স্বদিচ্ছা ও সততা দিয়ে কাজ করলে গ্রাহক হয়রানি কমবে

30

স্বদিচ্ছা ও সততা দিয়ে কাজ করলেই গ্রাহক হয়রানি কমবে বলে মতপ্রকাশ করে দুর্নীতি দমন কমিশনের পরিচালক মো. আবদুল করিম বলেছেন, মানসিকতার পরিবর্তন না করলে সরকারের কোন সুযোগ-সুবিধা কাজে আসবে না। মানসিকতা ভালো হলেই সুন্দর সেবা দেওয়া সহজ হবে। যে যার কাজ যথাসময়ে করলে সব সমস্যার সমাধান হবে।
গতকাল বিকালে বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিসে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তাব্যে তিনি এ কথা বলেন। নগরীর মনসুরাবাদ ও পাঁচলাইশ পাসপোর্ট অফিস এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে।
দুদক পরিচালক পাসপোর্ট অফিসের কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বলেন, সবার মনে রাখতে হবে আজকে আমি সেবা প্রদানকারী হলে নিজ গ্রামে গিয়ে আমি সেবা গ্রহণকারী হতে পারি। যার যেখানে সেবা দেয়ার কথা সেখানে ভালোভাবেই দিবেন। একজনের সেবা যেহেতু আরেক জন দিতে পারবে না গ্রাহকদের সেটিও বুঝাতে হবে। কার কাছে গেলে সঠিক সেবা পাওয়া যাবে। ভালো ব্যবহার করতে হবে। ফরমের কোন অংশে একটি সমস্যা চিহ্নিত হলেই তা ফেরত না দিয়ে পরের অপশনগুলো দেখতে হবে। দেখা যাবে পরের অপশনেই প্রথম সমস্যার সমাধান মিলতে পারে। জনগণকে সেবা দিতে কার্পণ্য করলে প্রশাসনিক জবাবদিহিতা ছাড়াও সৃষ্টিকর্তার কাছেও জবাব দিতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে দুদক উপ-পরিচালক মোহাম্মদ লুৎফুল কবির চন্দন বলেন, সেবা গ্রহীতাদের ট্যাক্সের টাকায় সরকার পরিচালিত হচ্ছে। দুদক কিংবা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী একার পক্ষে সব দায়িত্ব পালন করা সম্ভব না। নিজেদের মানসিকতার পরিবর্তন হলে কারো কিছুই করতে হবে না। আমরা চাই অভিযোগ শূন্যে চলে আসুক। আমরা শূন্য সহিষ্ণুতা নীতিতে চলে এসেছি। সহনীয় পর্যায়ে বলতে কিছু নাই। ভালো আচরণ করলে গ্রাহকরা খুশি হবে। যারা পাসপোর্ট করতে আসে তারা দেশের রেমিটেন্সের যোগান দিচ্ছে। পাসপোর্ট অফিসে দালাল না থাকলেও আশপাশে আছে। কীভাবে কাজ করলে গ্রাহক উপকৃত হবে সেদিকে নজর দিতে হবে।
বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিসের উপ-পরিচালক আবু নোমান মো. জাকির হোসেন বলেন, সঠিক সময়ে পুলিশ রিপোর্ট না পেলে আমরা পাসপোর্ট দিতে পারি না। একটা সময় ছিল পুলিশ রিপোর্ট ছাড়াই পাসপোর্ট দিতে পারতাম। রোহিঙ্গা ইস্যুতে অনেক কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পুলিশ রিপোর্ট না হলে পাসপোর্ট দেয়ার নিয়ম আবারো চালু করতে হবে। প্রয়োজনে কাগজপত্রের বৈধতা যাচাই পূর্বক পাসপোর্ট দেয়ার নিয়ম করতে হবে। সত্যায়িত করার সিস্টেম তুলে দিলে ভালো হবে। সামনে সুপার এক্সপ্রেস সার্ভিস আসছে। একদিনের মধ্যে পাসপোর্ট পাওয়া যাবে। ভিসা শাখাও দ্রæত চালু করা হবে।
পাঁচলাইশ পাসপোর্ট অফিসের সহকারী পরিচালক আল আমিন মৃধা বলেন, জনবল সংকট আমাদের দারুনভাবে ভোগাচ্ছে। পাসপোর্ট অফিসে যে নিরাপত্তা পুলিশ দিচ্ছে তা আমাদেরই দেয়ার কথা ছিল। নিয়মিত গণশুনানি করার চেষ্টা করবো। আমাদের দরজা সবসময় গ্রাহকের জন্য খোলা। কোন জায়গায় গ্রাহক ভোগান্তি হলেই আমাদের কাছে আসলে সাথে সাথে ঠিক করে দিচ্ছি। দালাল প্রতিরোধে আমরা সবসময় সোচ্চার আছি।
চট্টগ্রাম মহানগর দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম কমু বলেন, মতবিনিময় সভার পরিবর্তে গণশুনানি হলে সাধারণ মানুষের কথা শুনতে পারতাম। যারা সেবা নেয় তাদের কিছু দায়িত্ব আছে। গ্রামের লোকেরা সহজ-সরল। তারা এতকিছু বুঝতে চায় না। আমি নিজেও জীবনে দালাল ছাড়া পাসপোর্ট করতে পারি নাই। এখন পরিস্থিতি ধীরে ধীরে উন্নতি হচ্ছে। দুদক সবসময় জনগণের ভোগান্তি কমাতে দুর্নীতিরোধে কাজ করছে।
মতবিনিময় সভায় আরো বক্তব্য রাখেন, দুনীতি প্রতিরোধ কমিটির সদস্য মুক্তিযোদ্ধা এবিএম খালেকুজ্জামান, আবু সাঈদ সেলিম, শাওন পান্থ, আবিদা সুলতানা, সাংবাদিক ইফতেখারুল ইসলাম, সাংবাদিক রাশেদুল তুষার প্রমুখ।