হাইকোর্টের রুল – চারুকলা ইনস্টিটিউট স্থানান্তরে স্থিতাবস্থার নির্দেশ

51

পূর্বদেশ অনলাইন
হাইকোর্ট চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউট স্থানান্তর কার্যক্রমে তিন মাসের স্থিতাবস্থা বজায় রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।
বিচারপতি মো. আকরাম হোসেন চৌধুরী ও বিচারপতি ফয়েজ আহমেদের দ্বৈত বেঞ্চ গত ২৩ জুন এক রিট পিটিশনের শুনানি শেষে এ আদেশ দেন। নগরীর চান্দগাঁও আবাসিক এলাকার বাসিন্দা শিল্পী মো. মাহাবুবুর রহমান রিট পিটিশনটি দায়ের করেন। এতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব, ইউজিসি চেয়ারম্যান, মাউশির মহাপরিচালক, চবির উপাচার্য, উপ-উপাচার্য (একাডেমিক), উপ-উপাচার্য (প্রশাসন), কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের ডিন, রেজিস্ট্রার, চারুকলা ইনস্টিটিউটের পরিচালককে বিবাদী করা হয়েছে। আদালতে রিট পিটিশনকারীর পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া। অন্যদিকে, বিবাদীদের পক্ষে ছিলেন ডেপুটি এটর্নি জেনারেল মাহফুজুর রহমান মিলন। আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, চট্টগ্রাম সরকারি আর্ট কলেজকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে চারুকলা ইনস্টিটিউট করার সিদ্ধান্ত নিয়ে ১৯৯৯ সালে সরকার একটি গেজেট প্রকাশ করে। তবে গেজেটের সব শর্ত পূরণ না করেই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সরকারি আর্ট কলেজকে ইনস্টিটিউটে রূপান্তর করে পাঠদান শুরু করে। কলেজের সব সম্পত্তি দান করার জন্য একটি দানপত্র দলিলের খসড়া করা হলেও তা নিবন্ধনের মাধ্যমে চূড়ান্তভাবে সম্পন্ন করা হয়নি। তিনি বলেন, আর্ট কলেজের প্রাক্তন এক শিক্ষার্থীর দায়ের করা রিট পিটিশনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট চারুকলা ইনস্টিটিউট স্থানান্তর কার্যক্রমে তিন মাসের স্থিতাবস্থা বজায় রাখার আদেশ দিয়েছেন। এছাড়া কেন চারুকলা বিভাগ ও সরকারি আর্ট কলেজকে একীভূত করে একটি স্বাধীন ইনস্টিটিউট গঠনের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা আইনগত কর্তৃত্ববিহীন ও অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, কেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাসে ইনস্টিটিউটের স্থানান্তর অবৈধ এবং আইনগত অকার্যকর ঘোষণা করা হবে না, তাও জানতে চেয়েছেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর ড. মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানান, আদালতের আদেশের বিষয়ে একজন আইনজীবী আমাদের চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন। তবে এখনও আদালতের আদেশের কপি হাতে পাইনি। আদেশের কপি পেলে আলোচনা করে এ বিষয়ে পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ নেয়া হবে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে চারুকলা বিভাগের যাত্রা শুরু হয় ১৯৭০ সালে। বিভাগের প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি ছিলেন শিল্পী রশিদ চৌধুরী। ২০১০ সালের ২ আগস্ট এটি নগরীর সরকারি চারুকলা কলেজের সঙ্গে একীভূত হয়ে চারুকলা ইনস্টিটিউট হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। হাটহাজারীর মূল ক্যাম্পাস থেকে প্রায় ২১ কিলোমিটার দূরে নগরীর মেহেদীবাগের বাদশা মিয়া সড়কে এ ইনস্টিটিউটের কার্যক্রম চলছিল। সম্প্রতি চারুকলা ইনস্টিটিউট মূল ক্যাম্পাসে ফিরিয়ে নেওয়ার দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন একদল শিক্ষার্থী। তাদের দাবির প্রেক্ষিতে চারুকলা ইনস্টিটিউটকে মুল ক্যাম্পাসে স্থানান্তর করার উদ্যোগ নেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যেই এক রিট পিটিশনের প্রেক্ষিতে উচ্চ আদালত থেকে এ কার্যক্রমের উপর তিন মাসের স্থিতাবস্থা বজায় রাখার নির্দেশ এলো।