হাটহাজারী প্রতিনিধি
দেশের অন্যতম মিঠা পানির কার্প জাতীয় মাছের (রুই, কাতাল, মৃগেল ও কালিবাউশ) নিষিক্ত ডিম সংগ্রহের নদী চট্টগ্রামের হালদায় প্রজনন মৌসুমে ১০ দিনের ব্যবধানে আবারও ভেসে উঠেছে মৃত মা-মাছ। জোয়ারের পানিতে ভেসে আসা মাছটি মা মৃগেল বলে জানিয়েছে উপজেলা মৎস্য অধিদপ্তর।
গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১২ টায় হালদা নদীর আজিমের ঘাট এলাকায় এই মা-মাছটি উদ্ধার করা হয়। মাছটি নদী থেকে উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের পর মাছটিতে প্রচুর পরিমাণ পরিপক্ব ডিম দেখা গেছে। মৃত উদ্ধার করা মা মৃগেল মাছটির ওজন প্রায় ৫ জেজি ১শ’ গ্রাম এবং দৈর্ঘ্য ২ ফুট ৬ ইঞ্চি।
মাছটির শরীরে আঘাতের চিহ্ন ছিল বলে জানা গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, বুধবার ড্রেজারের আঘাতে মাছটি মৃত্যু হয়েছে। এর আগেও গত ৪ মে একই স্থানের অদূরে ড্রেজারের আঘাতে ৫ কেজি ওজনের মৃত আরেকটি ডিমওয়ালা মা-মাছ (কাতলা) উদ্ধার করা হয়েছিল।
এ ব্যাপারে সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন আজাদী গণমাধ্যমক বলেন, উদ্ধারকৃত মৃত মৃগেল মা-মাছটি সুরতহাল রিপোর্ট করে হালদার পাড়ে মাটি চাপা দেওয়া হয়েছে। মাছটির শরীরে আঘাতে চিহ্ন পাওয়া গেছে। ধারালো কিছু দিয়ে এটির মাথায় আঘাত করা হয়েছে। এর আগে ৪ মে উদ্ধার হওয়া মা-মাছটির গায়েও ধারালো কিছু দিয়ে আঘাত করা হয়েছিল বলেও জানান তিনি।
এদিকে ডিম সংগ্রহকারীরা জানান, এখন নদীতে মা-মাছের ডিম ছাড়ার মৌসুুম। নদীতে মা-মাছের আনাগোনা বেড়েছে। আমরা প্রায় ৪ শতাধিক ডিম সংগ্রহকারী নৌকা-জাল ও প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম নিয়ে বৃষ্টির জন্য অপেক্ষায় আছি। নদীর উজানে বজ্রসহ বৃষ্টিতে পাহাড়ি ঢল নামলে মা-মাছ ডিম ছাড়বে। এরমধ্যে ড্রেজারে আঘাতে একের পর এক মা-মাছের মৃত্যুতে আমরা শঙ্কিত।
হালদা বিশেষজ্ঞ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের প্রফেসর ড. মনজুরুল কিবরিয়া বলেন, এপ্রিল থেকে জুনের শেষ হালদার মা-মাছের প্রজনন মৌসুম। এখন জো চলছে। জো’তে মা-মাছ ডিম ছাড়ার পরিবেশ পায়। বজ্রসহ বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢল হলে পুরোদমে ডিম ছাড়তে পারে মা মাছ। তবে এর মধ্যে ১০ দিনের ব্যবধানে চলতি মাসে ২টি মা-মাছ মরে ভেসে ওঠা দুশ্চিন্তার বিষয়। গত বছর প্রজনন মৌসুমেও একের পর এক মা মাছ মরে ভেসে উঠেছিল নদীতে।