নিজস্ব প্রতিবেদক
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেছেন, ‘ফ্যাসিস্ট সরকারের কাজ হচ্ছে কলম থামিয়ে দেওয়া। কলম থামিয়ে দিতে পারলে সব বন্ধ করে দেওয়া যায়। কারণ কলম দিয়ে যদি একটু লিখি, এতে অনেক কিছু হয়। একটি অক্ষর, একটি বাক্য অনেক গুরুত্ব বহন করে। ১২ বছর আগে পূর্বদেশের প্রথম বর্ষপূর্তিতে আমি ছিলাম। স্বৈরশাসকের সময়ে এ পত্রিকার জন্ম। তারপরও স্বৈরশাসকের বিরুদ্ধে পূর্বদেশ সঠিক অবস্থানে ছিল। পত্রিকাটি রাষ্ট্র ও সমাজকে কিছু দিতে চেয়েছে।’
গতকাল বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব মিলনায়তনে দৈনিক পূর্বদেশের সুধী সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। এক যুগ পূর্তি ও ১৩তম বর্ষে পদার্পণ উপলক্ষে এ সুধী সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
সিটি মেয়র বলেন, ‘আমরা রাজনীতিবিদরা সততার সঙ্গে কাজ করতে পারলে দেশ অনেক এগিয়ে যাবে। একটি রাজনৈতিক পরিবার ৯৯ বছরের জন্য করপোরেশনের অনেক মার্কেট লিজ দিয়েছে। নিজের স্বার্থের জন্য এমন কাজ করেছে। এমন ৫/৬টি ভবন লিজ দিয়েছে। এই ভবনগুলো থেকে করপোরেশন প্রতি মাসে ১০/১৫ কোটি টাকা পেত। এ ধরনের কাজ আর কখনো হতে দেয়া যাবে না।’ তিনি আরো বলেন, ‘প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয় ১৬ বছর ধরে করপোরেশন চালিয়েছে। প্রথম ডিপোজিটের টাকাও করপোরেশন দিয়েছে। জায়গার টাকা সিটি করপোরেশন দিয়েছে। ২০১৬ সালে একটি মাফিয়া চক্র প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয় দখল করেছে। এভাবে করপোরেশনের সম্পত্তি আর কেউ দখলে নিতে পারবে না। আমি মেয়র না থাকলেও করপোরেশনের সম্পত্তি যেন দখল না হয় সে ব্যবস্থা করে যাব।’
ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘প্রতিটি জায়গায় উন্নয়নের নামে দুর্নীতি হয়েছে। মহাউন্নয়নের নামে মহাদুর্নীতি হয়েছে। সম্পদের পর সম্পদ হয়েছে, বিদেশে টাকার পাহাড় গড়েছে। বিদেশে যে এত বাড়ি-গাড়ি দেখছেন, এগুলো জনগণের টাকা। এদের কারণে রাজনীতিবিদদের ওপর মানুষের এত বিদ্বেষ। রাজনীতিবিদরা ব্যবসায়ী হলে দুর্নীতি গ্রাস করবে।’
তিনি বলেন, ‘জলাবদ্ধতা নিরসন সিটি করপোরেশনের কাজ। সিডিএ সে কাজ নিয়ে নিল। সেটা নিয়ে লিখেননি কেন? সিডিএ এখন বলছে, আপনারা বুঝে নিন। আজকে সিডিএ চেয়ারম্যান ভালো মানুষ হিসেবে সেটা বুঝতে পেরেছেন। ২০২৬ সালে এ প্রকল্প সিটি করপোরেশনকে বুঝে নিতে হবে। প্রকল্পের ২৩টি স্লুইসগেট হয়েছে। লোকবলসহ অনেক খরচ আছে এখানে, এগুলো কীভাবে চালাবো? প্রকল্প থেকে কী পেয়েছি? সাংবাদিকদের অনুসন্ধানী হতে হবে। জনগণকে সঠিক খবর জানাতে হবে।’
ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর দুই নম্বর গেটে যে বাণিজ্যিক স্থাপনা হয়েছে সেগুলো ভেঙে দিয়েছি। এটা তো চটপটির দোকানের জন্য করা হয়নি। কেন এগুলো তখন ভাঙা হয়নি? আসকার দীঘি ভরাট করা হচ্ছে। কেন পুকুর-দীঘি ভরাট হবে? কারা করছে? আসকার দীঘি ঘেরাও করে ওয়ার্কওয়ে করে দেওয়া হবে।’
নৈতিক না হলে দেশ এগোবে না মন্তব্য করে মেয়র বলেন, ‘প্রতিটি সেক্টরে দুর্নীতি ঢুকে গেছে। সাংবাদিকদের অনেক নির্ভীক হতে হবে। সাংবাদিকতা এমন পেশা, চাইলে দেশকে অনেকদূর নিয়ে যেতে পারেন। আবার নীতি না মানলে দেশকে অনেক নিচেও নামাতে পারবেন।’