পূর্বদেশ ডেস্ক
সৎ মায়ের দায়ের করা মামলায় অভিনেত্রী, নির্মাতা ও সঙ্গীত শিল্পী মেহের আফরোজ শাওনকে গ্রেপ্তারে পরোয়ানা জারি করেছে আদালত। একই মামলায় ঢাকা মহানগর পুলিশ-ডিএমপির গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) সাবেক প্রধান হারুন অর রশীদসহ আরও ৯ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম ছানাউল্ল্যাহ তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। খবর বিডিনিউজের।
গতকাল বুধবার সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. পারভেজ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির বিষয়টি নিশ্চিত করে গণমাধ্যমকে বলেন, এ মামলার দুই আসামি আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন নিয়েছেন।
এ বছর ১৩ মার্চ শাওনের সৎ মা নিশি ইসলাম হত্যাচেষ্টা ও মারধরের অভিযোগে ১২ জনকে আসামি করে ঢাকার মহানগর হাকিম আদালতে মামলাটি দায়ের করেন। আদালত আসামিদের ২২ এপ্রিল আদালতে হাজির হতে সমন জারি করেছিলেন।
মামলার অপর আসামিরা হলেন- ডিএমপির সিটিটিসি ইউনিটের সাবেক এডিসি নাজমুল ইসলাম, মেহের আফরোজ শাওনের বাবা ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ আলী, বোন মাহিন আফরোজ শিঞ্জন, সেঁজুতি, সাব্বির, সুব্রত দাস, মাইনুল হোসেন, পুলিশ পরিদর্শক সাইফুল ইসলাম ভ‚ঁইয়া, এসআই শাহ আলম, মোখলেছুর রহমান মিল্টন।
এর মধ্যে পুলিশ পরিদর্শক সাইফুল ইসলাম ভ‚ঁইয়া ও এসআই শাহ আলম মঙ্গলবার আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করেন। আদালত তাদের জামিন মঞ্জুর করেন।
বাকি ১০ আসামি আদালতে হাজির না হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ৫০ লাখ টাকা দেনমোহর ধার্য করে ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ আলী আগের স্ত্রীর কথা ‘গোপন রেখে ও প্রতারণা করে, প্রলোভন দেখিয়ে’ নিশি ইসলামকে বিয়ে করেন। পরবর্তীতে তিনি মোহাম্মদ আলীর আগের বিয়ের কথা জানতে পারেন। তার আগের সংসারে একটি ছেলে ও তিনটি মেয়ে সন্তান রয়েছে।
মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, সে বছর ২৮ ফ্রেব্রুয়ারি শাওনের বোন শিঞ্জন ও তার স্বামী সাব্বির নিশি ইসলামের বাড়িতে এসে বিয়ের সম্পর্ক গোপন রাখার জন্য ‘হুমকি’ দেন। এরপর ৪ মার্চ মোহাম্মদ আলী নিজের অসুস্থতার কথা জানিয়ে তাকে গুলশানের বাসায় যাওয়ার জন্য বলেন। এ সময় অন্য আসামিরা তাকে ‘ঘাড় ধাক্কা’ দিয়ে ঘর থেকে বের করে দেন। পরদিন আবারও শাওন ও এডিসি নাজমুলসহ অন্য আসামিরা তার বাড়িতে ঢুকে ‘সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেওয়ার চেষ্টা করেন’। স্বাক্ষর দিতে অস্বীকৃতি জানালে শাওন তাকে ‘বেধড়ক মারধর করেন’। এর ফলে তিনি ‘অজ্ঞান হয়ে গেলে’ আসামিরা পালিয়ে যান।
আসামিদের বিরুদ্ধে নিশি ইসলামের অভিযোগ, গত বছরের ২৪ এপ্রিল তাকে ডিবির কার্যালয়ে ডেকে নেন ডিবি পরিদর্শক শাহ জালাল। সেখানেও শাওনসহ অন্য আসামিরা তাকে ‘মারধর করেন’। এসময় ডিবি প্রধান হারুন বাড্ডা থানার ওসিকে তার বিরুদ্ধে মামলা নিতে বলেন। পরে এ মামলায় তাকে মাদক কারবারি সাজিয়ে গ্রেপ্তার ও রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন করা হয়।