হালদায় ফের ভেসে উঠলো মৃত শুশুক

73

দেশের একমাত্র মিঠা পানির কার্প জাতীয় মা-মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীতে প্রতিনিয়তই মরে ভেসে উঠছে শুশুক। স্থানীয়দের কাছে এগুলো ডলফিন নামে পরিচিত। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে হাটহাজারীর দক্ষিণ মাদার্শা ইউনিয়নের হালদা নদীর আকবরিয়া এলাকা থেকে স্থানীয়রা মৃত শুশুকটি উদ্ধার করা হয়। শুশুকটির মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ভাটার সময় পানির স্তর নেমে যাওয়ায় নদীতে চলাচলকারী যান্ত্রিক নৌযানের পাখার আঘাতে এসব শুশুক মারা পড়ছে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।
হালদা বিশেষজ্ঞ ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মনজুরুল কিবরিয়া বলেন, ডলফিনটি কয়েকদিন আগেই মারা গেছে। মাথায় আঘাত পেয়ে শুশুকটির মৃত্যু হয়েছে। কিভাবে আঘাত পেয়েছে সেটা সঠিকভাবে বলা যাচ্ছে না। ধারণা করছি,ভাটার সময় পানির স্তর নেমে যাওয়ায় নদীতে চলাচলকারী যান্ত্রিক নৌযানের পাখার আঘাতে এসব শুশুক মারা পড়ছে। ২০১৭ সালের এপ্রিল থেকে এ পর্যন্ত গত দুই বছরে হালদায় মোট ২২টি ডলফিনের মৃত্যু হয়েছে। বাংলাদেশের পদ্মা, গঙ্গা শাখা নদীগুলোয় অল্প কিছু ডলফিনের বিচরণ রয়েছে। এর মধ্যে হালদা নদীতেই রয়েছে ২০০ থেকে ২৫০টির মতো। যদিও তা দিনদিন হ্রাস পাচ্ছে বলে জানান গবেষক অধ্যাপক মনজুরুল কিবরিয়া।
মৎসজীবী ও হালদা পাড়ের ডিম সংগ্রহকারীরা বিষাদগ্রস্ত হয়ে বলেন, নিয়মিত ডলফিন মারা যাওয়ার এ চিত্র অত্যন্ত বেদনাদায়ক। হালদায় আগে অনেক শুশুক দেখা যেত। এখন আর সেভাবে দেখা মেলে না। আবার জেলেদের জালেও আটকা পড়ছে শুশুক। নদীতে যান্ত্রিক নৌকার চলাচল বেড়ে যাওয়ায় মা মাছ ও শুশুক দুই-ই কমে গেছে। বিপন্ন প্রজাতির এসব প্রাণী রক্ষায় হালদা নদীকে ডলফিনের অভয়ারণ্য ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন তারা। নয়তো অচিরেই হালদা নদী ডলফিনশূন্য হয়ে পড়বে।