নিজস্ব প্রতিবেদক
‘হৃদয় দিয়ে হৃদরোগ প্রতিরোধের জন্য সক্রিয়ভাবে কাজ করতে হবে’- এই প্রতিপাদ্যে পালিত হয়েছে বিশ্ব হার্ট দিবস। গতকাল রবিবার দিবসটি উপলক্ষে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন হাসপাতাল হার্ট এন্ড ভাসকুলার সেন্টারের উদ্যোগে এক বর্ণাঢ্য র্যালির আয়োজন করা হয়। র্যালিটি হাসপাতাল চত্ত্বর থেকে শুরু হয়ে জিইসি মোড়, গোলপাহাড় মোড় ঘুরে হাসপাতাল চত্তরে এসে শেষ হয়।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. একে এম ফজলুল হকের নেতৃত্বে র্যালিতে উপস্থিত ছিলেন হাসপাতালের চিফ কার্ডিওভাসকুলার সার্জন ডা. সারওয়ার কামাল মেডিকেল পরিচালক ডা. মুজিবুল হক, ডা. কাউসার আলম, চিফ কার্ডিয়াক এনেস্তেসিওলজিস্ট ডা. বাবর তালুকদার, হাসপাতালের সিওও এইচ এম লতিফ উদ্দিন চৌধুরী, মার্কেটিং ডিজিএম ফরিদুল আলম প্রমুখ।
র্যালি পরবর্তী এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বিশেজ্ঞক চিকিৎসকরা বলেন, আমাদের দেশে প্রতিবছর বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে যতো রোগী মারা যায়, তার মধ্যে ১৭% রোগীর মৃত্যু হয় হৃদরোগের কারণে। একটা সময়ে হৃদরোগ শুধু বড়দের হলেও বর্তমানে তরুণ-যুবকদের মধ্যেও বাড়ছে। কারণ বর্তমানে তরুণদের একটা অংশ ধূমপান ও মাদক সেবনে জড়িয়ে পড়ছে। হৃদরোগের যে সকল কারণ রয়েছে, যেমন- উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা, উচ্চ কোলেস্টোরেলের মাত্রা, অতিরিক্ত মেদ, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, মদ্যপান, মানসিক চাপ ইত্যাদী।
চিকিৎসকরা আরও বলেন, হৃদরোগ প্রতিরোধে মাদক, ধূমপান ও খাদ্যভাস পরিবর্তনের পাশপাশি আমাদেরকে কর্মদ্যোগ বাড়াতে হবে। কায়িক পরিশ্রম না করে শুধু খাদ্যাভাস পরিবর্তন করলে হৃদরোগ প্রতিরোধ করা যাবে না। হৃদরোগের চিকিৎসার চেয়ে হৃদরোগ প্রতিরোধ উত্তম এবং এক্ষেত্রে শারীরিক পরিশ্রম বা ব্যায়াম খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের যে কোন শারীরিক নড়াচড়া যেটাতে দেহের ঐচ্ছিক পেশী সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে এবং পেশীর এ কাজের জন্য শক্তির ব্যয় ঘটে, সেটিই শারীরিক পরিশ্রম। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ হলো কিশোর বয়সে বিশেষ করে ৫-১৭ বছর বয়স প্রতিদিন প্রায় এক ঘণ্টা ভালোভাবে শারীরিক পরিশ্রম করা দরকার। বিশেষ করে ওই বয়সে পেশী ও হাঁড়কে শক্তিশালী করে এমন কোন ব্যায়াম বা শরীরচর্চা সপ্তাহে অন্তত তিন বার করা উচিত। এক্ষেত্রে খেলাধুলা ভালো ভ‚মিকা পালন করে।
আমাদের দেশে এক সময় হৃদরোগের চিকিৎসা ব্যয়বহুল ও অপ্রতুল হলেও বর্তমানে স্বল্প খরচে এ রোগের আধুনিক চিকিৎসা এখন দেশেই হচ্ছে। হৃদরোগের চিকিৎসাকে একেবারে প্রান্তিক পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য জাতীয়ভাবে কর্মকৌশল তৈরি করা উচিত বলে মনে করেন চিকিৎসকরা।