চট্টগ্রামে আবারও শুরু হচ্ছে স্মার্ট কার্ড বিতরণ। নগরীর একটি থানা ও ১৩টি উপজেলায় দশ লক্ষ ৮১ হাজার ১২৪ জন তরুণ ভোটারের হাতে এবার স্মার্ট কার্ড তুলে দেয়া হবে। আগামী ৩ মার্চ থেকে সাতকানিয়ায় বিতরণের মধ্য দিয়ে এ কর্মসূচি শুরু হতে যাচ্ছে। অন্যান্য উপজেলায় বিতরণের জন্যও স্মার্ট কার্ড এসেছে। ধারাবাহিকভাবে প্রতিটি উপজেলাতেই স্মার্ট কার্ড বিতরণ করা হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন সংশ্লিষ্টরা।
চট্টগ্রামের সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. আতাউর রহমান পূর্বদেশকে বলেন, আগামী ১ মার্চ ভোটার দিবস। এদিন হালনাগাদ ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে। এরপরেই আমরা ২০১৯ সালে যারা ভোটার হয়েছে এমন তরুণদের হাতে ধারাবাহিকভাবে স্মার্ট কার্ড তুলে দিব। এক্ষেত্রে কমিশনের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি।
ইতোমধ্যে স্মার্ট কার্ড বিতরণের লক্ষ্যে ডাটা এন্ট্রি অপারেটর, সহকারী ডাটা এন্ট্রি অপারেটর ও টেকনিক্যাল ম্যানেজার নিয়োগ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। গতকালও জেলা নির্বাচন কার্যালয়ে প্রার্থীদের সাক্ষাতকার নেয়া হয়েছে। যারা আগে স্মার্ট কার্ড বিতরণ সংক্রান্ত কাজে যুক্ত ছিল তাদেরকেই নিয়োগের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে।
প্রতিটি উপজেলায় তিনটি করে টিমে বিভক্ত হয়ে স্মার্ট কার্ড বিতরণ করা হবে। এসব টিমে পাঁচজন ডাটা এন্ট্রি অপারেটর, ছয় থেকে আটজন সহকারী ডাটা এন্ট্রি অপারেটর ও একজন করে টেকনিক্যাল ম্যানেজার স্মার্ট কার্ড বিতরণ কার্যক্রমের সাথে যুক্ত থাকবেন।
এর আগে ২০১৭ সালের ১৩ মার্চ চট্টগ্রামে স্মার্ট কার্ড বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা। একই বছরের ১৬ মার্চ থেকে কোতোয়ালী ও ডবলমুরিং থানার তিনটি ওয়ার্ডে স্মার্ট কার্ড বিতরণ শুরু হয়। ধাপে ধাপে নগরের ৪১টি ওয়ার্ডে ছয় থানায় বিভক্ত করে স্মার্ট কার্ড বিতরণ শুরু হয়। যা চার বছরেও সব ভোটারদের হাতে স্মার্ট কার্ড পৌঁছেনি। যেসব কার্ড বিতরণ করা হয়েছে তারমধ্যেও ভুল ছিল বেশি। অনেকের নাম ভুল এসেছে, ছবিও দেয়া হয়েছে অন্যজনের।
নির্বাচন অফিস সূত্র জানায়, চট্টগ্রামের ছয় থানা ও ১৫ উপজেলায় এ পর্যন্ত স্মার্ট কার্ড এসেছে ৩২ লক্ষ ৭৫ হাজার ৫৪৪টি। এর মধ্যে গত চার বছরে পাঁচলাইশ, চান্দগাঁও, কোতোয়ালী, ডবলমুরিং, পাহাড়তলী, বন্দর থানা, হাটহাজারী ও আনোয়ারা উপজেলায় ১৬ লক্ষ ৪৫ হাজার ৭৮০টি স্মার্ট কার্ড বিতরণ হয়েছে। যেসব উপজেলায় এখনো স্মার্ট কার্ড বিতরণ শুরু হয়নি এমন ১৩ উপজেলায় স্মার্ট কার্ড বিতরণ করা হবে। সাতকানিয়া উপজেলার চরতি ইউনিয়নে কার্ড বিতরণের মধ্য দিয়ে এ কর্মসূচি শুরু হবে। একই মাসে পরবর্তীতে বোয়ালখালী ও রাঙ্গুনিয়ায় স্মার্ট কার্ড বিতরণ করা হবে। এই তিন উপজেলাসহ স্মার্ট কার্ড বিতরণ না হওয়া- বন্দর থানা ও ১৩টি উপজেলায় আরো প্রায় ১১ লক্ষ স্মার্ট কার্ড বিতরণ করা হবে।
এর মধ্যে বন্দরে ৮৮ হাজার ৬২৯ জন, মিরসরাইয়ে ১৮ হাজার ১৪২ জন, সীতাকুন্ডে দশ হাজার ৩ জন, স›দ্বীপে ১৫ হাজার ২১৭ জন, ফটিকছড়িতে ২২ হাজার ৯০৩ জন, রাউজানে এক লক্ষ ৪৮ হাজার ৮১২ জন, রাঙ্গুনিয়ায় দুই লক্ষ ৪৮ হাজার ৮১২ জন, বোয়ালখালীতে এক লক্ষ ৭৯ হাজার ৪৩৩ জন, পটিয়ায় ১৭ হাজার ৯২৮ জন, কর্ণফুলীতে চার হাজার ৭১২ জন, চন্দনাইশে আট হাজার ৯৮৯ জন, সাতকানিয়ায় দুই লক্ষ ৮৮ হাজার ৬৯৩ জন, লোহাগাড়ায় নয় হাজার ৮৬৬ জন ও বাঁশখালীতে ১৮ হাজার ৬৪১ জন ভোটার স্মার্ট কার্ড পাবেন। ২০১৯ সালে ভোটার হয়েছেন এমন তরুণ ভোটাররাই এসব কার্ড পাবেন।
প্রসঙ্গত, স্মার্ট কার্ডের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে- তিন স্তরে ২৫টির অধিক নিরাপত্তা থাকবে এ কার্ডে। কার্ডটি বর্তমান জাতীয় পরিচয়পত্রের চেয়ে অনেক বেশি দীর্ঘস্থায়ী ও টেকসই। স্মার্ট কার্ডটি সহজে নকল করা যাবে না। কার্ডটিতে চিপ, দুটি বারকোড, মেশিন রিডেবল জোন (এমআরজেড) এ তিনটি স্তর থাকবে। যার মধ্যে চিপ স্তরে ভোটারের সব তথ্য সংরক্ষণ করা হবে।