হাটহাজারীতে কোয়ারেন্টিন নিশ্চিতে কঠোর প্রশাসন

35

চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে করোনা ভাইরাসের মহামারি ঠেকাতে এবং মানুষের মাঝে হোম কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করতে কঠোর অবস্থানে উপজেলা প্রশাসন। তাদের এসব কাঝে কঠোরতার সাথেই সহযোগিতা করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও পুলিশ। তাদের সাথে নিয়ে মাঠ পর্যায়ে সার্বক্ষণিক কাজ করছে উপজেলা প্রশাসন। কঠোরতার পাশাপাশি উপজেলার হতদরিদ্র মানুষদের মাঝে প্রশাসন ও ব্যক্তিগত উদ্যোগে বাড়িতে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় উপকরণ।
এছাড়া উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে সেনাবাহিনী, থানা পুলিশ, ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্য এবং গ্রাম পুলিশকে সাথে নিয়ে বিদেশ ফেরত প্রবাসীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হোম কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করার পাশাপাশি এলাকার সার্বিক পরিস্থিতি তথা নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতেও নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে এবং আদায় করা হচ্ছে জরিমানা।
গতকাল বুধবার প্রতিদিনের মতো উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নে এবং পৌরসভা এলাকায় সেনাবাহিনী, থানা পুলিশ, ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্য এবং গ্রাম পুলিশকে সাথে নিয়ে বিদেশ ফেরত প্রবাসীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হোম কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করতে অভিযান পরিচালনা করেছে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রুহুল আমিন। অভিযান চলাকালে যারা সরকারের অনুরোধ মেনে নিজ গৃহে অবস্থান করেছেন ইউএনও তাদের ধন্যবাদ জানান। যাদের ১৪ দিন অতিবাহিত হয়নি তাদেরকে হোম কোয়ারেন্টিন মেনে চলার অনুরোধ জানান। পাশাপাশি গতকাল পর্যন্ত ২৭৬ জনকে সরকারি নির্দেশনা মানায় কৃতজ্ঞতা স্বরূপ ‘থ্যাংকস লেটার’ পৌঁছে দিয়েছে উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা, ইউপি চেয়ারম্যান এবং ইউপি সচিব ও সদস্যরা। বর্তমানে ৪৭৬ জনের মধ্যে হোম কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন ২০০ জন প্রবাসী।
এছাড়াও একইদিন বেলা ১১ টার দিকে সওজের নাম ভাঙিয়ে অসাধু ঠিকাদার চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি মহাসড়কের ৭-৮টি স্পটে গাছ কেটে রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ করে রাখে। এ সময় সড়কে অসুস্থ রোগী পরিবহনের অ্যাম্বুলেন্সসহ ব্যক্তিগত ও প্রয়োজনে সড়কে নামা ছোট-বড় শতাধিক যানবাহন আটকা পড়ে। এতে রোগী এবং যাত্রীরা দুর্ভোগে পড়েন। খবর পেয়ে ইউএনও রুহুল আমিন দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যদের সহযোগিতায় সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক করে। অভিযুক্ত ঠিকাদারকে সতর্ক করার পাশাপাশি এ ধরণের কাজ ভবিষ্যতে করবে না এ মর্মে একটি মুচলেকা নেয় প্রশাসন।
এদিকে, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. শরীফ উল্ল্যাহ’র নেতৃত্বে সেনাবাহিনী ও পুলিশের ফোর্স নিয়ে উপজেলার মির্জাপুর ও লাঙ্গলমোড়া ইউনিয়নে এবং পৌরসভার এলাকার বিভিন্ন স্থানে সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করেন। মঙ্গলবার রাতে পরিচালিত এ অভিযানে সরকার হাট বাজারে বাজার মূল্যের চেয়ে দ্বিগুণ দাম রাখায় ২ দোকানকে ৩ হাজার এবং মোমেনশাহ ইলেকট্রিককে ২ হাজার ও হক পোল্ট্রি ফার্মকে ১ হাজার টাকা অর্থদন্ড প্রদান করেন। এছাড়া পৌরসভার আলমপুর ও আদর্শগ্রামের বিভিন্ন চায়ের দোকানে অভিযান চালিয়ে ৪টি টিভি জব্দ করে প্রশাসনের হেফাজতে নেওয়া হয়।
গতকাল বুধবার সকালে ও বিকালে সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে অভিযানে নামেন হাটহাজারী সার্কেল এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবদুল্লাহ আল মাসুম। তিনি চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি মহাসড়কের হাটহাজারী পৌরসভাস্থ বাসস্টেশন জিরো পয়েন্ট, কবুতরহাট ফলের দোকান, বাজার, কলেজ গেইট ও কলাবাগান এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেন।