মিঞা জামশেদ উদ্দীন
ঘটা করে উদ্বোধন করা হয় বাঁশবাড়িয়া টু সন্দ্বীপ গুপ্তছড়া ফেরীঘাট। ২৪ মার্চ ২০২৫ ইং, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ছয় উপদেষ্টা এ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। বলতে হয়, একটি উন্নয়নমূলক কাজের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে একসঙ্গে এতো মন্ত্রীপদমর্যাদা সম্পন্ন উপদেষ্টা উপস্থিত হতে নজির নেই। গ্রাম্য প্রবাদ আছে, রথও দেখা হলো কলাও বিক্রয় করা হলো। সম্ভবত কৌতুহলদীপ্ত ছিল উপদেষ্টাগণ ফেরীঘাট উদ্বোধনীসহ সন্দ্বীপ চ্যানেল ও দ্বীপাঞ্চল সন্দ্বীপ দেখার। অনুষ্ঠানে উপস্থিত সম্মানিত উপদেষ্টারা হলেন, নৌ ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল বি এম সাখাওয়াত হোসেন, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এড. সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, মুক্তি যুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক-ই আজম বীরপ্রতীক, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার, মৎস্য ও পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আক্তার, বিদ্যুৎ, জ্বালানি, খনিজসম্পদ, রেল, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান এবং বিআইডব্লিউটির চেয়ারম্যান কমোড আরিফ আহমেদ মোস্তফাসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। এ ফেরী সার্ভিস অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য রাখেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এ ফেরীঘাট চালু করা সন্দ্বীপবাসীদের দীর্ঘ বছর ধরে লালিত স্বপ্ন ছিল। এমন একটি মাহেন্দ্রক্ষণে উপস্থিত থাকতে না পারাটাই দুঃখজনক বলা ছাড়া কিবা করার থাকে। অনেকটা আমাদের নিকটবর্তী ৬নং বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের সমুদ্র উপকূলে সন্দ্বীপ ফেরীঘাটের একাংশ। আর আমাদের ইউনিয়ন হলো উপজেলার ৪নং মুরাদপুর ইউনিয়ন। মাঝখানে দূরত্ব শুধু ৫নং বাড়বকুন্ড ইউনিয়ন। অর্থাৎ আমাদের বাড়ি থেকে অনায়াসে আধ ঘণ্টার মধ্যে বাঁশবাড়িয়ার ফেরীঘাটে পৌঁছানো যায়।
একটি বিষয় লক্ষণীয় ছিল, এ ফেরীঘাট উদ্বোধনী ক্ষণটা ছিল মুসলিম সম্প্রদায়ের সবচাইতে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর। উদ্বোধনের এক সপ্তাহ পর এলো সেই কাঙ্ক্ষিত ঈদের খুশির দিন। বিশেষ করে ঈদকে কেন্দ্র করে সন্দ্বীপবাসীদের আগ্রহের কমতি ছিল না। এবার তাঁরা গ্রামের বাড়িতে গিয়ে স্বাচ্ছন্দে ঈদ করার সুযোগ হয়। এরমধ্যে যাত্রীদের উপচেপড়া ভীড়ও লক্ষণীয় ছিল। রীতিমত তারা বাস ও মিনিবাস ভাড়া করে নিয়ে সরাসরি ঢাকা-চট্টগ্রাম থেকে বাড়িতে যাওয়া-আসা প্রস্তুতি নেয়। নারী-শিশু ও পৌঢ়দের জন্যও এটি সুবর্ণ সুযোগ এনে দেয় এ ফেরীঘাট চালু হওয়ায়। অন্তত দুর্ঘটনার ঝুঁকি ও কাদাজল মাড়িয়ে যাওয়ার তিক্ততা থেকে রক্ষা পাবে। এসব দুর্ঘটনা সম্পর্কে অভিজ্ঞতা রয়েছে সন্দ্বীপ বাসদের। বলতে হয়, এ ফেরী সার্ভিস সন্দ্বীপবাসীদের জন্য আর্শীবাদ। একটি স্মরণিয় ঘটনা। ১জুন ১৯৫৯ ইং, ‘বাদুরা’ নামের একটি স্টিমার ঝড়ের কবলে পড়ে সন্দ্বীপ চ্যানেলে ডুবে যায়। স্টিমারটি চট্টগ্রাম সদরঘাট থেকে ছেড়ে সন্দ্বীপ হয়ে হাতিয়া ও বরিশালে যাচ্ছিল। ওই ঘটনায় আক্রান্ত হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্সের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র হেলাল উদ্দিন, বড়বোন আনোয়ারা বেগম, স্বামী ফুড ইন্সপেক্টর শামসুদ্দিন ও তাদের ছোট তিন ছেলে-মেয়েসহ হেলালের এক খালাতভাই মারা যান। হেলালের পিতা এয়াকুব উদ্দিন একজন পেশাকার ছিলেন। ছোটভাই বীর মুক্তিযোদ্ধা বেলাল উদ্দিন স্বাধীন বাংলার বেতার কেন্দ্রের অন্যতম গীতি কবি। হেলালও একজন কবি ছিলেন। তাঁরা সকলে হেলালের বিয়ে উপলক্ষে গ্রামের বাড়ি সন্দ্বীপে যাচ্ছিলেন। পথে ঘটে এ মর্মান্তিক ট্রাজেডি। (তথ্যসূত্র: দ্বীপকন্যা, লেখিকা রিজিয়া বেগম। পৃ.১১)। ঝুঁকিপূর্ণ এ সন্দ্বীপ চ্যানেল পারাপার হতে গিয়ে দ্বিতীয় আরেকটি ট্রাজেডি সন্দ্বীপবাসী কখনো ভুলতে পারে না। স্বয়ং সন্দ্বীপের দ্বীপবন্ধু খ্যাত মোস্তাফিজুর রহমান এমপি’র পরিবারে নেমে আসে এ অনিমেষ দুর্ঘটনা। এ দুর্ঘটনায় খোদ এমপি মহোদয়ের মা, বোনসহ অসংখ্য আত্মীয়-স্বজন প্রাণ হারান। এভাবে অসংখ্য ট্রাজেডির রেখাপাত আছে সন্দ্বীপবাসীদের জীবনে। তারপরও নাড়িরটানে সন্দ্বীপবাসীদের ঝুঁকিপূর্ণ ও বৈরী আবহাওয়াতেও সন্দ্বীপ চ্যানেল পারাপার হতে হয়। হামেশা হয়ে আসছে নৌকা, লঞ্চ ও স্টিমার ডুবির ঘটনা। আর সঙ্গে উত্তাল ডেউয়ের তরঙ্গে ক্রমাগত ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। ১৭৮০ খ্রী. সন্দ্বীপে আয়তন ছিল ৪শ ২০ কিলোমিটার। ১৯৮৪ সালে বাংলাদেশ টেলিভিশনের (বিটিভি) বিশেষ ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘যদি কিছু মনে না করেন’ তথ্যসূত্রে তা জানা যায়। অনুষ্ঠানটি প্রয়োজনা করতেন গণমাধ্যম ও বিটিভির জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব কামাল লোহনী। এ পতিথযশা সাংবাদিক প্রমাণ্যচিত্র ছিল- ১৯১৩-১৪ সালে অনেক দূরে ছিল, এখন শহর কাছাকাছি এসে গেছে। শহরে একটি সাইক্লোন সেল্টারও নদীর কাছে পৌঁছে গেছে। আর ১৯৮৪ সালে এসে ঠেকেছে মাত্র ৯২ কিলোমিটার। তবে এ শঙ্কার মধ্যেও পীরবক্স চর সংযুক্ত ছিল, এখন চর হিসেবে জেগে উঠেছে। অবশ্য অপর এক গবেষণায় দেখাগেছে, গত ৩৬ বছরে সন্দ্বীপ বেড়েছে ৪৫ বর্গকিলোমিটার। জেগেছে অর্ধশতাধিক দ্বীপ ও ৬ শতাধিক ডুবোচর। বঙ্গোপসাগরের মোহনায় ও মেঘনার অববাহিকা ও উপক‚লজুড়ে জেগে ওঠেছে এসব ডুবচর। যার আয়তন হবে প্রায় ১ হাজার ১০০ বর্গকিলোমিটার। বিশেষ করে উজান থেকে আসা পলি জমে তৈরি হচ্ছে নতুন নতুন দ্বীপ। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের পানি ও বন্যা ব্যবস্থাপনা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলাম স্রোতস্বীনি নদীতে পলি আসার বিষয়টিও স্বীকার করেছেন। এবং বাংলাদেশ মহাকাশ গবেষণা ও দূর অনুধাবন প্রতিষ্ঠান (স্পারসো) ল্যান্ড এশিয়া এক্সপানশন ইন দ্য ইস্টার্ন পার্ট অব মেঘনা এসটুয়েরি সিন্স দ্য ১৯৯০ শীর্ষক গবেষণায়, উপক‚লজুড়ে চর জাগার বিষয়টি উঠে এসেছে। ২০২৩ সালের দিকে বিডব্লিউটিএ চেয়ারম্যান শামীম আল রাজি এরকম একটি তথ্যসূত্র একান্তে জানান। নেদারল্যান্ডের সামুদ্রিক গবেষকরাও এধরনের আভাস দেন। গবেষকরা সন্দ্বীপ-উরিরচর-নোয়াখালী ক্রস বাঁধের কথাও জানান। সম্ভাব্য এ ক্রস বাঁধে ১৮ হাজার হেক্টর নতুন জমি জন্ম দিবে। এতে দেড় লাখেরও বেশি জনবসতি গড়ে উঠার এবং অবস্থাগত পরিবেশ সৃষ্টি হবে।
ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়ক হতে বাঁশবাড়িয়া বেড়িবাঁধের দূরত্ব ২ কিলোমিটার। আর বেড়িবাঁধ থেকে ফেরী ঘাটের লার্নিং পয়েন্টের দূরত্ব সর্বোচ্চ এক কিলোমিটার। এ পয়েন্টের কাজ তড়িঘড়ি করেই ফেরীঘাটটি চালু করা হয়। একইভাবে সন্দ্বীপের গুপ্তছড়া ঘাটেও লানিং পয়েন্ট তৈয়ার করা হয়। তবে এ বৈরী পরিবেশে সংযোগ সড়কের স্থায়িত্বতা নিয়েও প্রশ্ন ওঠেছে। বেড়িবাঁধের ভেতরের এ সড়কের দুপাশে রেশমিকটনের বালির বস্তা পুঁতানো হয়। যেন মরা নীল তিমির মতো একেকটি বালির বস্তা পড়ে আছে। এ দৃশ্য দেখে অনায়াসে বুঝাযায় রাস্তাটি টিকিয়ে রাখতে এ বালুর বস্তা দেয়া হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, উত্তাল বর্ষায় এ রাস্তা বিলিন হওয়ারও আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিশেষ করে রাস্তারটি স্থায়িত্ব রাখতে যে বøক দেয়া হয়েছে, তা ঢেউয়ের তোড়ে ভেঙে বিলীন হয়ে যেতে পারে। মনে রাখতে হবে, বঙ্গোপসাগরে মোহনায় এ সন্দ্বীপ চ্যানেলটি অবস্থিত। তাছাড়া বাঁশবাড়িয়ার ফেরীঘাটাংশে ভাঙা বেড়িবাঁধ মেরামত করা হয়নি। সেস্থলে অকেজো যে স্লুইচ গেটটি ছিল সেটি তড়িঘড়ি করে বালি চাপাদিয়ে দৃশ্যমান মেরামত করা হয়। এখন এটি এলাকাবাসী বিষফোড়া হয়ে দাঁড়িয়েছে। বর্ষামৌসুমে এটি ভয়াবহ রূপ নিতে পারে। বিশেষ করে দ্রুত সুইচ গেট স্থাপন না করা হলে সমতল এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দিবে। ট্রাংক রোডে থেকে বেড়িবাঁধ পর্যন্ত কানেকটিং সড়কটিও সম্প্রসারণ করা হয়নি।
২৫ মার্চ দুপুরে বহু কাক্সিক্ষত এ ফেরীঘাট দেখতে যাওয়া। হেঁটে হেঁটে বেড়িবাঁধের ভেতরের ওই সড়ক ধরে ল্যানিং পয়েন্ট পর্যন্ত যাওয়া। তখন কিন্তু ঘাটে কোনো ফেরী দেখতে পায়নি। শুধু একটি সি-ট্রাক যাত্রীর অপেক্ষমান ছিল। যাত্রীর অভাবে সি-ট্রাকটি ছেড়ে যেতে পারেনি। ক্ষাণিক- সময়ে সি-ট্রাকটি কোথায় উধাও হয়ে যায়। দেখা হয় বিডব্লিউটির স্টাফ গণেশ চন্দ্র বিশ্বাসের সাথে। তিনি জানালেন সকাল সোয়া আটটা দিকে একটি ফেরী ছেড়ে যায় সন্দ্বীপের গুপ্তছড়ার উদ্দেশ্য। সেটি সেড়ে আসে সাড়ে দশটা। আবার গুপ্তছড়া ফেরীঘাটে উদ্দেশ্য সোয়া ২টা ছেড়ে যায়। বিকেল ৫ টায় আবার বাঁশবাড়িয়া ঘাটের উদ্দেশ্য ছেড়ে আসে ফেরীটি। তবে এ ফেরী স্রোতস্বীনি সাগরের ঢেউয়ের সাথে মাড়িয়ে চলা অক্ষম। এতে এই জলপথ পারাপারে সহনীয় ফেরী
অত্যাবশ্যক। এবার এ ফেরীঘাটে দেখা হলো সলিমুল্লাহ সেলিমের সাথে। তার সাথে এর পূর্বেও পরিচয় ছিল আমার। সে একটি বেসরকারি ঘাট ইজারাদারের ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত রয়েছে। তাছাড়া একটি ট্রেট ইউনিয়নের সাথে জড়িত থাকার সুবাধে দেশ-বিদেশে ঘোরাঘুরি করার সুযোগ হয়। ২০০৫ সালে নিরাপদ ক্র্যাপ জাহাজ কর্তন বিষয়ে এক সেমিনারে যান হল্যান্ডে। এ সেমিনারে বিশ্বে আরো কয়েকটি রাষ্ট্রের মানবাধিকার ও পরিবেশ কর্মীরা অংশ নেন। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা বেলার পরিবেশ বিশেষজ্ঞ এডভোকেট সৈয়দা রিজওয়ানা হকও অংশ নেন বলে সে জানায়। অবশ্য সৈয়দ রিজওয়ানা হক এখন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা। মো. সলিমুল্লাহ সেলিম জানালো, তাদের কর্মশালা হয় হল্যান্ডের অ্যামেস্ট্রেন সিটিতে। মুলত এটি দেশটির সমুদ্র বন্দর। এ অ্যামেস্ট্রেন সিটির চতুর্দিকে ১৫-২০ ফুট উঁচু বেড়িবাঁধ রয়েছে। শহরটি অনেকটা চট্টগ্রাম শহরের আদলে। শহরজুড়ে অসংখ্য খাল বা ক্যানেল রয়েছে। যখন অ্যামেস্ট্রেন সিটির আশপাশে নদী ও সাগরে জোয়ার হয়, তখন শহরের খাল বা ক্যানেলের সম্মুখের স্লুইচ গেট বন্ধ করে দেয়া হয়। আবার ভাটায় স্লুইচ গেটগুলো খুলে দেয়া হয়। এভাবে সিটিটি পরিবেশবান্ধব রক্ষা কবচ করা হয়ে শত-শত বছর ধরে। হল্যান্ডের একটি বাণ্যিজিক সিটিও আছে। হ্যাগ সিটি তাদের বাণ্যিজিক সিটি। এ সিটি সাথে সমুদ্র তলদেশ ‘ভ্রুণ’ দ্বীপের সাথে সংযোগ স্থাপন করা হয়েছে। এ তলদেশের সড়কের দৈর্ঘ্য ২২ কিলোমিটার। মূলত ভ্রুণ দ্বীপাঞ্চলে দেশটির বিশ্বের তাপদ তাপদ জাহাজ শিল্পের কারখানা রয়েছে। এ ভ্রুণ দ্বীপ হল্যান্ডের অর্থনীতিতেও বিশেষ অবদান রেখে আসছে। ২০২৩ সালে চট্টগ্রামেও অনুরূপ কর্ণফুলী নদীর তলদেশে একটি সংযোগ-সড়ক স্থাপন করা হয়েছে। এ কর্ণফুলী টানেলের দৈর্ঘ্য ৩.৩২ কিলোমিটার। দুদিকে সংযোগ সড়ক নিয়ে এটির দৈর্ঘ্য সাড়ে ৯ কিলোমিটার। আনোয়ারা সাথে এটি মিলিত হয়েছে। এ টানেল নির্মিত হওয়ায় পর্যটন সিটি কক্সবাজারের দূরত্ব ৪০ কিলোমিটার কমে আসে। এ টানেলের গভীরতা ১৫০ ফুট। ব্যয় হয়েছে ১০ হাজার কোটি টাকা। তবে দৈর্ঘ্য হিসেবে এ ব্যয় অত্যাধিক-বেশি মনে হয়। কর্ণফুলী টানেলের স্থায়িত্বতা ও ব্যয় নিরীক্ষারও দাবি রাখে স্বচ্ছতা প্রমাণে। এ টানেলের আদলে সন্দ্বীপ চ্যানেলের তলদেশে স›দ্বীপ টানেল স্থাপন করা যেতে পারে। তবে এর দৈঘ্য বাড়তে পারে। মূল চ্যানেলে সর্বোচ্চ ৫ কিলোমিটার এবং দুদিকে ৪ লেনের কানেক্টিং সড়কে, দেড়-দেড় তিন কিলোমিটার। সর্বমোট ৮ কিলোমিটার দৈঘ্যের এ টানেল হতে পারে। সঙ্গে দ্বীপাঞ্চলে জেগে উঠা ৬শ ডুবোচর বিস্তৃতি পাবে আবাদি জমি এবং নতুন নতুন জনবসতি গড়ে উঠবে ওই চরাঞ্চলে। একইভাবে সম্ভাবনাময় জাহাজ শিল্পসহ অর্থনীতি জোন স্থাপন করার দ্বারও উন্মোচিত হবে।
লেখক : কবি, গবেষক ও কলামিস্ট