হালিশহরে অবৈধ ভিওআইপি চক্রের গোপন আস্তানা!

4

নিজস্ব প্রতিবেদক

নগরের হালিশহরে অবৈধ ভিওআইপি (ভয়েস ওভার ইন্টারনেট প্রোটোকল) কার্যক্রম পরিচালনার একটি গোপন ঘাঁটিতে অভিযান চালিয়েছে র‌্যাব। এসময় বিপুল পরিমাণ ভিওআইপি সরঞ্জাম জব্দ করা হয়েছে। অভিযানে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যিনি চক্রটির অন্যতম সক্রিয় সদস্য বলে র‌্যাব জানিয়েছেন।
গত সোমবার দিবাগত রাত থেকে শুরু হয়ে গত মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত চলা এই অভিযানে অংশ নেয় র‌্যাব-৭ এর একটি বিশেষ টিম, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) এবং ন্যাশনাল টেলিকম মনিটরিং সেন্টার (এনটিএমসি)। অভিযানটি পরিচালিত হয় হালিশহরের বি-বøকের একটি বহুতল ভবনের নবম তলায়। গতকাল বুধবার গণমাধ্যমের কাছে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়।
র‌্যাব জানায়, অভিযানে জব্দ করা হয় ৩০টি সিমবক্স, ১০টি উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন সার্ভার, প্রায় ১০ হাজার মোবাইল সিমকার্ড (অধিকাংশই টেলিটক এবং কিছু এয়ারটেল), একাধিক কম্পিউটার, হাই-স্পিড রাউটার, গেটওয়ে ডিভাইস এবং অন্যান্য নেটওয়ার্কিং সরঞ্জাম। এসব ডিভাইস ব্যবহার করে দীর্ঘদিন ধরে আন্তর্জাতিক কল অবৈধভাবে টার্মিনেট করা হচ্ছিল, যার ফলে সরকার কোটি কোটি টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
র‌্যাব-৭ এর সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) মেজর সানরিয়া চৌধুরী বলেন, এই চক্রটি বিদেশ থেকে আসা কল অবৈধভাবে গ্রহণ করে দেশে টার্মিনেট করতো। এতে বৈধ টেলিকম অপারেটরদের মাধ্যমে না গিয়ে কল আসার কারণে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাচ্ছে। অধিকাংশ সিমকার্ড ভুয়া বা অন্যের নামে নিবন্ধিত। দীর্ঘদিন ধরে এই অপকর্ম চালিয়ে আসছিল তারা।
তিনি জানান, চক্রটি অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে কাজ করছিল এবং প্রযুক্তির অপব্যবহার করে তারা অনেক সময় আইপি পরিবর্তন করে নিজেদের অবস্থান গোপন রাখত। গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তি চক্রের একটি বড় অংশের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। তার কাছ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
র‌্যাব সূত্রে জানা যায়, হালিশহরের এই ভবনটি মূলত আবাসিক হিসেবে নিবন্ধিত হলেও সেখানে দীর্ঘদিন ধরে গোপনে ভিওআইপি সরঞ্জাম স্থাপন করে কার্যক্রম চালানো হচ্ছিল। ভবনের অন্যান্য বাসিন্দারাও বিষয়টি জানতেন না। অত্যন্ত নিঃশব্দে এবং প্রযুক্তি নির্ভর উপায়ে এসব অপারেশন পরিচালনা করায় প্রথমদিকে এদের শনাক্ত করা কঠিন হয়ে পড়েছিল।