটে। সেখানে এনআইসিইউর কনসালটেন্ট হিসেবে দায়িত্বরত ছিলেন ডা. রিয়াজ উদ্দিন।
বিএমএ এর বিবৃতিতে বলা হয়, গত ১০ এপ্রিল রাতে পটিয়া জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক রক্তিম দাশের ওপরও হামলার ঘটনা ঘটেছে। তিনিও চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছেন। রক্তিমের ওপর হামলাকারীদের স্থানীয় সংসদ সদস্য প্রশ্রয় দিচ্ছেন। চিকিৎসকদের মারধরের ঘটনায় দোষীদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার করা না হলে এবং এমপির প্রশ্রয় বন্ধ না হলে চিকিৎসকরা কর্মবিরতিসহ কঠোর আন্দোলনে নামবে।