শফকত হোসাইন চাটগামী, বাঁশখালী
ঢাকায় খুন হওয়া বাঁশখালীর যুবক বোরহান উদ্দিন মায়মুনকে হত্যার আগে ৪ লাখ টাকা মুক্তিপণ চেয়েছিল খুনিরা। টাকা দিতে দেরি হওয়ায় তাকে হত্যা করে রাস্তায় লাশ ফেলে যায় সন্ত্রাসীরা। পরে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে তার পকেটে থাকা এনআইডি কার্ড ধরে ঠিকানা সংগ্রহ করে বাঁশখালীতে পরিবারের কাছে খবর দিলে শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় ঢাকার যাত্রাবাড়ি থানা থেকে লাশ গ্রহণ করে পরিবারের সদস্যরা। ওইদিন দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে নিহত মায়মুনের লাশ বাঁশখালী পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডস্থ রুহুল্লাহপাড়া এলাকায় পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
জানা গেছে, বোরহান উদ্দিন মায়মুনকে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে ঢাকায় নিয়ে হত্যা করা হয়। মাইমুন বাঁশখালী পৌরসভার উত্তর জলদী রুহুল্লাহপাড়া এলাকার মোহাম্মদ ইউনুসের ছেলে। ঢাকার যাত্রাবাড়ি থানা পুলিশ শুক্রবার সন্ধ্যায় তার লাশ উদ্ধার করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে। নিহতের শরীরে আগুনে দগ্ধ হওয়ার ক্ষতচিহ্ন ছিল।বাঁশখালী থানা পুলিশ ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, বোরহান উদ্দিন মায়মুন কারাগারে ছিলেন। তখন সেখানে চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার এক যুবকের সাথে পরিচয় হয়। পরিচয় থেকে তাদের তৈরি হয় বন্ধুত্ব। সেই বন্ধু জেল থেকে বের হয়ে মায়মুনকে ভাল বেতনে চাকরি আছে বলে খবর দিয়ে ঢাকায় যেতে বলেন। গত সোমবার বোরহান উদ্দিন মায়মুন ঢাকায় যাওয়ার পর থেকে তার মোবাইল ফোন বন্ধ ছিল। মাঝখানে গত বৃহস্পতিবার মায়মুনের ফোন করে পরিবারের কাছে ৪ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। এরপর আবারো বন্ধ হয়ে যায় মায়মুনের মোবাইল। এর মধ্যে শুক্রবার সকালে যাত্রাবাড়ি থানা পুলিশ বাঁশখালী থানায় বোরহান উদ্দিন মায়মুনের লাশ উদ্ধারের বিষয়টি জানালে পুলিশের সহযোগিতায় মায়মুনের পরিবার ঢাকায় গিয়ে শুক্রবার সন্ধ্যায় যাত্রবাড়ি থানা থেকে লাশ বুঝে নেন।
নিহতের চাচাতো ভাই কামাল উদ্দিন জানান, ‘খুনি সবুজ আগেও জেলে ছিল। এই যুবকের সাথে আমার চাচাতো ভাই মায়মুনের মাত্র কিছুদিনের পরিচয়। এমনকি জেল থেকে খুনিকে বের করতে তদবির করেন মায়মুন। এই বন্ধুই চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে ঢাকায় নিয়ে প্রথমে ৪ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। মুক্তিপণের টাকা না দেয়ায় খুন করে মায়মুনকে। এ ঘটনায় যাত্রাবাড়ী থানায় শুক্রবার হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।’
বাঁশখালী থানার ওসি (তদন্ত) সুধাংশু শেখর হালদার জানান, ‘যাত্রাবাড়ি থানা থেকে লাশ উদ্ধারের বিষয়টি বাঁশখালী থানাকে অবহিত করার পর আমরা মায়মুনের পরিবারকে খুঁজে বের করি। শুক্রবার রাতে মায়মুনের নামাজে জানাজা শেষে তাকে দাফন করা হয়।’